নববর্ষের আগেই অন্ধকারে ইউক্রেন

৩১ ডিসেম্বর, ২০২২ | ৮:৩১ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

ফি বছরের মতো এবার আর রংবেরংয়ের আলোর ঝলক দেখা যাবে না ইউক্রেনে। অন্ধকারেই কাটবে নববর্ষের প্রথম রাতটাও! রাশিয়ার গত কয়েক দিনের জোড় হামলায় বেশিরভাগ বিদ্যুৎকেন্দ্রই ধ্বংস হয়ে গেছে ইউক্রেনের। অন্ধকারে ডুবে গেছে ৯০ ভাগ কিয়েভ। কোনো কোনো অঞ্চলে খানিক কম-বেশি হলেও গড়পড়তা হিসাবে ইউক্রেন এখন বিদ্যুৎশূন্য, অন্ধকারের দেশ। বৃহস্পতিবার রাতের ভাষণে সে মন্তব্যই করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বলেছেন-‘ইউক্রেনের প্রায় বিদ্যুৎকেন্দ্রই ধ্বংস হয়ে গেছে!’ বিবিসি, আলজাজিরা, গার্ডিয়ান। শুক্রবার যুদ্ধের ৩১০তম দিনেও রাজধানী কিয়েভের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ অবকাঠামো লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার দেশটির ১২০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার একদিন পর এই হামলা চালাল মস্কো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২৪ ফেব্রুয়ারি আক্রমণ চালানোর পরে আকাশপথে এতবড় হামলা করেনি রাশিয়া। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, কিয়েভের স্থানীয় সরকার রাত ২টায় টেলিগ্রামে সাধারণ মানুষের উদ্দেশে সতর্কতা জারি করে এবং তাদের দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাওয়ার অনুরোধ জানায়। রয়টার্সের একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, দক্ষিণ কিয়েভের ২০ কিলোমিটার দূরে বিস্ফোরণ এবং বিমানবিধ্বংসী গোলার শব্দ শোনা যায়। কিয়েভ অঞ্চলের গভর্নর ওলেক্সি কুলেবা হামলার ব্যাপারে টেলিগ্রামে বলেন, ড্রোন দিয়ে হামলা চলছে। কয়েক ঘণ্টা পর তিনি আবার বলেন, অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। এতে কেউ হতাহত হয়নি। তিনি আরও বলেন, রাতে (ইরানের) শহিদ ড্রোন দিয়ে হামলা করেছে। রাশিয়া আরেকবার আমাদের অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী ড্রোন প্রতিহত করেছে। কোনো হতাহত নেই। জরুরি পরিষেবা সার্ভিস হামলাস্থলে কাজ করছে। হামলার ব্যাপারে পরবর্তীতে কিয়েভে সামরিক প্রশাসন জানিয়েছে, রাতে পাঁচটি শহিদ ড্রোন দিয়ে হামলা হয়েছে। সবই ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। কিন্তু একটি ড্রোনের ছোড়া গোলা হোলোসিভের সরকারি ভবনে আঘাত হানতে সক্ষম হয়। এতে ভবনটি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং আশপাশের বাড়িগুলোর জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, বহু বিদ্যুৎকেন্দ্র ধ্বংস হওয়ায় দেশের অধিকাংশ এলাকাতেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি বলেন, ‘রাজধানী কিয়েভ এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের পাশাপাশি, লভিভ, ওডেসা, খেরসন, ভিনিৎসিয়া এবং ট্রান্সকারপাথিয়া এলাকায় জীবন কঠিন হয়ে পড়েছে। তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে গেলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন।’ কিয়েভের পাশাপাশি ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শহর ঝাপোরিজঝিয়া এবং দক্ষিণের খেরসন অঞ্চলে রুশ বাহিনী ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে। জেলেনস্কি অবশ্য কয়েক মাস আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, শীত মৌসুমে নতুন করে বিধ্বংসী হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। দেশবাসীর উদ্দেশে এক বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, ‘বিদ্যুৎ সরবরাহ কম থাকায় আমাদের সবকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’ পাশাপাশি, রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় গৃহহীন ইউক্রেনীয় নাগরিকদের জন্য আশ্রয় শিবির খোলার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি।