যুদ্ধবিরতি কার্যকরে পুতিনের শর্তগুলো কী?

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির নীতির প্রতি মস্কো নীতিগতভাবে সম্মত। তবে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর জানা প্রয়োজন, যা নির্ধারণ করবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে কি না। পুতিন বলেছেন, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। তার মতে, কিছু বিষয় নিয়ে মস্কোর পরিষ্কার উত্তর চাই, যা নির্ধারণ করবে তারা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে কি না। সৌদি আরবে শান্তি আলোচনা এর আগে গত ১১ মার্চ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রতিনিধি দল সৌদি আরবের জেদ্দায় বৈঠক করে। এই বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে ৩০ দিনের ‘অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি’ প্রস্তাব করা হয়। বিবৃতিতে তিনটি মূল বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়: যুদ্ধবন্দি বিনিময়; বেসামরিক বন্দিদের মুক্তি; রাশিয়ার দ্বারা জোরপূর্বক স্থানান্তরিত ইউক্রেনীয় শিশুদের ফেরত পাঠানো। তবে এতে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার কোনো উল্লেখ ছিল না। এমনকি ইউক্রেনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তার বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। পুতিনের তিনটি মূল প্রশ্ন গত বৃহস্পতিবার বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে, পুতিন জানান, যুদ্ধবিরতির ধারণাটি ‘সঠিক’ এবং মস্কো তা নীতিগতভাবে সমর্থন করে। তবে তিনি বলেন, ‘কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা জরুরি। আমি মনে করি, আমাদের মার্কিন সহযোগীদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলা দরকার। সম্ভবত ট্রাম্পের সঙ্গেও কথা বলা যেতে পারে’। পুতিন যুদ্ধবিরতির বিষয়ে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন, যা মস্কোর জন্য পূর্বশর্ত হিসেবে কাজ করবে। সেগুলো হলো- কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় সেনাদের অবস্থা: ২০২৩ সালের আগস্টে ইউক্রেনীয় সেনারা রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে অপ্রত্যাশিত আক্রমণ চালায় এবং কিছু এলাকা দখল করে নেয়। রাশিয়া চায়, এই বিষয়টি সমাধান হোক। তবে, অন্য দুটি শর্ত সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য এখনো প্রকাশিত হয়নি। তবে পুতিনের মন্তব্য ইঙ্গিত দেয় যে, মস্কো সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করতে চায় এবং ইউক্রেনের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা সম্পর্কিত বিষয়গুলোও আলোচনায় আসতে পারে। ইউক্রেন ও পশ্চিমা প্রতিক্রিয়া এদিকে ইউক্রেন এই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবকে সন্দেহের চোখে দেখছে এবং বলছে, এটি রাশিয়াকে আরও সময় পেতে সহায়তা করবে। অন্যদিকে ট্রাম্প এ বিষয়ে সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে তিনি আগেও বলেছিলেন যে, তিনি রাশিয়াকে নতুন নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিতে পারেন, যদি তারা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না হয়। এমন প্রেক্ষাপটে পুতিনের শর্তগুলো স্পষ্টভাবে সামনে এলে বোঝা যাবে রাশিয়ার প্রকৃত অবস্থান কী। তবে এটি স্পষ্ট যে, মস্কো কেবল নিজেদের স্বার্থ সুরক্ষিত হলে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা সম্ভব হলেই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে। সূত্র: মেহের নিউজ