বই প্রাপ্তি নিয়ে শঙ্কা এনসিটিবিকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে

২০ ডিসেম্বর, ২০২২ | ৮:২০ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে সপ্তাহ দুয়েক বাকি থাকলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ২৭ শতাংশ বই মুদ্রণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে। অথচ আগের বছরগুলোয় এ সময়ে অন্তত ৭০ শতাংশ বই মাঠপর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ার নজির রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অবশিষ্ট সময়ে দিনরাত কাজ করলেও ৬০ শতাংশের বেশি বই পাঠানো সম্ভব নয়। এ অবস্থায় ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের পুরো সেটের পরিবর্তে দু-চারটি করে বই দিয়ে পালন করতে হতে পারে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক উৎসব। উল্লেখ্য, এবার প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের স্তরের জন্য ৩৩ কোটি ৪৮ লাখ ৭৬ হাজার ৯২৩ কপি পাঠ্যবই মুদ্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক থেকে প্রাথমিক স্তরে ৯ কোটি ৬৬ লাখ ৮ হাজার ৯৭৮ এবং মাধ্যমিক স্তরে (স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি) মোট ২৩ কোটি ৮২ লাখ ৬৭ হাজার ৯৪৫ কপি পাঠ্যবই। নির্ধারিত সময়ে পাঠ্যবই প্রাপ্তি নিয়ে এবার যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে, এর দায় জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এড়াতে পারে না বলে মনে করি আমরা। উদ্বেগজনক হলো, প্রায় প্রতিবছরই নতুন বই নিয়ে এক ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। বিষয়টি অনভিপ্রেত। নতুন বছরের পাঠ্যবই মুদ্রণ ও বিতরণের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা ও জটিলতা থেকে উত্তরণে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। দেশের শতভাগ জনগোষ্ঠীকে শিক্ষিত করার লক্ষ্যে সরকার বিনামূল্যে বই বিতরণ, শিক্ষা উপবৃত্তি, অবৈতনিক শিক্ষা ও খাদ্য ব্যবস্থাসহ নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের হাতে সময়মতো পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এনসিটিবিকে। সময়মতো পাঠ্যবই না পেলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হওয়াই স্বাভাবিক। তাছাড়া ইতঃপূর্বে দেখা গেছে, প্রকাশিত পাঠ্যপুস্তকগুলোর মধ্যে কোথাও একটি অধ্যায়ের অর্ধেক নেই, আবার কোথাও এক পৃষ্ঠার সঙ্গে অপর পৃষ্ঠার কোনো মিল নেই। ভুলে ভরা এমন পাঠ্যপুস্তক নিয়ে অতীতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের বহুবার বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্টদের অবহেলা এবং যথাযথ তদারকির অভাবে পাঠ্যপুস্তক থেকে ভুল ও অসংগতি দূর হচ্ছে না। এবারও যাতে সেরকম কিছু না ঘটে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা জরুরি। ভুলে গেলে চলবে না, শিক্ষার অপরিহার্য উপকরণ বই আর তা শিক্ষার্থীদের হাতে সময়মতো তুলে দেওয়ার দায়িত্ব এনসিটিবির। কাজেই এক্ষেত্রে তাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা কাম্য। শিক্ষার্থীদের হাতে যথাসময়ে মানসম্মত ও নির্ভুল পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়ার লক্ষ্যে এনসিটিবি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে, এটাই প্রত্যাশা।