বিজয় দিবস উদযাপন হোক মসজিদ-মাদ্রাসায়

১৬ ডিসেম্বর, ২০২২ | ৯:১৮ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

আমি একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক, এর চেয়ে বড় গৌরব আর কী হতে পারে! স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার এবং আল্লাহরপক্ষ থেকে নেয়ামত। পৃথিবীতে ১ লাখ ২৪ হাজার নবি-রাসূল প্রেরিত হয়েছেন, তাদের সবাই সমাজ, রাষ্ট্র ও মানুষের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছেন। এ স্বাধীনতা অর্জনের জন্যই আমাদের প্রিয়নবি হজরত মুহাম্মদ (সা.) শত কষ্ট সয়ে মাতৃভূমি মক্কা বিজয় করেছেন। এ বিজয়ের মাধ্যমে মুহাজির সাহাবিরা স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ উপভোগ করতে সক্ষম হয়েছেন। ADVERTISEMENT ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান স্বাধীনের পর এদেশের মানুষ স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ উপভোগ করতে পারেনি। ফলে ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী দীর্ঘ ৯ মাস সংগ্রামের পর ১৬ ডিসেম্বর জন্ম হয়েছে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের। বছর ঘুরে আমাদের মাঝে ফিরে আসে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। এ গুরুত্বপূর্ণ দিনে বিজয়ের সংগ্রামে আত্মদানকারী সব শহিদকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা, তাদের জন্য আল্লাহতায়ালার দরবারে হাত তুলে দোয়া করা এ দেশের প্রতিটি নাগরিকের ইমানি দায়িত্ব। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলায় যথাযোগ্য মর্যাদায় বীর শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে মহান বিজয় দিবস পালন করা হয়। কিন্তু বিজয়ের ৫১ বছরে এসেও দেশের কওমি মাদ্রাসা ও মসজিদে বিজয় দিবস পালনের দৃশ্য তেমন একটা চোখে পড়ে না। মসজিদ-মাদ্রাসার আঙিনায় বিজয়ের পতাকা ওড়ে না। এটা বড়ই আফসোস ও দুঃখের বিষয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পেছনে অনেক আলেমের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। কিন্তু বর্তমানে মসজিদ-মাদ্রাসায় মহান বিজয় দিবস পালন ও পতাকা উত্তোলন না করার কারণে অনেকে মনে করেন, দেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে আলেম-ওলামাদের কোনো অবদান নেই, ইসলামে বিজয় ও স্বাধীনতার কোনো গুরুত্ব-তাৎপর্য নেই, বিজয় দিবস পালন ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ইত্যাদি। অথচ বাস্তবতা হলো, প্রিয়নবি মুহাম্মদ (সা.) নিজেও বিজয় দিবস উদযাপন করেছেন। দীর্ঘ দশ বছর পর রাসূল (সা.) বিজয়ের বেশে হাজার হাজার সাহাবিদের নিয়ে যখন প্রিয় মাতৃভূমি মক্কায় প্রবেশ করলেন, তখন তিনি চেহারা নিুগামী অবস্থায় একটি উটের উপর বসা ছিলেন। প্রথমে হজরত উম্মেহানী (রা.)-এর ঘরে প্রবেশ করে আট রাকাত নামাজ আদায় করলেন। সেই নামাজকে সালাতুল ফাতহ বা বিজয়ের নামাজ বলা হয়। বিজয় দিবস পালনে ইসলামে কোনো বাধা নেই। এদিন আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, শহিদের স্মরণে মাগফিরাত কামনা করাই ইসলামের শিক্ষা। মাদ্রাসা-মসজিদে বিজয় দিবস পালন ও পতাকা উত্তোলন প্রসঙ্গে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব, ঐতিহ্যবাহী গহরডাঙ্গা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল, হাফেজ মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন বলেন, ইসলামের ইতিহাসে বিজয় দিবস উদযাপনের বহু নজির রয়েছে। একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে বিজয় দিবস আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যারা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে রক্ত দিয়েছেন, শাহাদতবরণ করেছেন তাদের জন্য ১৬ ডিসেম্বরের বিজয়ের দিনে দেশের প্রতিটি মাদ্রাসা-মসজিদে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা খুবই জরুরি। খতিব বলেন, পতাকা একটি স্বাধীন দেশের প্রতীক। রাষ্ট্রের আইন হিসাবে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের জন্য এ আইন পালন করা অত্যাবশ্যক। মসজিদে-মাদ্রাসায় পতাকা উত্তোলনে কোনো সমস্যা নেই। দেশের আইন মানার মাধ্যমে দেশপ্রেম বৃদ্ধি পায়। আমাদের উচিত মহান বিজয় দিবস ও জাতীয় পতাকার প্রতি সম্মান ও মর্যাদা দেখানো।