সম্পর্ক আরও গভীর করতে জাপান-ফিলিপাইনের অঙ্গীকার

চীনের সঙ্গে ভূখণ্ড বিরোধ মোকাবিলায় নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদারের অঙ্গীকার করেছে জাপান ও ফিলিপাইন। এর অংশ হিসেবে দুই দেশ গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অক্টোবরে দায়িত্ব গ্রহণের পর ফিলিপাইনে প্রথম সফরে এসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা মঙ্গলবার বলেন, পূর্ব চীন সাগর ও দক্ষিণ চীন সাগরে বলপ্রয়োগ বা জবরদস্তির মাধ্যমে স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের প্রচেষ্টার বিরোধিতা করে জাপান ও ফিলিপাইন। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা। ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মারকোস জুনিয়রের সঙ্গে বৈঠক শেষে ইশিবা জানান, উভয় নেতা অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড ক্রস-সার্ভিসিং অ্যাগ্রিমেন্ট নামে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনার শুরুতে সম্মত হয়েছেন। এই চুক্তির আওতায় জাপানি সেনারা ফিলিপাইনে যৌথ মহড়ায় অংশ নিতে এলে তাদের খাদ্য, জ্বালানি ও অন্যান্য লজিস্টিক সহায়তা প্রদান করা সম্ভব হবে। গত বছর স্বাক্ষরিত এই প্রতিরক্ষা চুক্তির অনুমোদন ফিলিপাইন সিনেট ইতোমধ্যে দিয়েছে। এটি বর্তমানে জাপানের সংসদে অনুমোদনের অপেক্ষায়। ইশিবা আরও জানান, ভবিষ্যতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে সরকার পর্যায়ে আলোচনা শুরুর বিষয়েও আমরা সম্মত হয়েছি। ফিলিপাইন প্রেসিডেন্ট মারকোস বলেন, টোকিওর পূর্ববর্তী নিরাপত্তা সহায়তার মাধ্যমে আমাদের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো বিশেষ করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কার্যকর উন্নয়ন সাধন করতে পেরেছে। তিনি দুই দেশের সম্পর্ককে ‘স্বর্ণযুগ’ বলে আখ্যায়িত করেন। বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলো এমন এক সময়ে যখন চীনের সঙ্গে ফিলিপাইন ও জাপানের উত্তেজনা তীব্রতর হয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরে বিরোধপূর্ণ এলাকাগুলোতে চীন ও ফিলিপাইনের উপকূলরক্ষী বাহিনীর মধ্যে একের পর এক সংঘর্ষ পরিস্থিতি ঘনীভূত করছে। অপরদিকে, পূর্ব চীন সাগরে দিয়াউইউ (চীনের নাম) বা সেনকাকু (জাপানের নাম) দ্বীপপুঞ্জ ঘিরে চীনের সঙ্গে জাপানের দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছে। এই দ্বীপগুলো বেইজিংয়ের দাবি থাকলেও বর্তমানে টোকিওর প্রশাসনের অধীনে রয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ চীন সাগরে একটি বিরোধপূর্ণ বালুকাময় দ্বীপ নিয়ে ফিলিপাইন ও চীনের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সোমবার চীন অভিযোগ করে, তিয়েশিয়ান রিফ বা স্যান্ডি কায়-এ ছয়জন ফিলিপাইনি নাগরিক অবৈধভাবে প্রবেশ করেছেন, যা তাদের মতে চীনের আঞ্চলিক সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন। এই ভূখণ্ডগত বিরোধ থেকেই জাপান ও ফিলিপাইন নিজেদের মধ্যে পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করছে। অর্থনৈতিক দিক নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতির প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন জাপানি প্রধানমন্ত্রী। ইশিবা বলেন, আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গৃহীত সাম্প্রতিক পদক্ষেপ এবং যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পারস্পরিক পাল্টা শুল্ক আরোপের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে উদ্ভূত প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেছি।