সাধারণের নাগালে নেই ফল, রমজান ঘিরে শঙ্কা

বিলাসী পণ্য বিবেচনায় গত এক বছরে আপেল, আঙুরের মতো ফলে তিন দফায় বেড়েছে আমদানি শুল্ক। দাম সাধারণের নাগালের বাইরে যাওয়ায় কমেছে বিক্রি। এ পরিস্থিতিতে রমজানের বাজার নিয়ে শঙ্কায় বিদেশি ফল ব্যবসায়ীরা। এদিকে শুল্ক কমানোর দাবিতে ফল আমদানি বন্ধের ঘোষণা দিলেও তা স্থগিত করেছেন আমদানিকারকরা। বছরজুড়ে বিক্রি হলেও রোজায় চাহিদা বাড়ে দেশি-বিদেশি ফলের। বর্তমানে দেশি ফলের মৌসুম না থাকায় আপেল, কমলা, আঙুরসহ বিদেশি ফলের চাহিদা বাড়তি। কিন্তু আমদানিতে দফায় দফায় সম্পূরক শুল্ক বাড়ায় এসব ফল চলে যাচ্ছে সাধারণের নাগালের বাইরে। একজন ক্রেতা বলেন, ‘রমজানে দাম কমা উচিত, নাহলে তো আমাদের সাধ্যের বাহিরে চলে যাবে।’ বিক্রেতারা বলছেন, আমদানি ব্যয় বাড়ায় গত এক মাসে বিভিন্ন বিদেশি ফলের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। আপেল, আঙুর ও আনারের দাম প্রায় ৪০০ টাকা ছুঁয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রোজায় ফল কেনা কমাবেন ভোক্তারা, শঙ্কা ব্যবসায়ীদের। রাজধানীর এক বিক্রেতা বলেন, ‘পাইকারি থেকে কেনার পর ১০ টাকা ২০ টাকা লাভে বিক্রি করি। ওইদিকে দাম বাড়লে আমাদেরও দাম বেশি রাখতে হয়। এখন মানুষ ফল অনেক কম নিচ্ছে। সরকার যদি ট্যাক্সটা কমায় দেয় তাহলে ফল বিক্রি করে চলতে পারব।’ ফল আমদানিকারকদের সংগঠনের দাবি, বাজারে বিক্রি হওয়া ফলের ৬৫ শতাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করা। ২০২১-২২ অর্থবছরে আপেল, কমলা, আঙুর, নাশপাতির মতো ফল আমদানিতে শুল্ক ছিল ৮৯ দশমিক ৩২ শতাংশ। তিন বছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৬ দশমিক ২০ শতাংশে। অতিরিক্ত শুল্ক ও লোকসানের শঙ্কায় ফল আমদানিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ফল এখন সাধারণ মানুষ কিনতে পারছে না। আমরা যদি ১০০ টাকার ফল ইমপোর্ট করি, সেটাতে কিন্তু আমার রাজস্ব দিতে হচ্ছে, ট্যাক্স দিতে হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। কাজেই ফল মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে গেছে। আমাদের বেচা কেনাও কমে গেছে।’ চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্যমতে, বিশ্বের ২২টি দেশ থেকে ৩৮ ধরনের ফল আমদানি করে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ৯৫ শতাংশই আপেল, মাল্টা, কমলা, আঙুর ও আনার।