টাইব্রেকারে লিভারপুলকে কাঁদিয়ে কোয়ার্টারে পিএসজি

আনফিল্ডে ফুটবল ভক্তদের নাটকীয় এক রাতই উপহার দিল লিভারপুল-পিএসজি। আর সেই রাত শেষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে গেল লিভারপুল। দ্বিতীয় লেগে ১-০ ব্যবধানে হারার পর ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে, যেখানে পিএসজি গোলকিপার ডোনারুম্মার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ৪-১ ব্যবধানে জয় তুলে নেয়। লুইস এনরিকের শিষ্যরা প্রথম লেগের ১-০ গোলের ঘাটতি পুষিয়ে কোয়ার্টার-ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে, আর ঘরের মাঠ থেকে বিদায় নিশ্চিত হয় অলরেডদের। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ডে প্রথম লেগে এগিয়ে থাকাকে কাজে লাগিয়ে ম্যাচ শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল লিভারপুল। তবে মাত্র ১২ মিনিটের মাথায় রক্ষণভাগের এক বড় ভুলের খেসারত দিতে হয় ইংলিশ ক্লাবটিকে। ব্র্যাডলি বারকোলার ক্রস ঠেকাতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝির শিকার হন লিভারপুলের গোলরক্ষক অ্যালিসন ও ডিফেন্ডার ইব্রাহিমা কোনাতে। কোনাতে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে অ্যালিসনের নাগালের বাইরে পাঠিয়ে দেন, আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ডেম্বেলে প্রায় গোললাইনের কাছ থেকে বল জালে জড়ান। পিএসজি ব্যবধান বাড়ানোর আরও কয়েকটি সুযোগ পেয়েছিল, তবে লিভারপুলের ব্রাজিলিয়ান গোলকিপার অ্যালিসন ডেম্বেলে এবং খভিচা কভারাতস্কেলিয়াকে ঠেকিয়ে দেন। প্রথমার্ধ ১-০ ব্যবধানেই শেষ হয়। টাইব্রেকারে লিভারপুলকে কাঁদিয়ে কোয়ার্টারে পিএসজি সবার আগে কোয়ার্টারে বার্সেলোনা বিরতির পর লিভারপুল আক্রমণের গতি বাড়ালেও পিএসজির শক্তিশালী রক্ষণ দেয়ালে বারবার আটকে যায়। দোন্নারুম্মার এক অসাধারণ সেভে গোলবঞ্চিত হন লুইস দিয়াজ, বদলি খেলোয়াড় জারেল কুয়ানসার শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে, আর ডমিনিক সোবোসলাইয়ের গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়নি। তবে এখানে পিএসজি ছিল স্পষ্টতই এগিয়ে। ডেম্বেলের এক প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেন অ্যালিসন, তবে লিভারপুলের ক্লান্ত অবস্থা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। জয়ের নায়ককে ঘিরে পিএসজি খেলোয়াড়ের উল্লাস। সেখানেই নায়ক হয়ে ওঠেন দোন্নারুম্মা। লিভারপুলের হয়ে একমাত্র স্পট-কিক থেকে গোল করতে পারেন মোহামেদ সালাহ। তবে ডারউইন নুনেস ও কার্টিস জোন্সের শট ঠেকিয়ে দেন ইতালিয়ান গোলরক্ষক। অপরদিকে, পিএসজির হয়ে ভিটিনহা, গঞ্জালো রামোস, ওসমান ডেম্বেলে ও দেজিরে দোয়ে সফল স্পট-কিক নেন। দোয়ের শটে জয় নিশ্চিত হয় পিএসজির। টাইব্রেকারের পর হতাশ লিভারপুল খেলোয়াড়রা মাঠেই মাটিতে বসে পড়েন। এই মৌসুমে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা আর্নে স্লটের দল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের স্বপ্ন দেখছিল, কিন্তু শেষ ১৬ থেকেই তাদের বিদায় নিতে হলো। পেনাল্টি মিস করা নুনেজকে সান্তনা দিচ্ছেন স্লট। আনফিল্ডের বিদ্যুতায়িত পরিবেশ, সমর্থকদের গগনবিদারী চিৎকার—সবই ছিল, কিন্তু লিভারপুল পারল না তাদের নামের প্রতি সুবিচার করতে। প্রথম লেগে ভাগ্যের সহায়তা পেলেও ফিরতি লেগে তা পাশে পেল না ইংলিশ জায়ান্টরা।