ভাড়া করা জমি দেখিয়ে প্লট বিক্রি ট্রাস্ট সিটির পর নয়া মিশন ইউকে সাউথ পূর্বাচল সিটি

২০ ডিসেম্বর, ২০২২ | ৮:২৪ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

পূর্বাচলের পাশে গাজী সেতুসংলগ্ন ভুঁইফোড় আবাসন কোম্পানি ইউকে সাউথ পূর্বাচল সিটি এবং পূর্বাচল ডায়মন্ড ভিলেজের আগ্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়েই চলেছে। কোনো অনুমতি ছাড়াই গড়ে তোলা নামসর্বস্ব এই আবাসন প্রকল্পের ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ ক্রেতারা। জমি না কিনেই গ্রাহকদের প্লটও বরাদ্দ দিচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগীরা বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহরসংলগ্ন মিথ্যা তথ্য দিয়ে রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগাঁও মৌজায় ‘ইউকে সাউথ পূর্বাচল সিটি’ এবং সোনারগাঁও উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের বস্তল মৌজায় পূর্বাচল ডাইমন্ড সিটি নামের প্রকল্প ২টি অনুমোদন না নিয়েই গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই কোম্পানির নামের সঙ্গে পূর্বাচল লাগিয়ে চটকদার বিজ্ঞাপনে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে এখানে প্লট বিক্রি করছেন, এতে করে প্রতারিত হওয়ার শঙ্কায় পড়েছে অসংখ্য গ্রাহক। জানা যায়, এই কোম্পানি ২টির মালিক বহু মামলার আসামি এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া ট্রাস্ট সিটির মালিক মাহবুবুল আলম। নতুন করে প্রতারণার জন্য জমির ওপর সাইনবোর্ড ভাড়া করে লাগিয়ে এই ভুয়া প্রকল্প তৈরি করেছে। মাহবুবুল আলম স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে বছর চুক্তিতে জমি ভাড়া নিয়ে মাস্তানদের সহযোগিতায় তা দখলে রেখে প্রকল্পের সাইনবোর্ড টানিয়ে নামসর্বস্ব ‘ইউকে সাউথ পূর্বাচল সিটি’ গড়ে তুলেছেন। পূর্বাচল উপশহরের তুলনায় কম দামে প্লট দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে ইউকে সাউথ পূর্বাচল সিটি শুরু করে বাহারি প্রচারণা। স্বপ্নের শহরের পাশে নিজের বাড়ি নির্মাণের আশায় গ্রাহকরা এখানে প্লট কিনে প্রতারিত হচ্ছে । কে এই মাহবুবুল আলম? পূর্বাচল ট্রাস্ট সিটি নামে একটি ভুয়া আবাসন তৈরি করে প্রায় ১২০০ গ্রাহকের কাছ থেকে কয়েকশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পলাতক ছিল এই মাহবুবুল আলম। ট্রাস্ট সিটির প্রতারণা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় শতাধিক গ্রাহক টাকা ফেরত চেয়ে মামলা করেছিল প্রতিষ্ঠানটির মালিক মাহবুবুলের বিরুদ্ধে। ২০১৭ সালের ১৫ মে স্থানীয় ১৩৬ জন জমির মালিক এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রাজউকে অভিযোগ দেয়। এতকিছুর পরে পুনরায় নিজের পরিচয় গোপন রেখে নয়া প্রতারণার কৌশল হিসাবে ইউকে সাউথ পূর্বাচল সিটি এবং পূর্বাচল ডায়মন্ড ভিলেজ নাম দিয়ে ভুয়া প্রকল্প তৈরি করে। এদিকে এই ভুয়া প্রকল্পের উদ্যোক্তারা এলাকার কৃষকদের কাছ থেকে সাইনবোর্ড টানানোর শর্তে বছর চুক্তিতে জমি ভাড়া নিয়ে প্লট বিক্রি করেছে। ইউকে সাউথ পূর্বাচল সিটির প্রকল্পে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য মাসিক চুক্তিতে মাস্তানদের লালন-পালন করে মাহবুবুল আলম। এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী গাজী সেতুসংলগ্ন এলাকার মাস্তান রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা ইমন, হুমায়ুন ও তার সহযোগী কাঞ্চন মোতাহার, দুলা, দেলোয়ার, শাহজাদা আরও ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি দল এলাকায় এই প্রকল্প দুটির অপকর্ম নিয়ন্ত্রণ করে। কেউ প্রকল্প দেখতে এলে সারাক্ষণ পাশেই দাঁড়িয়ে থাকে এই বাহিনীর সদস্যরা। এলাকার কৃষকদের জমিতে জবরদস্তি সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয় এই মাস্তান বাহিনী। মাহবুবুল আলমের নির্দেশে এই বাহিনীর অত্যাচারের শিকার হয়েছে এলাকার বহু কৃষক। এই প্রতারণার অন্যতম সহযোগী হিসাবে আছেন জুয়েল হক অপু এবং সবুজ মিয়া। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মাহবুবুল আলম বলেন, আমি এসব প্রতিষ্ঠানের মালিক না, আমাকে একটা প্রমাণ দেখান।