অচিরেই রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা দেওয়া হবে: খন্দকার মোশাররফ

১৪ ডিসেম্বর, ২০২২ | ১১:৪২ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে বর্তমান সরকারকে বিদায় করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর প্রথম যারা ক্ষমতায় ছিল তারাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নষ্ট করেছে। সবার অধিকার কেড়ে নিয়ে একদলীয় বাকশালী শাসন কায়েম করেছিল। রক্ষীবাহিনী গঠন করে ২০ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল। সেই আওয়ামী লীগ আবারও দেশে ১৪ বছর ধরে গায়ের জোরে দেশ শাসন করছে। ২০১৪ সালে বিনা ভোটে সংসদ গঠন করেছে। ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতেই ডাকাতি করেছে। আবারও একতরফা নির্বাচনের চেষ্টা করছে তারা। বুধবার বিকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে এ সভার আয়োজন করে বিএনপি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপির সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে বিচারবহির্ভুতভাবে হত্যা করেছে। আইনজীবী, সাংবাদিক রাজনীতিবিদ সবাইকে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করেছে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে বানোয়াট মামলায় সাজা দিয়ে বন্দি করেছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বিদেশে থাকতে বাধ্য করেছে। এই সরকার সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ। তাদের অর্থ পাচার এত বেশি যে দেশের অর্থনীতি এখন ধ্বংসের কিনারে। আজকে যারা গণতন্ত্র, অর্থনীতি, সুবিচার নষ্ট করেছে তাদের দেশের জনগণ আর দেখতে চায় না। সুতরাং সবার দায়িত্ব হচ্ছে এই স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা। তা না হলে কারও রেহাই নেই। তিনি বলেন, আমরা ১০ দফা প্রণয়ন করেছি। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও সবার অংশগ্রহণে নির্বাচনে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সেখানে যদি জনগণ বিএনপিকে, খালেদা জিয়াকে, তারেক রহমানকে নির্বাচিত করে তাহলে দেশ আমরা কিভাবে মেরামত করব তার রূপরেখা অচিরেই জনগণ ও জাতির সামনে উপস্থাপন করব। সেই রূপরেখা নিয়ে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ১০ দফা নিয়ে আসুন আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাই। যত ষড়যন্ত্র থাকুক এই সরকারের আসলে সময় শেষ। তাই সাহস করে সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে মুক্তিযোদ্ধাদের সেই সাহস, বুদ্ধিজীবীদের সেই সাহস ধারণ করে দেশকে মুক্ত করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করি- শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে এটাই হোক আমাদের শপথ। ১৯৭২-৭৫ সাল ও গত ১৪ বছর ধরে আওয়ামী লীগের নানা কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে বিএনপির এই প্রবীণ নেতা বলেন, আমরা ১০ বিভাগীয় সমাবেশে দেখেছি, জনগণ পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছে যারা গণতন্ত্র হত্যা করেছে, অর্থনীতি ধ্বংস করেছে, বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছে, সমাজকে কুলষিত করেছে- তারা এই রাষ্ট্রকে মেরামত করতে পারবে না। জনগণ এখন পরিবর্তন চায়। স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, আসুন আমরা নতুনভাবে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার শপথ করি। যেভাবে একাত্তরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করেছিলাম। স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, বরকতউল্লাহ বুলু, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, সাংবাদিক এমএ আজিজ প্রমুখ। এদিকে বুধবার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, গায়ের জোরে দেশ শাসন করছে সরকার। দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হলে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। না পারলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে পারব না। এই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায় ছাড়া গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে না। স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকার জন্য এই সরকার দেশের অর্থনীতি লুণ্ঠন করেছে। চাঁদাবাজি করেছে, দুর্নীতি করেছে। টাকা পাচার করেছে। তাই আজকে বাংলাদেশের অর্থনীতি ধ্বংসের পথে। আজকে আমদানিকারকরা এলসি করতে পারছেন না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এই সরকারের অর্থনীতির লুটপাটের কারণে হয়েছে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ডা. এজেডএম জাহিদ হাসান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ইমরান সালে প্রিন্স, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিমউদ্দিন আলম, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক প্রমুখ।