এবার ঈদের ‘ইত্যাদি’তে যা থাকছে

প্রতিবারের মতো এবারও ঈদ উপলক্ষে দর্শকদের জন্য বিশেষ ‘ইত্যাদি’ নিয়ে হাজির হচ্ছেন জনপ্রিয় উপস্থাপক হানিফ সংকেত। দর্শকদের বিনোদনের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা ও শিক্ষামূলক তথ্য জানানোর জন্য ঈত্যাদিতে বরাবরই থাকে বিশেষ কিছু আয়োজন। এরইমধ্যে এবারের ঈদের ‘ইত্যাদি’র কিছু কিছু আয়োজন সম্পর্কে গণমাধ্যমে জানানো হয়েছে। আজকের এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে তা বিস্তারিত তুলে ধরা হলো- অন্যান্যবারের মতো এবারও ‘ইত্যাদি’ শুরু হয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত ঈদের গান ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ দিয়ে। দীর্ঘ তিন দশক ধরে ঢাকার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, বিভিন্ন আঙ্গিকে এবং বর্ণিল আয়োজনে এই গানটি পরিবেশিত হয়ে আসছে। এবারে এই গানটিতে অংশ নিয়েছেন দেশের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। গানটির সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী। বিশেষ গান ও সংগীত আয়োজন এবারের ‘ইত্যাদি’র অন্যতম আকর্ষণ দেশাত্মবোধক গান। গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন কিংবদন্তি শিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী ও সাবিনা ইয়াসমিন। তাঁদের সঙ্গে আরও আছেন নতুন প্রজন্মের দশজন শিল্পী—ইমরান মাহমুদুল, রাজীব, অয়ন চাকলাদার, রাশেদ, সাব্বির জামান, সিঁথি সাহা, অবন্তী সিঁথি, আতিয়া আনিসা, মালিহা তাবাসসুম খেয়া ও সানিয়া সুলতানা লিজা। প্রথমবারের মতো ‘ইত্যাদি’র কোনো গানে একসঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন হাবিব ওয়াহিদ ও প্রীতম হাসান। গানটির কথা লিখেছেন ইনামুল তাহসিন, সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন প্রীতম হাসান। আরেকটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন অভিনেতা সিয়াম আহমেদ ও অভিনেত্রী জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি। গানটির কথা লিখেছেন কবির বকুল, সুর ও সংগীত করেছেন ইমরান মাহমুদুল। নৃত্য ও পরিবেশনা ‘ইত্যাদি’র নৃত্য মানেই চমকপ্রদ আয়োজন। এবারও সেই ধারায় ব্যতিক্রমী এক নৃত্যানুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছেন সাফা কবির, সাদিয়া আয়মান, সামিরা খান মাহি ও পারসা ইভানা। তাদের সঙ্গে ছিলেন আরও একদল প্রশিক্ষিত নৃত্যশিল্পী। নৃত্য পরিচালনা করেছেন ইভান শাহরিয়ার সোহাগ এবং সংগীত পরিচালনা করেছেন আকাশ মাহমুদ। সামাজিক বার্তা ও নাট্যাংশ ‘ইত্যাদি’র প্রতিটি পর্বেই সমাজ সচেতনতামূলক কিছু বার্তা তুলে ধরা হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অনলাইনভিত্তিক তিনটি আলাদা ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্মিত বিশেষ পর্বে অংশ নিয়েছেন জনপ্রিয় তিন দম্পতি—শহীদুজ্জামান সেলিম ও রোজী সিদ্দিকী, এফ এস নাঈম ও নাদিয়া আহমেদ, ইন্তেখাব দিনার ও বিজরী বরকতউল্লাহ। মধ্যবিত্ত পরিবারের অর্থনৈতিক সংকটকে কেন্দ্র করে একটি মিউজিক্যাল ড্রামায় অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, মোমেনা চৌধুরী, আনোয়ার শাহী ও র্যাপ শিল্পী মাহমুদুল হাসান। এছাড়াও, ‘দেখার চোখ ও বিবেকের চোখ’ শীর্ষক সমসাময়িক বার্তা বহনকারী একটি দলীয় সংগীতে অংশ নিয়েছেন তৌসিফ মাহবুব ও শবনম বুবলী। গানটির কথা লিখেছেন মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী এবং কণ্ঠ দিয়েছেন তানজিনা রুমা, রাজিব ও খেয়া। নৃত্য পরিচালনা করেছেন ‘ইত্যাদি’র নিয়মিত নৃত্য পরিচালক মামুন। বিদেশিদের অংশগ্রহণ ও অভিনয় দুই দশকের বেশি সময় ধরে ‘ইত্যাদি’তে বিদেশি নাগরিকদের মাধ্যমে বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও গ্রামীণ খেলাধুলা তুলে ধরা হচ্ছে। এবারের বিষয় ‘গুজব’। এতে বিদেশিদের অসাধারণ অভিনয়ে ফুটে উঠবে গ্রামীণ জীবনের নানা সমস্যা ও বাস্তবতা। দর্শক নির্বাচন ও অন্যান্য পর্ব প্রতিবারের মতো এবারও ব্যতিক্রমী উপায়ে নির্বাচিত তিনজন দর্শকের সঙ্গে সরাসরি সংলাপে অংশ নিয়েছেন অভিনেতা নাসির উদ্দিন খান। সেইসঙ্গে রয়েছে ‘ইত্যাদি’র জনপ্রিয় চরিত্র নাতি এবং কাশেম টিভির রিপোর্টারকে ঘিরে কিছু চমৎকার মুহূর্ত। এছাড়াও ঈদকে ঘিরে সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে রয়েছে ডজনখানেক নাট্যাংশ, যেখানে অভিনয় করেছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পীরা। ‘ইত্যাদি’র শিল্প নির্দেশনায় রয়েছেন মুকিমুল আনোয়ার মুকিম। রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনায় আছেন হানিফ সংকেত। প্রযোজনা করেছে ফাগুন অডিও ভিশন, আর স্পন্সর করেছে কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড। উল্লেখ্য, ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’ প্রচারিত হবে ঈদের পরদিন, রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর বাংলাদেশ টেলিভিশনে।