ঢাকার বায়ুমান উদ্বেগজনক

১৯ ডিসেম্বর, ২০২২ | ৯:১৮ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

গত পাঁচ দশকে উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে দেশের অবস্থান ইতিবাচক হলেও আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশ দূষিত বায়ুর দেশ হিসাবে পরিচিতি পাওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। এ বিষয়টি বহুদিন ধরে আলোচনায় থাকলেও পরিস্থিতির উন্নয়নে কর্তৃপক্ষের জোরালো তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে না। ইটভাটাসহ বিভিন্ন উৎস সারা দেশে দূষণ ছড়াচ্ছে। বস্তুত বায়ুদূষণের কারণগুলো চিহ্নিত হলেও সমস্যার সমাধানে জোরালো পদক্ষেপ না নেওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। নির্মল পরিবেশ গড়ে তুলতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া না হলে আমাদের অর্জনগুলো কতটা টেকসই হবে, এ নিয়ে শঙ্কা থেকেই যায়। উদ্বেগজনক খবর হলো, বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় বাতাসের ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ মান (শহরটির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ২৩৮; ১৭ ডিসেম্বর সকাল) নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ঢাকা। ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বিবেচনা করা হয়। তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর; শহটির স্কোর ২৬৪। ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণের সমস্যায় জর্জরিত। এর বাতাসের মান সাধারণত বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত থাকলেও শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায়। রাজধানীতে বায়ুদূষণের প্রধান কারণ যানবাহনের ধোঁয়া এবং ধুলাবালি। মাত্রাতিরিক্ত ব্যক্তিগত গাড়ি, উন্নত গণপরিবহণ ব্যবস্থা না থাকার কারণে এ শহরে বায়ুদূষণ সমস্যা দিন দিন প্রকট আকার ধারণ করছে। এ অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে রাজধানীতে কালো ধোঁয়া সৃষ্টিকারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করার পদক্ষেপ নিতে হবে। বায়ুদূষণের কারণে দেশ কতটা ক্ষতির শিকার তা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন শহরে এখনো আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠেনি। আগুন দিয়ে বর্জ্য পোড়ানোর কারণে প্রতিনিয়ত শহরগুলোর পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। যেহেতু সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপনের অন্যতম উপাদান নির্মল পরিবেশ, সেহেতু এ বিষয়ে উদাসীন থাকার কোনো সুযোগ নেই। দেশে পানিদূষণ ও অন্যান্য দূষণের বিষয়টিও বহুল আলোচিত। পানিদূষণের কারণে মারাত্মক দূষিত পদার্থও আমাদের খাদ্যচক্রে মিশে যাচ্ছে। ফলে মানুষ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যাদের অতিরিক্ত লোভের কারণে দূষণ কমানো যাচ্ছে না, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে দেরি করা হলে দেশের উন্নয়নের গতি কী ধরনের হুমকির মুখ পড়বে, তা-ও বহুল আলোচিত। সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয় না থাকলে দূষণরোধে সুফল পাওয়ার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে। দূষণ পরিস্থিতির উন্নয়নে প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি দেশের সাধারণ মানুষকেও নির্মল পরিবেশ গড়ে তোলার কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে হবে।