আশুলিয়ায় স্ত্রীর সামনে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা

সাভারের আশুলিয়ায় নয়ারহাট বাজারে দোকান বন্ধের সময় স্ত্রীর সামনে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে ডাকাত দল। এরপর তারা ব্যাগভর্তি স্বর্ণ ও নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। রোববার রাতে নয়ারহাট বাজারের স্বর্ণপট্টির দীলিপ স্বর্ণালয়ের সামনে হামলায় নিহত দীলিপ কুমার দাস (৪৭) পাথালিয়া ইউনিয়নের গোপিনাথপুর দাসপাড়ার দুলাল দাসের ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে দীলিপ স্বর্ণের দোকান বন্ধ করে বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তার স্ত্রীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। দোকানের শাটার বন্ধ করে তালা দেওয়ার সময় একটি প্রাইভেটকারে চারজন এসে দীলিপকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। একই সঙ্গে দুষ্কৃতকারীরা দীলিপের হাতে থাকা স্বর্ণের ব্যাগ কেড়ে নেয় এবং কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। নিহতের ফুফাতো ভাই খোকন সরকার বলেন, ‘সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দোকান বন্ধ করে দীলিপ বাসায় চলে গিয়েছিলেন। পরে ওষুধ কেনার জন্য স্ত্রীকে নিয়ে আবার বাজারে আসেন। এ সময় পরিচিত একজনের কাছে দোকান থেকে স্বর্ণের চেইন বিক্রি করেন। পরে দীলপ দাস দোকান বন্ধ করে ব্যাগে করে টাকা ও প্রায় ২০ ভরি স্বর্ণ নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। কিন্তু দোকানের সামনেই পেছন থেকে ডাকাত দলের সদস্যরা ব্যাগ ধরে টান দেয়। তখন দীলিপ পেছনে ঘুরে তাকালে চাপাতি দিয়ে মুখে, বুকেসহ বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে স্বর্ণের ব্যাগ নিয়ে প্রাইভেটকারে করে পালিয়ে যায়।’ তিনি বলেন, ‘যাওয়ার সময় ডাকাতরা কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বাজারে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।’ নিহতের স্ত্রী সরস্বতী জানান, ‘আশুলিয়ার নয়ারহাট বাজারের স্বর্ণপট্টিতে আমার স্বামীর ‘দীলিপ স্বর্ণালয়ের নামে একটি স্বর্ণের দোকান রয়েছে। বাসা থেকে দোকানের দূরত্ব এক কিলোমিটারের মতো। রাতে তিনি দোকান বন্ধ করে বাসায় ফেরার উদ্দেশে টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে রওনা হন। আমিও সঙ্গে ছিলাম। তখন তিনি হামলার শিকার হন। কয়েকজন ডাকাত তাকে কপিয়ে ব্যাগে থাকা টাকা স্বর্ণ সব নিয়ে পালিয়ে গেছে। পরে আহত অবস্থায় তাকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়।’ এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মেরাজুল রায়হান পাভেল জানান, ‘রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে ব্যবসায়ী দীলিপকে হাসপাতালে আনা হয়। তখন তিনি অজ্ঞান অবস্থায় ছিলেন; তবে শ্বাস চলছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার ২ থেকে ৩ মিনিটের মধ্যে তিনি মারা যান।’ তিনি বলেন, ‘অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে দীলিপের মৃত্যু হয়েছে। চাপাতির কোপে তার ফুসফুস মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মুখ ও পিঠেও গভীর ক্ষত ছিল।’ আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। সেখানে সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায় দীলিপ দোকান বন্ধ করার সময় সাদা প্রাইভেটকারে আসা চারজন তাকে এলোপাতাড়ি কোপায় এবং তার স্বর্ণের ব্যাগ লুট করে। এ ঘটনায় তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।