গুচ্ছভর্তি: সংকটের দ্রুত সমাধান করতে বলল ইউজিসি

২৮ ডিসেম্বর, ২০২২ | ১০:০১ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

চলতি শিক্ষাবর্ষে ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (জিএসটি) বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স প্রথমবর্ষে গুচ্ছভর্তি প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট সংকট দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। বুধবার সংস্থার এক কর্মশালা থেকে এই আহ্বান জানানো হয়। রাষ্ট্রপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চ্যান্সেলরের অনুশাসন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গত বছর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী গুচ্ছপদ্ধতির ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়। এই প্রক্রিয়ায় তখন বেশকিছু জটিলতা তৈরি হয়। কিন্তু প্রথম বছর হিসাবে সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নিয়েছিলেন। কিন্তু এবার এমন কিছু জটিলতা তৈরি হয় যা শিক্ষার্থীদের সংক্ষুব্ধ করে। উদ্ভূত পরিস্থিতি উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এমনই এক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার হাইকোর্টে শুনানিতে গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিতে মাইগ্রেশন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এ প্রশ্নে রুল জারি করা হয়। পাশাপাশি ১০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে রিট আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে মাইগ্রেশন বন্ধ রাখা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন আদালত। এর ফলে তারা মাইগ্রেশন করে ভর্তি হতে পারবেন। এই বিষয়টি বুধবার ইউজিসিরও নজরে আসে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থাটির ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ‘নলেজ ডমিনেটস দ্য পিরিয়ড অব ফোরআইআর অ্যান্ড আইওটি বিজনেস অ্যাপ্লিকেশন’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সংস্থাটির সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর। এ সময় তিনি উল্লিখিত নির্দেশনা দিয়ে বলেন, গুচ্ছভর্তি পরীক্ষায় অনাকাঙ্ক্ষিত সংকট তৈরি হয়েছে। ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে এই সংকটের কার্যকর সমাধান বের করতে হবে। তিনি মনে করেন, ভর্তি প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীবান্ধব বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করে এবং আধুনিক প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার করা গেলে চলমান সংকট সমাধান করা সম্ভব। মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, শিক্ষার্থীরা যেন অনাকাক্সিক্ষত ভোগান্তির শিকার না হয় সেজন্য অল্প সময়ের মধ্যে পুরো ভর্তি প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। গুচ্ছভর্তি পরীক্ষার মতো একটি ভালো আয়োজন যেন প্রশ্নের মুখে না পড়ে সেদিকে উপাচার্যদের সচেষ্ট থাকার অনুরোধ করেন ইউজিসির এ সদস্য। অনুষ্ঠানে কমিশনের আইএমসিটি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়া সভাপতিত্ব করেন। রিসোর্স পারসন ছিলেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলের ডিন অধ্যাপক ড. সৈয়দ আক্তার হোসেন। ইউজিসির ইনোভেশন টিমের ফোকাল পয়েন্ট মো. রবিউল ইসলাম কর্মশালা পরিচালনা করেন। গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিতে একের পর এক নতুন সিদ্ধান্তে পিষ্ট হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ২০ আগস্ট পরীক্ষার কার্যক্রম সম্পন্ন হলেও গুচ্ছ কর্তৃপক্ষ ওয়েবসাইট আপডেট করার নামে শিক্ষার্থীদের বসিয়ে রাখে প্রায় দুই মাস। এরপর নভেম্বর থেকে শুরু হয় ভর্তি কার্যক্রম। এখন পর্যন্ত ৬টি মেধা তালিকায় বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন চালু থাকলেও সপ্তম মেধা তালিকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে ৫৫ এর বেশি নাম্বার পাওয়া শিক্ষার্থীরাও বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশনের সুবিধা নিতে পারছে না। যেহেতু একজন শিক্ষার্থী একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাচ্ছিল, এখন মাইগ্রেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। উপরের সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের সিট ফাঁকা থাকা সত্ত্বেও তারা এখন আর সেখানে ভর্তি হতে পারবে না। সবমিলে সেশনজট এড়াতে তড়িঘড়ি করে ভর্তি পরীক্ষা এক মাস এগিয়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু এর ফল পায়নি শিক্ষার্থীরা। বরং ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার চার মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও ভর্তি প্রক্রিয়াই এখনো শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। উলটো এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইগ্রেশন পদ্ধতি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে চরম বিপাকে শিক্ষার্থীরা।