গৃহযুদ্ধের মুখে ইসরাইল

২৩ মার্চ, ২০২৫ | ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

গাজা যুদ্ধের মধ্যেই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে ইহুদিবাদী ইসরাইলে। দেশটির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে বহিষ্কার করা নিয়ে এখন উত্তপ্ত দেশটি। এ নিয়ে ভেতরে ভেতরেই চলছে বিরোধ। সরকারের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে বিক্ষোভও। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এমন সিদ্ধান্তের জেরেই দেশটি গৃহযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির সম্মানিত আইনবিদ সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রেসিডেন্ট আহারুন বারাক। টাইমস অব ইসরাইল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার ইসরাইলের রোনেন বারকে বহিষ্কার করেছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে দেশটির হাইকোর্ট আগামী ৮ এপ্রিল পর্যন্ত ওই বহিষ্কারাদেশ স্থগিত করেছেন। তা সত্ত্বেও নেতানিয়াহু জোরপূর্বক এটি কার্যকরের চেষ্টা চালাচ্ছেন। এতে দেশটির ভেতরে ব্যাপক অর্ন্তদ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। ইসরাইল বিজনেস ফোরাম (আবিএফ) হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, রোনেন বারের বরখাস্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞাকে যদি সরকার সম্মান না করে তবে তারা ইসরাইলি অর্থনীতি অচল করে দেবে। এদিকে রোনেন বারকে বরখাস্তের সিদ্ধান্তে সরকার অটল থাকলে বসে থাকবেন না বলে হুমকি দিয়েছেন ইসরাইলের শ্রমিক ইউনিয়ন হিসতাদ্রুতের প্রধান আরমোন বার-ডেভিডও। মূলত ইসরাইলজুড়ে ধর্মঘটের ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। আরমোন বলেছেন, আমি আশা করি ইসরাইলি সরকার আদালতের প্রত্যেকটি নির্দেশ মানবে। যেমনটা সরকার তার নাগরিকদের কাছ থেকে প্রত্যাশা করে। এর জের ধরেই দেশটির সুপ্রিমকোর্টের সাবেক প্রেসিডেন্ট আহারন বারাক বলেছেন, শিন বেতের প্রধান এবং অ্যাটর্নি জেনারেলকে বহিষ্কারের মাধ্যমে নেতানিয়াহুর সরকার ইসরাইলে গৃহযুদ্ধ ডেকে আনছেন। চ্যানেল ১২-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বারাক আরও বলেছেন, ‘ইসরাইল গৃহযুদ্ধের কাছাকাছি পৌঁছেছে কারণ জনগণের মধ্যে বিশাল ফাটল ধরেছে। এটি নিরাময়ের জন্য কোনো প্রচেষ্টা করা হচ্ছে না। সবাই পরিস্থিতি আরো খারাপ করার চেষ্টা করছে।’ বুধবার জেরুজালেমে নেতানিয়াহু বিরোধী বিক্ষোভের একটি ঘটনার কথাও উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘একজন চালক একজন বিক্ষোভকারীকে ধাক্কা দিয়ে আহত করেছে সেখানে। আগামীকাল গুলি চালানো হবে এবং তার পরের দিন রক্তপাত হবে।’ এভাবেই পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকেই যাবে। তবে তার এ মন্তব্যের পর যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত নেতানিয়াহু শুক্রবার একটি ভিডিও পোস্ট করেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘কোনো গৃহযুদ্ধ হবে না। ইসরাইলি সরকারই সিদ্ধান্ত নেয় শিন বেতের প্রধান কে হবেন।’ নেতানিয়াহু দাবি, তিনি রোনেন বারের ক্ষমতার ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। তাই তাকে বরখাস্ত করছেন। অন্যদিকে সমালোচকরা বলছেন, ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করার এবং তার সহযোগীদের দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত বন্ধ করার ইচ্ছা থেকেই নেতানিয়াহু এই বরখাস্ত কর্যকর করতে চাচ্ছেন। এদিকে শিন বেতের প্রধানকে বহিষ্কার করা নিয়ে সাধারণ ইসরাইলিরা ব্যাপক বিক্ষোভ করছেন। তারা বলছেন, নেতানিয়াহু স্বৈরশাসকে পরিণত হয়েছেন। এ কারণে বিরোধী মতের রোনেন বারকে তিনি বহিষ্কার করছেন। যেন কেউ তার কাজে বাধা না দিতে পারে। এর আগে বুধবার গাজায় নতুন করে অভিযান চালানোর বিরুদ্ধে শুরু হওয়া বিক্ষোভকে ঘিরে ইসরাইলের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো বন্ধ করা হয়। এদিকে যুদ্ধের মাঝেই ব্যাপক অন্তদ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে ইসরাইলে।