ইসরাইলের সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে মুখ খুললেন আল-শারা

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা বুধবার জানিয়েছেন, বাশার আল-আসাদের পতনের পর ইসরাইলের হামলা ও হুমকির প্রেক্ষিতে উত্তেজনা প্রশমনে দুই দেশের মধ্যে পরোক্ষ সংলাপ চলছে। বুধবার (৭ মে) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আরব নিউজ। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে প্যারিসে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে শারা বলেন, পরিস্থিতি যাতে দুই পক্ষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায়, তা নিশ্চিত করতে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইসরাইলের সঙ্গে পরোক্ষ সংলাপ চলছে। তিনি বলেন, ইসরাইলের এলোমেলো হস্তক্ষেপ... ১৯৭৪ সালের অস্ত্রবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করেছে। আমরা দামেস্কে আসার পর থেকেই সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে জানিয়েছি, সিরিয়া ১৯৭৪ সালের চুক্তিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গত ডিসেম্বর আসাদের পতনের পর থেকে ইসরাইল সিরিয়ায় শতাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে। তারা বলছে, সিরিয়ার নতুন শাসকদের তারা জিহাদপন্থি মনে করে এবং তাদের হাতে উন্নত অস্ত্র পৌঁছানো ঠেকাতেই এসব হামলা চালানো হচ্ছে। ইসরাইলি সেনারা জাতিসংঘ পর্যবেক্ষণাধীন গোলান মালভূমির ১৯৭৪ সালের অস্ত্রবিরতির সীমা রেখা অতিক্রম করে জাতিসংঘের নিরপেক্ষ অঞ্চলেও প্রবেশ করেছে এবং দক্ষিণ সিরিয়ায় আরও গভীরে অভিযান চালিয়েছে। শারা বলেন, জাতিসংঘের বিচ্ছিন্নতা পর্যবেক্ষণ মিশন ব্লু লাইন বা বিচ্ছিন্ন রেখায় ফিরিয়ে নেওয়া দরকার। তিনি জানান, জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল ইতোমধ্যেই দামেস্ক সফর করেছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলার সমালোচনা করে বলেন, এসব হামলা ইসরাইলের দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে না। তিনি বলেন, বোমাবর্ষণ ও আগ্রাসন একটি খারাপ নজির। প্রতিবেশীর ভূখণ্ড লঙ্ঘন করে কোনো দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় না। শারা আরও বলেন, আমরা এমন সব দেশের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি, যাদের সঙ্গে ইসরাইলের যোগাযোগ আছে, যাতে তারা ইসরাইলকে সিরিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘন ও বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা বন্ধে চাপ দিতে পারে। তিনি জানান, ম্যাক্রোঁর সঙ্গে তার বৈঠকে চলমান ইসরাইলি হুমকি" নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং বলেন, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার অজুহাত তুলে গত এক সপ্তাহেই ইসরাইল সিরিয়ার উপর ২০ বারের বেশি বোমাবর্ষণ করেছে। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর হুমকির পর শুক্রবার ভোরে ইসরাইল দামেস্কের প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসের কাছে হামলা চালায়। মন্ত্রী বলেছিলেন, সিরিয়ার নতুন শাসকরা যদি দ্রুজ সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ইসরাইল হস্তক্ষেপ করবে। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরাইল কাটজ এ হামলাকে সিরিয়ার নতুন শাসকদের প্রতি স্পষ্ট বার্তা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। মার্চ মাসে সিরিয়ার ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে অবস্থিত আলাউই অধ্যুষিত অঞ্চলে গণহত্যার ঘটনার পর দ্রুজ এলাকায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপরই এসব হস্তক্ষেপ করে ইসরাইল।