ফ্যাশন দুনিয়ার আলোচিত ঘটনা

২১ ডিসেম্বর, ২০২২ | ১০:১৪ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

করোনাপরবর্তী বছর হিসাবে ২০২২ সাল ছিল খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এ বছরেই ফ্যাশন দুনিয়া আবার নতুন করে জেগে উঠেছে। জেগে উঠেছিলেন তারকারাও। করোনায় গত কয়েক বছর স্থবির থাকার পর ধীরে ধীরে সব আবার স্বাভাবিক হতে চলেছে। ফলে ফ্যাশন দুনিয়াও তার সব চাকচিক্য নিয়ে হাজির ছিল বছরজুড়েই। ২০২২ সালে সাড়া জাগানো কিছু তারকাদের নিয়েই সাজানো হয়েছে আমাদের আজকের আয়োজন। চলুন ঘুরে আসি ফ্যাশন দুনিয়ার হালচাল জানতে- হ্যাপি বার্থডে, মি. প্রেসিডেন্ট! যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ৪৫তম জন্মদিনে মেরিলিন মনরো একটি বডি হাগিং ন্যুড বোল্ড সিল্ক গাউন পরে গেয়েছিলেন ‘হ্যাপি বার্থডে, প্রেসিডেন্ট’। সেই পোশাকটি তখন থেকেই ইতিহাসের অংশ হয়েছিল। প্রায় ৬ হাজার হীরের টুকরো দিয়ে তৈরি সেই পোশাকটি নিলামে ওঠে দুবার। সর্বশেষ পোশাকটি নিলামে কিনে রিপলি’স বিলিভ ইট অর নট। ৪.৮ মিলিয়ন ডলারের এ পোশাকটি রিপলি’স-এর মিউজিয়ামে সংরক্ষণের জন্য কেনা হয়েছিল। ২০১৬ সালে যখন এটি কেনা হয় তখন এটি ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দামি পোশাক। ৬০ বছর আগের মেরিলিন মনরো এ পোশাকটি পরার পর এটি আর কেউ পরেনি। ৬০ বছর পর ২০২২ সালের ২ মে, মেট গালায় পরার জন্য কিম কার্ডাশিয়ান এটা রিপলি’স-এর কাছ থেকে কিছু সময়ের জন্য ধার নেন। মজার ব্যাপার হলো, এ পোশাক পরার জন্য কিমের বডির মাপ ঠিক ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও কিম এ পোশাক পরার জন্য মাত্র এক মাসে ১৬ পাউন্ড বা ৭.২ কেজি ওজন কমান। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি। এত অল্প সময়ে ওজন কমানোর পরেও পোশাকটির পেছনের চেইন লাগানো যাচ্ছিল না। তাই সেটা ঢাকার জন্য উত্তরীয় বা স্টোল ব্যবহার করেন। অবশ্য নিন্দুকেরা বলাবলি করছে, পেছন থেকে কিছু হীরের টুকরো খসে পড়ার জন্য সেটা ঢেকে রাখতেই কিমের এ উত্তরীয়র ব্যবহার। তবে সে যাই হোক, মেরিলিন মনরোর এই আসল পোশাকটি পরার কয়েক মিনিটের মধ্যেই সেটি খুলে কিম একটি রেপ্লিকা পরেন, যাতে আসল পোশাকটির ক্ষতি না হয়। কিন্তু তারপরও একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়, কিম পোশাকটি পরতে গিয়ে নষ্ট করেছেন। সবচেয়ে বড় কথা ৬০ বছর পর কিমের দেহে ভর করে স্বয়ং মেরিলিন মনরোই যেন হাজির হয়েছিলেন মেট গালায়, যা ফ্যাশন দুনিয়ায় ঝড় তোলে। টিমোথি শ্যালামেট সাধারণত ব্যাকলেস পোশাক মেয়েদের ক্ষেত্রেই দেখা যায়। কিন্তু টিমোথি শ্যালামেট তো আর সাধারণ কেউ নন। তা ছাড়া এমনিতেই তিনি তার পোশাকের জন্য আলোচিত থাকেন। ২০২২ ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে টিমোথি শ্যালামেট হাজির হলেন ব্যাকলেস একটি লাল হল্টার নেকটপ পরে। সঙ্গে মানানসই ট্রাউজার। সেদিন বোনস অ্যান্ড অল-এর প্রিমিয়ার ছিল। অপ্রচলিত ডিজাইন এবং আলাদা সেলাই ড্রেসটিকে দিয়েছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি মাত্রা, যা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে উপস্থিত সবার নজর কেড়েছিল। লাল রঙের পোশাকের সঙ্গে মানানসই কালো জুতায় টিমোথিকে দারুণ মানিয়েছিল। সেই পোশাকটিই ২০২২ সালের ভাইরাল পুরুষদের পোশাকদের মধ্যে একটি। ‘ভি’ যেন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা বিটিএস ব্যান্ডের কিম তাইয়াং অথবা তিনি যে নামে জনপ্রিয় সেই ‘ভি’ প্যারিসের এক ফ্যাশন শো’র সব মনোযোগ কেড়ে নিয়েছিলেন। তাকে দেখার জন্য বিটিএস ব্যান্ডের ভক্তরা দীর্ঘ অপেক্ষায় ছিলেন এবং তাকে দেখামাত্র তার পিছু পিছু ব্যাক স্টেজ পর্যন্ত ছুটেছে! যা নিকট অতীতে খুব একটা দেখা যায়নি কোনো তারকার ক্ষেত্রে। কিন্তু ‘ভি’র ব্যাপারটাই ভিন্ন। প্যারিসের প্যালেস ডি টোকিওতে অনুষ্ঠিত এই শো’তে দেখা যায় ‘ভি’ দম্পতিকে। সেদিন লিসা এবং ভিকে দেখতে মানুষ উপচে পড়েছিল, যা একটা পর্যায়ে তাদের পেছেনেও ছুটতে থাকে। ২০২২ সালে এমন উন্মাদনা খুব কম তারকার কপালেই জুটেছে! রিয়ানার স্ট্রিট স্টাইলে বেবি বাম্প প্রদর্শন স্ট্রিট স্টাইলের জন্য তার তুলনা নেই। সেই রিয়ানা যখন তার বেবি বাম্পের ঘোষণা দেবেন তখন সেটাতেও যে স্ট্রিট স্টাইল থাকবে এ আর নতুন কি? তবে সত্যি সত্যিই সবাইকে চমকে দিয়ে রিয়ানা তার প্রেগনেন্সির খবর দিলেন অনেকটা রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে। তীব্র শীতে নিউইয়র্কের রাস্তায় লম্বা পিংক কালারের জ্যাকেটের নিচের অংশ যদি খোলা থাকে তখন নিশ্চিতভাবেই আপনি চমকে যাবেন! আর আরও চমকানোর ব্যাপার ছিল সেই খোলা অংশ দিয়ে উঁকি দিচ্ছিল মাতৃত্ব। হ্যাঁ, রিয়ানা লম্বা চেইন গলা থেকে পেট পর্যন্ত ঝুলিয়ে গোলাপি জ্যাকেটের নিচের বোতাম খুলে যখন রাস্তায় হাঁটছিলেন তার প্রেমিকের হাত ধরে তখনই বোঝা যাচ্ছিল বেবি বাম্প দেখাচ্ছেন। ফ্যাশন দুনিয়ায় এ স্টাইল নিয়ে হইচই পড়ে যায়। রিয়ানা অনেকদিন ধরেই মা হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করছিলেন। নিউইয়র্কের রাস্তায় বয়ফ্রেন্ড এসাপ রকির হাত ধরে হেঁটে হেঁটেই জানান দিলেন নিজের মাতৃত্বের খবর। বেলা হাদিদ মডেল অব দ্য ইয়ারে ভূষিত বেলা হাদিদ এ বছরের সবচেয়ে ভাইরাল মোমেন্টের অধিকারী। প্যারিস ফ্যাশন উইকে কোপারনি স্প্রে দিয়ে যখন ড্রেস বানানো হয়, তার আগ মুহূর্তে বেলা হাদিদ তার পরিধেয় বস্ত্র খুলে নতুন স্প্রে পোশাকের জন্য নগ্ন হয়ে যান। দাঁড়িয়ে পরেন নতুন পোশাক তৈরির জন্য। ফ্যাশন শো’র দর্শকদের সামনেই তৈরি হয় বেলা হাদিদের পোশাক, যা কিনা সবচেয়ে বেশি কাভারেজ পাওয়া মুহূর্ত ছিল অন্তত টাকার অঙ্কে। ২৬.৩ মিলিয়ন ডলারের কাভারেজ পাওয়া সেই মুহূর্তটির জন্যই বলা যায় বেলা হাদিদ মডেল অব দ্য ইয়ার নির্বাচিত হয়েছেন। ২৬.৩ মিলিয়ন ডলার মূল্যের কাভারেজের হিসাবটি দিয়েছে লঞ্চমেট্রিক্স। কোপারনির এ ড্রেস এ বছরের সেরা হ্যালোউইন ড্রেসে পরিণত হয়।