সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকট

২১ এপ্রিল প্রকাশিত ‘লেবাস বদলে বাজার নিয়ন্ত্রণে সিন্ডকেট’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি আমলে নিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। ভোক্তার অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থাটি বলছে- ৫ আগস্টের পর পুনরায় সক্রিয় হয়ে এখন সয়াবিন তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে পুরোনো সিন্ডিকেট। তারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়িয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার পাশাপাশি অতি মুনাফা অর্জন করতে চাচ্ছে। তাই সিন্ডিকেটগুলোকে আইনের আওতায় আনতে হবে। মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববাজারে ধারাবাহিকভাবে ভোজ্যতেলের দাম কমলেও দেশের বাজারে এই তেল ভোক্তাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। সরকারের শুল্ক ছাড় ও ভ্যাট হ্রাসসহ বিভিন্ন নীতি-সহায়তা থাকা সত্ত্বেও কিছু প্রভাবশালী কোম্পানি বাজারে তেলের সরবরাহ ইচ্ছাকৃতভাবে কমিয়ে অস্থিরতা তৈরি করেছে। সর্বশেষ ১৪ এপ্রিল থেকে প্রতি লিটারে ১৪ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। এরপরও সিন্ডিকেটগুলো আরও ৭ টাকা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বিশ্ববাজার বিশ্লেষণ অনুযায়ী ২০২২ সালে প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১৬৬৭ ডলার, যা ২০২৪ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ১০২২ ডলারে। অথচ দেশে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে বারবার। বর্তমানে নির্ধারিত দামেও বাজারে তেল পাওয়া যাচ্ছে না। খুচরা বাজারে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। যা নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ১১ টাকা বেশি। ক্যাব মনে করছে, দেশের ৪-৫টি বড় কোম্পানি মিলে সয়াবিন তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা আগের সরকারের সময়েও একই কৌশলে ভোক্তাদের জিম্মি করেছে। এখনো তারা একইভাবে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। সিন্ডিকেট ভেঙে বাজারে স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে না পারলে সংকট আরও বাড়বে। ভোক্তাদের স্বার্থে অবিলম্বে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, বাজার তদারকি জোরদার এবং সরকারের নীতি-সহায়তা যথাযথ বাস্তবায়ন জরুরি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করেছে। এরপরও ব্যবসায়ীরা বাজারে সরবরাহ বাড়াননি। যা সরকারের আইন ও নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনের শামিল। ব্যবসায়ীদের এ ধরনের আচরণ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে বলে ক্যাব মনে করে।