বিসিএ’র আনন্দঘন বড়দিন পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান

২৯ ডিসেম্বর, ২০২২ | ৭:২১ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

সুবীর কাস্মীর পেরেরা খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান বড়দিন। বড়দিনের তাৎপর্যকে আরো আনন্দময়, ভাব গাম্ভীর্যতা করে তুলতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা আয়োজন করে থাকে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালা। কীর্তন, গির্জায় খ্রীষ্টযাগ, বাড়ি আলোকসজ্জা, কেক-পিঠাসহ নানা দেশীয় খাবার বড়দিনের ঐতিহ্য হিসেবে যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রবাসী বাঙালিরাও ধর্মীয় প্রচলিত প্রথা ধরে রেখেছে প্রবাসের মাটিতে। বাংলাদেশ খ্রিষ্টান এসিসিয়েশন, ইনক(বিসিএ) মেট্রো ওয়াশিংটন এলাকায় তিন দশক ধরে বাঙ্গালী ঐতিহ্যে উৎসব উদযাপন করে আসছে। দীর্ঘ এক মাস বাড়ি বাড়ি কীর্তন পরিবেশনা শেষে গত ২৬ ডিসেম্বর সিলভার স্প্রিং এলাকার রস্কো আর নিক্স এলিমেন্টারি স্কুল অডিটোরিয়ামে বড়দিন পুনর্মিলনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বহু সংখ্যক প্রবাসী বাঙালিদের উপস্থিতিতে স্থানীয় শিল্পীরা নাচ, গান, যীশু খ্রীষ্টের জন্মের উপর নাটিকা, ব্যান্ড সঙ্গীত পরিবেশন করে। এছাড়াও ছিল লটারি ড্র। অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ খ্রিষ্টান এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পিউরিফিকেশন উপস্থিত দর্শকদের বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেন। দুই দেশের জাতীয় সংগীতের পরিবেশনের পর সার্বজনীন প্রার্থনা করেন মি. জন হালদার। এরপর এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ডাঃ পেট্রিশিয়া শুক্লা গোমেজ শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি উপস্থিত দর্শকের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বড়দিন আমাদের ধর্মীয় প্রাণের উৎসব। প্রবাসে নানা বাস্ততার মাঝেও আমরা সকলে আজ একত্রে মিলিত হতে পেরেছি। তিনি বলেন বড়দিনের বাহ্যিক আনন্দের সাথে যীশু খ্রীষ্টের শিক্ষা ও শান্তির বাণী যেন আমরা স্মরণ করি ও তা যেন আমাদের চলার পথে পাথেয় হয়ে থাকে। সংগঠনের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নিয়তি নির্মলা রোজারিও অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বের ঘোষণা করে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক তিলোত্তমা ও বিভাষ ফ্রান্সিস রোজারিওকে মঞ্চে আহ্বান করে তাদের হাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দেন। এর পূর্বে বর্তমান কার্যকরী পরিষদ সদস্যদের উপস্থিতিতে বড়দিনের কেক কাটেন প্রেসিডেন্ট ডাঃ পেট্রিশিয়া শুক্লা গোমেজ ও ভাইস প্রেসিডেন্ট শ্যামল ডি'কস্তা, বিসিএ এলএলসিসিসিইউ-এর প্রেসিডেন্ট অতুল পিউরীফিকেশনসহ সংগঠনের সম্মানিত উপদেষ্টাগণও উপস্থিত ছিলেন। সাংস্কৃতিক পর্বে সংগঠনের নিয়মিত শিল্পীদের পরিবেশনায় বড়দিনের গান ও বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে দেশের গান পরিবেশন করা হয়। পরিচালনায় ছিলেন মুক্তা মেবেল রোজারিও ও সবিতা গোমেজ। তবলায় সংগত করেন ড. পল ফেবিয়ান গোমেজ। একঝাঁক শিশু-কিশোরদের নিয়ে সোমা ক্যারোলিন রোজারিও এবং নিয়তি রেগো- এর পরিচালনায় পরিবেশন করা হয় যীশুর জন্মভিক্তিক নাটিকা। শিশু-কিশোরদের গানে অংশগ্রহণ করে অনন্ত পিউরিফিকেশন, মেঘা পিউরিফিকেশন দ্রোহী পেরেরা। নৃত্যে অংশগ্রহণ করে স্যান্ড্রা মারীয়া পেরেরা, মনীষা গোমেজ, পিটার পালমা, এলিজাবেথ পালমা ক্লাউডিয়া রিবেরু, তিলোত্তমা রোজারিও , পরমেশ্বপরী, মেঘা পিরিফিকেশন,এমিলিয়া গোমেজ ও ক্লেয়ার রোজারিও, সিনথিয়া গমেজ, এন্ডিয়া ডি'কস্তা, ফিওনা রোজারিও,ফেরণ রোজারিও, লাওরা, কেয়া ও স্বর্গ, অবন্তী, অঞ্চিতা ও রেষা । নৃত্যে কোরিওগ্রাফি করেন মঞ্জুরি নৃত্যালয়ের শিল্পী গ্লোরিয়া রোজারিও ও আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন নৃত্যশিল্পী রোজ মেরি মিতু রিবেরু। বাংলা বাজারের সৌজন্যে উপস্থিত দর্শকদের অংশগ্রহণে ক্যুইজ পর্ব ও পুরস্কার বিতরণ পরিচালনা করেন বিপুল এলিট গনছালভেস ও খ্রীষ্টফার রোজারিও। আহার পর্ব চলাকালীন প্রজেক্ট এক্স এন্ড চিলড্রেন অব সিসিলিয়া ব্যান্ড দল সংগীতের মাধ্যমে বড়দিনের আনন্দকে আরো একধাপ উত্তাপ ছড়িয়ে দেয়। ফ্রান্সিস গোমেজ, ডেভিড রড্রিক, প্যাট্রিক গোমেজ, হৃদয় পেরেরা, অদিতি পিউরিফিকেশন, মেঘা পিউরিফিকেশন ও সক্রেটিস পিউরিফিকেশন এক এক করে জনপ্রিয় ব্যান্ড সঙ্গীত পরিবেশন করে উপস্থিত দর্শকদের মাতিয়ে তুলেন। আহার পর্বের শেষ এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট শ্যামল ডি'কস্তা ধন্যবাদ বক্তব্যে পদান করেন । লটারী ড্র-এর মধ্যে দিয়ে শেষ হয় বড়দিন পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান। লটারীর গ্র্যান্ড স্পন্সর ছিলেন লোন অফিসার তৌফিক মতিন, রিয়েল এষ্টেট এজেন্ট আলবার্ট গোমেজ এবং ১ম, ২য়, ৩য় পুরুস্কার স্পন্সর করেন লোন অফিসার শরীফ আহমেদ ও রিয়েল এষ্টেট এজেন্ট টমাস ডেনিম রোজারিও। এছাড়া ডায়না পিউরীফিকেশন, লিসা গমেজ এবং এজাইল ওয়ান টেক্ আইটি কোম্পানী লটারীর অন্যান্য পুরুস্কার স্পন্সর করেন। সার্বিক তত্বাবধানে ছিলো বিসিএ বর্তমান বোর্ড।