অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার সুযোগ চাই: মোস্তাফিজার রহমান

২৭ ডিসেম্বর, ২০২২ | ১০:০৫ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী ও সদ্যবিদায়ি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেছেন, ‘নিজের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে নগরবাসীর কাছে আরেকবার সুযোগ চাই।’ সোমবার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, আবার বিজয়ী হলে একটি আধুনিক ও পরিকল্পিত গ্রিন সিটি হিসাবে গড়তে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করার ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হবে। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা তার প্রস্তাবিত ৩১ দফার নির্বাচনি ইশতাহার উল্লেখ করে বলেন, নগরীর সৌন্দর্য রক্ষার্থে শ্যামাসুন্দরী খালকে পুনরুজ্জীবিত করা, উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, যানজট নিরসনসহ ২৫০ বছরের পুরোনো এই শহরকে স্মার্ট সিটিতে রূপান্তরের লক্ষ্যে প্রস্তুতকৃত মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী উন্নয়নমূলক কার্যক্রম গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। সাবেক এই মেয়র বলেন, নগরীর সৌন্দর্য রক্ষার্থে শ্যামাসুন্দরী খালকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য ইতোমধ্যে ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে কনসালটেন্ট নিয়োগ করেছি। ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার একটি ডিপিপি প্রস্তুত করার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মেয়র হিসাবে নির্বাচিত হয়ে এলে যথাযথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করব, ইনশাআল্লাহ। এর মাধ্যমে নগরীর জলাবদ্ধতা দূর হবে। যার সুফল ভোগ করবেন নগরবাসী। নাগরিক সেবা প্রদান সহজীকরণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করে আধুনিক নগর ভবন তৈরি করা হবে। স্মার্ট সিটিতে রূপান্তরের লক্ষ্যে কোরিয়ান প্রকল্প নিয়ে কাজ করছি। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত মূল্য ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, যা পর্যায়ক্রমে নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি আরও বলেন, অত্যাধুনিক বিনোদন পার্ক নির্মাণ এবং আন্তর্জাতিকমানের রাইড স্থাপনের জন্য প্রথম পর্যায়ে ৫০ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে অর্থছাড় সাপেক্ষে চিকলী পার্ক প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে। আধুনিক সিটি করপোরেশন বিনির্মাণে প্রস্তুতকৃত মাস্টার প্ল্যান বর্তমানে গেজেট প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। পুনরায় মেয়র হিসাবে নির্বাচিত হলে মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী সব উন্নয়নমূলক কার্যক্রম গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করব। মোস্তফা বলেন, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি উৎপাদনের লক্ষ্যে একটি প্রকল্প প্রস্তাব স্থানীয় সরকার বিভাগে অনুমোদন হয়েছে। এখন বিদ্যুৎ বিভাগে সেটি অনুমোদন হলে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। যানজট নিরসনে পথচারী এবং শিক্ষার্থীদের রাস্তা পারাপারের সুবিধার্থে নগরীর প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংলগ্ন ব্যস্ত রাস্তায় জেব্রা ক্রসিংসহ ডিজিটাল পুশ সিগন্যাল স্থাপন করা হবে। পর্যায়ক্রমে যানজট নিরসনে মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী আরও ফ্লাইওভার/ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। তিনি বলেন, নাগরিক সেবা সহজীকরণ এবং নাগরিকদের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছানোর লক্ষ্যে সিটি করপোরেশনের তিনটি আঞ্চলিক কার্যালয় এবং ৩৩টি ওয়ার্ডে নিজস্ব ওয়ার্ড কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। এতে নাগরিকরা খুব সহজেই এসব আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে কাঙ্ক্ষিত সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। বর্তমানে চারটি মাতৃসদন কেন্দ্র চালু রয়েছে। বর্ধিত ১৮টি ওয়ার্ডে নগর স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার প্রজেক্টের (ইউপিএইচসিএসডিপি) মাধ্যমে নগর স্বাস্থ্যসেবা কমপ্লেক্স এবং অঞ্চলভিত্তিক নগর মাতৃসদন কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। কোভিড-১৯ টিকা ও নগরীর প্রতিটি শিশুর (ইপিআই) টিকা প্রদান নিশ্চিত করা হবে। সদ্যবিদায়ি সাবেক এই মেয়র বলেন, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের (সুইপার) আবাসন সমস্যা নিরসনে আধুনিক সুইপার কলোনি নির্মাণ করা হবে। আধুনিক পশু জবাইখানা নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে ২টি জবাইখানা রয়েছে। পর্যায়ক্রমে সিটি করপোরেশনের অঞ্চলভিত্তিক আধুনিক জবাইখানা নির্মাণ করা হবে। নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ইতোমধ্যে ১০০টিরও অধিক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। আগামী দিনে ৩৩টি ওয়ার্ডের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান/মোড়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। নগরবাসীর সেবা ও অভিযোগ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে নগরবাসীর জন্য ‘রংপুর অ্যাপ’ নামে একটি অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট করা হবে। এর সুফল নগরবাসী পাবেন। নগরের সার্বিক উন্নয়নে নগর পরিকল্পনাবিদ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন করা হবে। মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, হকারদের জন্য হকার পুনর্বাসন এবং কর্মসংস্থানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এরশাদ হকার্স মার্কেটকে আধুনিকায়ন করা হবে। বাজার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নবাবগঞ্জ মার্কেট আধুনিকায়ন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সিটি করপোরেশন পরিচালিত সব বাজার আধুনিকায়নসহ বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে। জবাবদিহি নিশ্চিতকরণে ‘জনতার মুখোমুখি মেয়র’ শীর্ষক মতবিনিময়ের মাধ্যমে ওয়ার্ডভিত্তিক সমস্যার সমাধান করা হবে। মশক নিধন এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। আবারও বিশাল ভোটের ব্যবধানে তিনি নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন-এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপি করতে আসা যে কোনো অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করতে আমরা প্রস্তুত আছি। নির্বাচন কমিশন একটা ফেয়ার গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার কমিটমেন্ট করেছে, আমরা সেই নিরিখে আস্থা রেখে নির্বাচন করছি। আমরা মনে করি, এই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। ইভিএম নিয়ে শঙ্কা না থাকলেও এর পেছনের কারিগরদের নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।