তিন ইস্যু ঘিরেই সংকট

নির্বাচন, সংস্কার এবং গণহত্যা-ফ্যাসিবাদে জড়িতদের বিচার ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ-এ তিন ইস্যুতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দেখা দিয়েছে মতপার্থক্য। যার কারণে তৈরি হচ্ছে নানা সংকট। মতৈক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোও ধারাবাহিক বৈঠক করলেও কার্যত ফলাফল একরকম শূন্য। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকেও ঐকমত্যে পৌঁছাতে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে এখন পর্যন্ত মতপার্থক্য দূর হওয়ার কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বড় দলগুলো যখন একে অপরের বিপরীত অবস্থান নিচ্ছে, তখন ঐকমত্য হওয়া বেশ কঠিন। দলগুলো তাদের দলীয় রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে যেতে পারছে না। গণতন্ত্রের স্বার্থে কিছুটা ছাড় দিয়ে হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর একই মেরুতে আসতে হবে। ভিন্নমত বা মতপার্থক্য দূর না হলে সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে নানা সন্দেহ ঘুরপাক খাচ্ছে। অপরদিকে গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর নিজস্ব অবস্থান থাকবে-এটাই স্বাভাবিক। তবে এক্ষেত্রে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে আরও সক্রিয় করতে হবে। কেননা, বিচার প্রক্রিয়ার দৃশ্যমান গতি দেখতে চায় দেশের মানুষ। তারা আরও বলেন, প্রত্যেক দলের একটা নিজস্ব মতামত রয়েছে। তাই ভিন্নমত থাকাটাই স্বাভাবিক। আবার একথাও সত্য যে, আওয়ামী লীগ টানা সাড়ে ১৫ বছরে যেভাবে দুঃশাসন চালিয়েছে, মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং সর্বোপরি চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে যেভাবে সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে তাতে দল হিসাবে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করার নৈতিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছে। ফলে ক্ষমতার রাজনীতির কারণে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ অন্যান্য গণতান্ত্রিক দলগুলোর মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে মতবিরোধ থাকলেও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সবাই ঐক্যবদ্ধ। এছাড়া বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রত্যেকটি রাজনৈতিক শক্তির একে অপরের সঙ্গে একটা আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। সঙ্গত কারণে দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে দ্রুতই সব কিছুর সমাধান হবে বলেও আশাবাদী হতে চান রাজনৈতিক বিশ্লষকরা। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে বিএনপি ইতোমধ্যে তাদের অবস্থান দফায় দফায় স্পষ্ট করেছে। দলটি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনও চায় না দলটি। আবার জাতীয় নির্বাচনের বিদ্যমান পদ্ধতির পক্ষে বিএনপি। অপরদিকে জামায়াতে ইসলামী বলছে-জাতীয় নির্বাচনের উপযুক্ত সময় আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি, এপ্রিল পার হওয়াও উচিত নয়। তবে দলটি জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায়। আবার নির্বাচনে সংখ্যা বা আনুপাতিক (পিআর) প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির পক্ষে জামায়াত। অন্যদিকে বিচার ও বেশ কিছু মৌলিক বিষয়ে সংস্কারের আগে জাতীয় নির্বাচনের পক্ষে নয় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি আগে স্থানীয় সরকার ও গণপরিষদ নির্বাচন চায়। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের পক্ষেও এনসিপি। সংস্কার ইস্যুতে বিএনপির অবস্থান হলো-জাতীয় নির্বাচনের আগে দ্রুত কিছু প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করা। একই অভিমত জামায়াতেরও। তবে এনসিপি চায় মৌলিক সংস্কার। এছাড়া গণহত্যা ও ফ্যাসিবাদে জড়িতদের বিচার ভোটের আগে দৃশ্যমান দেখতে চায় বিএনপি। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত যা বলা হয়েছে সেটি হলো-জনগণ নির্ধারণ করবে কোন দল থাকবে কি থাকবে না। জনগণকেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতে হবে। জামায়াতও চায় ভোটের আগে দৃশ্যমান বিচার। আর আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী সরকার বিবেচনা করবে বলে মনে করে দলটি। এনসিপির জোরালো দাবি-ভোটের আগে সরকারকে গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতেই হবে। এছাড়া আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে দলটি শুক্রবার এক সমাবেশ থেকে তাদের অবস্থান অনেকটা স্পষ্ট করেছে। এনসিপির নেতারা তাদের বক্তৃতায় বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতেই হবে। জনগণ ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগকে লাল কার্ড দেখিয়ে দিয়েছে। মূলত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবিতে এনসিপি এ সমাবেশের আয়োজন করে। সৃষ্ট সংকটের এ তিনটি ইস্যু নিয়ে জানতে চাইলে শনিবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিএনপির অবস্থান খুব পরিষ্কার। আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচন খুব দ্রুত চাই। সংস্কারও চাই। খুব স্পষ্ট করে বলেছি, যে সংস্কারগুলোর বিষয়ে সব দল ঐকমত্য হবে, আমরা সেগুলোর চার্টারে (সনদ) স্বাক্ষর করতে রাজি আছি। যার ওপর ভিত্তি করে নির্বাচনের দিকে চলে যেতে পারি। বাকি সংস্কারগুলো নিয়ে নির্বাচিত সরকার সংসদে কথা বলবে।’ গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপি গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার শাসনামলে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছে। যারা দেশের মানুষকে হত্যা করেছে, তাদের বিচার অবশ্যই হতে হবে। তবে আমরা এই কথা বলে আসছি যে, কোন পার্টি নিষিদ্ধ হবে, কোন পার্টি কাজ করবে, কোন পার্টি কাজ করবে না-সেসব বিষয়ে জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। জনগণের কাছ থেকে এ সিদ্ধান্ত আসতে হবে।’ জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান শনিবার দলের জেলা আমির সম্মেলনে এ বিষয়ে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের জন্য আমরা দুটি সময়কে উপযুক্ত মনে করি। একটি ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে। তবে যদি এ সময়ের মধ্যে সংস্কারগুলো এবং বিচারের দৃশ্যমান প্রক্রিয়া জনমনে আস্থা সৃষ্টির পর্যায়ে না আসে, তাহলে সর্বোচ্চ এপ্রিল পার হওয়া উচিত হবে না। সংস্কার কার্যক্রম যেটা হাতে নেওয়া হয়েছে, তা যদি আক্ষরিকভাবেই গতিশীল করা হয় এবং অংশীজনরা সে রকম সহযোগিতা করেন, তাহলে সরকারের ঘোষিত সময়ের মধ্যে সংস্কার করে নির্বাচন করা সম্ভব বলে মনে করেন জামায়াতের আমির। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এটা আমরা আগেই বলেছি, নিষিদ্ধ করার কাজ তো সরকারের। জনগণের প্রত্যাশা যেটা, সেটা সরকারকে বিবেচনায় নিতে হবে। দল নিষিদ্ধের কাজ তো সরকার করে, কোনো পার্টি তো নিষিদ্ধ করে না।’ শুক্রবার রাজধানীতে এক সমাবেশে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, অবিলম্বে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। নৌকা মার্কাকে বাংলাদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে। বিচার চলা পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আইন করে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্রকাঠামো ও শাসনব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে মৌলিক সংস্কারের উদ্দেশ্যে ‘জুলাই সনদ’ কার্যকর করতে হবে। একই সঙ্গে জুলাই সনদে সুস্পষ্টভাবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কথাটি থাকতে হবে। আইনসভা (সংসদ) এবং গণপরিষদ নির্বাচন একসঙ্গে করার দাবিও তোলেন এনসিপির আহ্বায়ক। মূলত সংবিধান সংস্কারের স্পর্শকাতর বিষয়গুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আপত্তি, ভিন্নমত বা মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির ভিন্নমত আছে কোনো কোনো ক্ষেত্রে। এ বিষয়ে বাম ও ইসলামী দলগুলোর মধ্যেও রয়েছে মতপার্থক্য। এনসিপি বর্তমান সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান চাইছে। সেজন্য তারা গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি তুলেছে। এনসিপির এই দাবির সঙ্গে বিএনপি, জামায়াতসহ বেশিরভাগ দলই একমত নয়। এই ইস্যুতেই অন্যান্য দলের সঙ্গে এনসিপির মতপার্থক্য বেশি। এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা ও দলীয় প্রধানের পদে থাকতে পারবেন না বলে সংস্কার কমিশন প্রস্তাব করেছে, এ নিয়ে আপত্তি বিএনপির। দলটি জানিয়েছে, এটি রাজনৈতিক দলের নিজেদের সিদ্ধান্তের বিষয়। এ ব্যাপারে পরিবর্তন বা সংস্কারের কোনো প্রয়োজন নেই। জামায়াত অবশ্য বলছে, সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী এক ব্যক্তি হতে পারেন। দলীয় প্রধান অন্য কেউ থাকতে পারেন। তবে বেশিরভাগ বামপন্থি ও অন্যান্য ইসলামি দল সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত। এদিকে কোনো ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না-এই সংস্কার প্রস্তাবের বিষয়েও একমত নয় বিএনপি। দলটি বলছে, কোনো ব্যক্তি টানা তিনবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। এছাড়া সরকারের মেয়াদ ৪ বছর করার প্রস্তাবে সক্রিয় সব দলেরই আপত্তি রয়েছে। তারা ৫ বছর মেয়াদের কোনো পরিবর্তন চায় না। তবে ৪ বছরের পক্ষে এনসিপি। সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা ও সংস্কারের পরিধি নিয়ে চলমান বিতর্কের পাশাপাশি দ্বিমত-ভিন্নমত দেখা দিয়েছে সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন এবং আগে স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচন করা না করা নিয়েও। শুরু থেকেই বিএনপি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ও আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিপক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। আর জামায়াতে ইসলামী পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ও আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানাচ্ছে। এ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, যারা জনগণের প্রত্যক্ষ রায়কে ভয় পাচ্ছেন তারাই আনুপাতিক পদ্ধতির কথা বলছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি বিদ্যমান পদ্ধতিতেই নির্বাচন হতে হবে। আনুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন ও আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় না বিএনপির মিত্র রাজনৈতিক দল-জোটগুলোও। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এলডিপিসহ মিত্র দল-জোটগুলো বিএনপির অবস্থান বা প্রস্তাবের সঙ্গেই সহমত পোষণ করেছে। অন্যদিকে, এই দুটি ইস্যুতে চরমোনাই পিরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ কয়েকটি ইসলামি রাজনৈতিক দল এবং তরুণদের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অবস্থানের মিল রয়েছে জামায়াতের সঙ্গে। এই দলগুলোও আনুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন এবং সংসদের আগে স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচন দাবি করছে। বিএনপির মিত্র জোট গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শীর্ষ নেতা নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সংস্কারের সব বিষয়ে ঐকমত্য বা এক অবস্থানে দলগুলোকে আনা বেশ কঠিন। তবে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হলেই দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দেওয়া উচিত। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কারের ক্ষেত্রে যে ঐকমত্য তৈরি হবে, সেটা নিয়ে একটা জাতীয় সনদ তৈরি করতে হবে। সেখানে সব রাজনৈতিক দল পুরো জাতির সামনে অঙ্গীকার এবং স্বাক্ষর করবে। এই সংস্কারকে গণভোটের মাধ্যমে একটা ভিত্তি দেওয়া, যাতে পরবর্তী সরকার এসে এটিকে বাতিল করতে না পারে। এই মে মাসে কিংবা জুনের মধ্যেও ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় সনদ প্রণয়ন করতে পারে। তাহলে তো ডিসেম্বরে নির্বাচন হতে কোনো বাধা নেই। তিনি বলেন, সংস্কার বাস্তবায়নের পাশাপাশি নির্বাচনের সুস্পষ্ট একটি রোডম্যাপ দিতে হবে। বিএনপিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলই অভ্যন্তরীণ আলোচনায় একমত হয়েছে, তারা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এই গণ-অভ্যুত্থান ঘটিয়ে এ দেশের জনগণ ওই দলকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে রায় দিয়ে দিয়েছে। এখন আর আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে জনগণের নতুন করে রায় বা মতামতের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। আশা করি সরকারও ছাত্রলীগের মতো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম মনে করেন, দলগুলো তাদের দলীয় রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অবস্থান নিচ্ছে। সেটা নেওয়াটাই স্বাভাবিক। মৌলিক বা স্পর্শকাতর নয়, এমন বিষয়গুলোতে ঐকমত্য হওয়া উচিত। সে অনুযায়ী ঐকমত্য কমিশন হয়তো সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ‘চার্টার’ তৈরি করতে পারে। ‘চার্টার’ তৈরি হলেই জাতীয় নির্বাচনের দিকে যাওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।