মৃত্যুপুরী গাজায় মৃত্যুঞ্জয়ী কিশোরী

২১ এপ্রিল, ২০২৫ | ৯:৫২ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

চারদিক থেকে ভেসে আসছে ঈদের খুতবা। সেদিন কিছুটা হলেও উৎসবের আমেজ ছিল ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ মৃত্যু উপত্যকা গাজায়। তবে চোখ ঘুরালেই দেখা মিলছিল গণহত্যার ছাপ। ইট-সিমেন্টের কংক্রিটগুলো ধসে পড়েছিল পুরো এলাকায়। উত্তরের বেইত লাহিয়ার ধূ-ধূ এলাকায় শুধুই ধ্বংসস্তূপ। হঠাৎই পাথরের নিচ থেকে উঠে আসে এক অলৌকিক জীবন। ইদুল ফিতরের কয়েকদিন আগেই যে শুধুই স্মৃতি হয়ে গিয়েছিল তার প্রতিবেশী-প্রিয়জনের কাছে। হয়তো ঈদের দিনে বন্ধুরা তাকে মনেও করেছিল কয়েকবার। কেউ কেউ হয়তো মায়ার টানে ছুটে দেখে এসেছিল তার বিধ্বস্ত বাড়ি! ঈদের দিনে রাস্তায় ধূলি-ধূসর গায়ে হেঁটে চলা মেয়েটিকে কেউ স্বপ্নেও ভাবেনি সে বেঁচে আছে! অথচ এই মেয়েটিই হয়ে উঠেছিল বেইত লাহিয়ার ঈদের দিনের ইতিহাস। মৃত্যুপুরী গাজায় ইসরাইলের হামলা থেকে বেঁচে ফেরা মৃত্যুঞ্জয়ী সেই কিশোরীর নাম রিম আল-বালি। ৫ দিন ধরে পাথরের নিচে আটকে থাকার পরও বেঁচে যায় সে। দখলদার বাহিনীর নৃসংশ বোমা হামলায় মা-বাবাসহ পুরো পরিবারকে হারিয়েছে রিম। জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে প্রতিবেশীদের লাশের কাছে আবিষ্কার করে রিম। সেখানে আর এক মুহূর্ত দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিল না সে। ব্যথায় শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল তার। কিন্তু সাহসী রিম ৩ কিলোমিটারেরও বেশি পথ হেঁটে পৌঁছে যান তার বাবার অফিসের সামনে। সেখানে যেতেই ঘুমিয়ে পরে সে। উত্তর বেইত লাহিয়াতে ইসরাইলের বোমা হামলার স্বীকার হয়েছিল তার পুরো পরিবার। হামলায় তাদের ভবনটি ধসে পড়ে। ধ্বংসস্তূপ থেকে বেরিয়ে রিম তার পরিবারকে খুঁজছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সে জানতে পারে তারা কেউই আর বেঁচে নেই। ধ্বংসস্ত‚পের নিচে পাঁচ দিন কোমায় ছিল। জ্ঞান ফেরার পর সে প্রচণ্ড তৃষ্ণার্তও ক্ষুধার্ত ছিল। আইনজীবী বাবার অফিসে যাওয়ার পরও কেউ তাকে চিনছিল না। এরপর ঘটনাক্রমে একজন আত্মীয় তাকে চিনতে পারে। পরবর্তীতে তার নানার বাড়িতে নিয়ে যায় তাকে। নানাকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছিল রিম। এরপর সেখান থেকে দেইর আল-বালাহে তার মামার বাড়িতে চলে যায় সে। তখনও তার শরীর ক্লান্ত ও প্রচণ্ড দুর্বল। জরুরি চিকিৎসা ও মানসিক যত্নে রিমের চিকিৎসা চলছে। চলমান এই যুদ্ধে শুধু রিমই নয় গাজার খান ইউনিসের একটি ভবন থেকে এক মাস বয়সী এক শিশুকেও উদ্ধার করেছিলেন উদ্ধারকর্মীরা। এপি।