মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ৩ জিম্মি সম্পর্কে যা জানালো ইসরাইলি মিডিয়া

১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১০:২২ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় চলমান বন্দি বিনিময়ের ষষ্ঠ ধাপে আরও তিন ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দেবে হামাস ও পিআইজে। শনিবার মুক্তি পেতে যাওয়া এই তিন জিম্মির নামও ঘোষণা দিয়েছে শুক্রবার। তারা হলেন- আলেকজান্ডার (সাশা) টারবানভ, সাগুই ডেকেল-চেন এবং ইয়াইর হর্ন। এই তিন ইসরাইলিকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর চালানো অভিযানের সময় কিবুত্জ নির ওজ থেকে অপহরণ করেছিল হামাস। ওই হামলায় কিবুত্জের প্রতি চারজন বাসিন্দার মধ্যে একজন হয় নিহত হন অথবা অপহৃত হন বলে দাবি করেছে ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম। শুক্রবার টাইমস অব ইসরাইলের এক প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়। সেই সঙ্গে শনিবার মুক্তি পেতে যাওয়া তিন ইসরাইলির বিষয়ে বিস্তারতি তথ্যও তুলে ধরেছে সংবাদমাধ্যমটি। সাগুই ডেকেল-চেন হামাসের হাতে বন্দি সাগুই ডেকেল-চেন একজন ইসরাইলি-আমেরিকান দ্বৈত নাগরিক।হামাসের নেতৃত্বে সশস্ত্র যোদ্ধারা সেদিন যখন কিবুত্জে প্রবেশ করছিল, তখন এই সাগুই-ই প্রথম ব্যক্তি ছিলেন যিনি সতর্কতা সংকেত দেন। তার বাবা জোনাথন ডেকেল-চেনের (কানেকটিকাটে জন্ম নেওয়া হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক) মতে, ওইদিন সকাল সাড়ে ৯টায় তার সঙ্গে সর্বশেষ যোগাযোগ করেছিল তার পরিবার। সাগুই-এর মা নেওমিত ডেকেল-চেনকেও তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে একটি বৈদ্যুতিক গাড়িতে করে গাজার দিকে নেওয়া হচ্ছিল। তখনই ইসরাইলি বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার হামাস যোদ্ধাদের ওপর গুলি চালায়। এতে নেওমিত আহত হলেও কোনোরকমে কিবুত্জে ফিরে যেতে সক্ষম হন এবং তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ ঘটনার দুই মাস পর, ডিসেম্বরে সাগুইয়ের স্ত্রী আবিতাল তাদের তৃতীয় কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। যাকে তিনি শনিবার প্রথমবারের মতো দেখবেন। সাশা টারবানভ সাশা টারবানভ একজন রুশ-ইসরাইলি দ্বৈত নাগরিক।তার বাবা ভিতালি টারবানভ হামাসের হামলায় নিহত হন।সাশাকে তার দাদি ইরেনা তাতি, মা ইয়েলেনা (লেনা) এবং বান্ধবী সাপির কোহেনের সঙ্গেই অপহরণ করা হয়েছিল। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অনুরোধে ২০২৩ সালের ২৯ নভেম্বর ইরেনা ও ইয়েলেনাকে মুক্তি দেয় হামাস।একদিন পর ৩০ নভেম্বর সাপির কোহেনকেও মুক্তি দেওয়া হয় সপ্তাহব্যাপী এক যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে। ইয়াইর হর্ন হামাসের হাতে জিম্মি ইয়াইর হর্ন একজন ইসরাইলি-আর্জেন্টাইন দ্বৈত নাগরিক।তার ভাই এইতান হর্নকেও অপহরণ করা হয়েছিল সেদিন এবং তিনি এখনো হামাসের হাতে বন্দি।এমনকি বর্তমান বন্দি বিনিময় চুক্তির প্রথম ধাপে মুক্তি পেতে যাওয়া ৩৩ জনের তালিকাতেও নেই এইতানের নাম। এদিকে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় হামাস এ পর্যন্ত ইসরাইলি কারাগারে বন্দি শত শত ফিলিস্তিনির মুক্তির বিনিময়ে ধারাবাহিকভাবে ২১ বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি শুরুর পর মূলত ১৬ জন ইসরাইলি ও পাঁচজন থাই বন্দি মুক্তি পেয়েছে। বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগার থেকে ৫৬৬ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে তিন সপ্তাহে মোট ৩৩ জন ইসরাইলি ও ১৯০০ ফিলিস্তিনি বন্দি বিনিময় হওয়ার কথা রয়েছে। ইসরাইল জানিয়েছে, ৩৩ জনের মধ্যে ৮ জন আর জীবিত নেই। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরাইলে নজিরবিহীন হামলার সময় হামাস মোট ২৫১ জনকে আটক করেছিল। জবাবে ইসরাইল গাজা ভূখণ্ডে ব্যাপক আগ্রাসন চালায় এবং এতে ৪৮ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়াও গাজার বিশাল অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।