খরচ উঠবে না ভাড়ায়, আয় বাড়াতে নানা উদ্যোগ

২৮ ডিসেম্বর, ২০২২ | ৯:৩৪ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

যাত্রীসাধারণের কাছ থেকে পাওয়া ভাড়ায় উঠবে না মেট্রোরেলের নির্মাণ ব্যয় ও পরিচালন খরচ। প্রথম বছরেই ভর্তুকি বাবদ সরকারের কাছে হাজার কোটি টাকা চেয়েছে মেট্রোরেলের নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা সরকারি কোম্পানি ডিএমটিসিএল। আয় বাড়িয়ে ভর্তুকি কমাতে উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশের মেট্রোরেলের স্টেশনেও থাকবে বাণিজ্যিক স্থাপনা। স্টেশন ঘিরে থাকবে প্লাজা। করা হবে ট্রান্সপোর্ট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট (টিওডি)। দিয়াবাড়ী থেকে কমলাপুর পর্যন্ত নির্মাণাধীন মেট্রোরেল লাইনের (এমআরটি-৬) দিয়াবাড়ী-আগারগাঁও অংশ আজ বুধবার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সড়কের মাঝ বরাবর (মিডিয়ান) মাটির ১৩ মিটার ওপর দিয়ে যাবে মেট্রোরেলের ভায়াডাক্ট (উড়ালপথ)। এমআরটি-৬ লাইনে স্টেশন থাকছে ১৭টি। তিনতলা এই স্টেশনগুলোর দ্বিতীয়তলা বা কনকোর্স লেভেলে বাণিজ্যিক স্থাপনা। খাবার দোকানসহ নানা ধরনের বাণিজ্যিক বিতান থাকবে। তৃতীয়তলা থেকে চলবে ট্রেন। তৃতীয়তলায় শুধু টিকিটধারী যাত্রীরা উঠতে পারবেন। দ্বিতীয়তলা রাস্তা পারাপারেও ব্যবহার করা হবে। স্টেশনগুলো ১৮০ মিটার দীর্ঘ। স্টেশনে উঠতে রাস্তার দুই দিক থেকে সিঁড়ি, লিফট ও এস্কেলেটর রয়েছে। ডিএমটিসিএলে প্রতিবেদন অনুযায়ী, 'নন ফেয়ার বিজনেস' অর্থাৎ ভাড়াবহির্ভূত আয় বাড়াতে প্রতিটি স্টেশনের দ্বিতীয় তলাতেই খোলা হবে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। আরও যে পাঁচটি মেট্রোরেল লাইন হবে ঢাকায়, সেগুলোরও প্রতিটি স্টেশনেই থাকবে 'কমার্শিয়াল স্পেস'। কীভাবে কত টাকায় ভাড়া দেওয়া হবে, তা নির্ধারণে নীতিমালা করা হচ্ছে। উত্তরা সেন্টার স্টেশনকে ঘিরে টিওডি গড়ে তুলতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কাছ থেকে ৮৬৬ কোটি টাকায় ২৮ দশমিক ৬১৭ একর জমি কিনেছে ডিএমটিসিএল। প্রণয়ন করা হচ্ছে টিওডি নীতিমালা। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিপ্পন কোই নেতৃত্বাধীন এনকেডিএম অ্যাসোসিয়েশন টিওডি হাবে নকশা করছে। টিওডি এলাকায় বাণিজ্যিক ভবন অর্থাৎ অফিস স্পেস, শপিং সেন্টার, বিনোদন কেন্দ্রসহ নানা সুবিধা থাকবে। ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম, এ, এন, ছিদ্দিক বলেছেন, একজন যাত্রী ট্রেন থেকে নামার পর তাঁর প্রয়োজনীয় পণ্য যাতে স্টেশনের আশপাশে থেকে কিনতে পারেন। তাহলে স্টেশনের দিকে আকৃষ্ট হবেন যাত্রীরা। এমআরটি-৬ লাইনের উত্তরা সেন্টার স্টেশনে টিওডির জমিকে গ্রিন ফিল্ড হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর তিন পাশের আরও তিনিট পার্সেলের উন্নয়ন করবে রাজউক। ডিএমটিসিএলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, টিওডির মহাপরিকল্পনা চলছে। বাণিজ্যিক ও অফিস ভবন, পার্কিং সুবিধা নির্মাণ করা হবে। সাভারের হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত নির্মাণ করা হচ্ছে এমআরটি-৫ নর্থ লাইন। এ লাইনের গাবতলী স্টেশনের পাশেও থাকবে টিওডি এলাকা। গাবতলীর বর্তমান বাস টার্মিনালকেই টিওডিতে রূপান্তর করতে চায় ডিএমটিসিএল। এমআরটি-৬ লাইনের দিয়াবাড়ী, আগারগাঁও, ফার্মগেট ও কমলাপুর স্টেশনের পাশে স্টেশন প্লাজা নির্মাণ করতে চায় ডিএমটিসিএল। সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্টেশন প্লাজার জন্য বেসরকারি মালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণ এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থার জমি হস্তান্তরের মাধ্যমে পাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। কোথায় কীসের দোকান ও স্থাপনা থাকবে, তার পরিকল্পনা করে স্টেশন প্লাজাগুলোর লে-আউট তৈরি করা হয়েছে। দিয়াবাড়ী ও কমলাপুরে পার্কিং ব্যবস্থা থাকবে। এমআরটি-১, এমআরটি-৫ নর্দান এবং এমআরটি-৫ সাউদার্ন রুটেও চারটি করে স্টেশন ঘিরে থাকবে প্লাজা। আয় বাড়াতে মেট্রোরেলের ঋণদাতা জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) পরামর্শ দিয়েছে ডিএমটিসিএলকে। সংস্থাটির পরিচালক বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হাদীউজ্জামান বলেছেন, যানসহ উন্নত দেশের মেট্রোরেল স্টেশনেই কেনাকাটা, খাওয়া-দাওয়াসহ নানা সুবিধা রয়েছে, যাতে যাত্রীরা স্টেশনে আসতে উৎসাহ বোধ করেন। যাতায়াতের পথে প্রয়োজনীয় কাজ সারতে পারেন।