দ্বিতীয় দিনে ঢাকা ছাড়লেন ৫২০০ হজযাত্রী

১ মে, ২০২৫ | ৫:০৯ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

যাত্রীদের পদচারণায় মুখর রাজধানীর এয়ারপোর্ট এলাকার হজ ক্যাম্প প্রাঙ্গণ। ২০২৫ সালের হজ কার্যক্রম উদ্বোধনের পর আজ সর্বোচ্চ ৫২০০ জন হজযাত্রী ঢাকা থেকে পবিত্র মক্কার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। সর্বমোট ১৩টি ফ্লাইটে বিপুল এই সংখ্যক যাত্রী হজের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে ছেড়েছেন বলে জানিয়েছেন হজ ক্যাম্প পরিচালক মো. লোকমান হোসেন। এবারের হজযাত্রায় ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্যদের উপস্থিতি এবং সেই সাথে যাত্রীদের সহযোগিতায় ভলেন্টিয়ার লক্ষ্য করা গেছে। তবে কারিগরি ত্রুটির কারণে অনেক যাত্রীরই ভিসা হাতে পেতে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানা গেছে। বেলা ১২টায় আশকোনা হজ ক্যাম্প সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, একের পর এক যাত্রীবোঝাই বাস-প্রাইভেটকার এসে থামছে ক্যাম্পে প্রবেশের মূল ফটকে। পরনে এহরামের শুভ্র কাপড়ে বাস থেকে বেরিয়ে আসছেন যাত্রীরা। গাড়ি থেকে নামতেই যাত্রীদেরকে রাস্তা দেখিয়ে দিচ্ছেন দায়িত্বরত নিরাপত্তা সদস্যসহ স্কাউট টিমের সদস্যরা। ভেতরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে তথ্যকেন্দ্র। আঞ্জুমান ই খাদেমুল হজ বাংলাদেশ টিমের সদস্যরা আগত হজযাত্রীদের তথ্যকেন্দ্র থেকে সরবরাহ করছেন রিপোর্টিং, ব্যাগেজ ও ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়ার তথ্যাদি। টিমের সদস্যদের কেউ কেউ বয়স্ক হজযাত্রীদেরকে লাগেজ পৌঁছে দিচ্ছেন ইমিগ্রেশন পর্যন্তও। কথা হয় ইমিগ্রেশনের জন্য লাইনে দাঁড়ানো পঞ্চগড়ের মুসল্লি রিয়াজুল মাহমুদ আবিদের সাথে। তিনি জানান, আসার পথে ট্রেনে সমস্যা হয়েছিল। সাথে মালামাল থাকায় ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে তাড়াহুড়ো হয়। তবে এখানে (হজক্যাম্পে) এসে ভাল লাগছে। ৫টা ৩৫ মিনিটে বিজি৩৩৭ বিমানে আমার ফ্লাইট। প্রথমবারের মতো স্ত্রীকে নিয়ে হজযাত্রায় ক্যাম্পে অবস্থান নেয়া রাজশাহীর সত্তরোর্ধ্ব আহমদ হোসেন দম্পতি বলেন, ২৮ তারিখে এসে আমরা ক্যাম্পে উঠেছি। কোন সমস্যা হয়নি। আগামীকাল বিকেলে আমাদের ফ্লাইট। নামাজ পড়ার জন্য নিচে এসেছি। ফ্লাইটের দুই দিন আগে সিলেটের ছাতক থেকে ক্যাম্পে আসা পঞ্চাশোর্ধ্ব মজিবর রহমান জানান, ক্যাম্পের ভেতরে আমার সিট ছিল। পরিবেশ আগের চেয়ে অনেক ভাল। সরকারি খরচে হজে যেতে পারার অনুভূতি জানিয়ে এই যাত্রী বলেন, সরকারি ফি নিয়েছে চার লক্ষ আশি হাজার টাকা। আশা করি ছয় লক্ষ টাকার মধ্যে সবকিছু হয়ে যাবে। এর আগের বার যখন হজে যাই তখন আট লাখ টাকা খরচ হয়েছিল। অন্যদিকে, ক্যাম্পে অবস্থিত ইমিগ্রেশন কেন্দ্রের ভেতর গিয়ে দেখা যায়, সারিবদ্ধভাবে একের পর এক ভেতরে প্রবেশ করছেন হজযাত্রীরা। প্রথমে ব্যাগেজ স্ক্যানার মেশিনে যাত্রীদের ব্যাগ চেকের পর নিকটস্থ বুথ থেকে তারা সেরে নিচ্ছেন ইমিগ্রেশনের সব প্রক্রিয়া। ইমিগ্রেশনের দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশ বিমানের এক কর্মকর্তা জানায়, এখানে বাংলাদেশের ইমিগ্রেশনের পার্টটা দেখা হয়। এরপর যাত্রীদেরকে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে সৌদি আরবের ইমিগ্রেশনের কাজটা সম্পন্ন করছেন সৌদি ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। এতে করে মক্কায় গিয়ে যাত্রীদের ইমিগ্রেশনের আর কোন ঝামেলা নেই। প্লাস্টিকের ট্যাগের মাধ্যমে ব্যাগগুলোও সরাসরি তাদের হোটেল রুমে পৌঁছে যাবে। এদিকে দ্বিতীয় দিনের হজযাত্রার বিষয়ে জানতে চাইলে আশকোনা হজক্যাম্প পরিচালক মো. লোকমান হোসেন বলেন, আজই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক যাত্রী সৌদি আরব যাচ্ছেন। তিনি জানান, ১৩টি ফ্লাইটে সর্বমোট ৫২০০ জন যাত্রী সৌদি আরবের পথে ধাপে ধাপে যাত্রা করছেন। গতকাল ১০টি ফ্লাইটে ৪১১৮জন যাত্রী মক্কায় গিয়েছেন। যাত্রীদের ভিসা জটিলতার বিষয়ে জানতে চাইলে পরিচালখ মো. লোকমান হোসেন বলেন, অনলাইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৭০%শতাংশ ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। কিছুটা কারিগরি ত্রুটির কারণে কেউ কেউ ভিসা এখনো না পেলেও আমরা আশা করি প্রত্যেকেই শতভাগ যাত্রীই ভিসা পাবেন ইনশাআল্লাহ। হজযাত্রীদের শতভাগ সেবা নিশ্চিতের করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে মানুষের প্রত্যাশা বেড়ে গেছে। আমরা সেবার পরিধিও বাড়ানোর চেষ্টা করছি। যাতে সবাই নিশ্চিতে আল্লাহর ঘরে রওনা দিতে পারেন।