চীনের তৈরি জে-১০সিই সিরিজের মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান হাতে পেয়েছে মিশর

১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১০:২৯ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতার এবং যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই এবার প্রথম ব্যাচে কয়েকটি চীনের তৈরি চতুর্থ প্রজন্মের মাল্টিরোল জে-১০সিই অ্যাডভান্স যুদ্ধবিমান হাতে পেয়েছে মিশরের বিমান বাহিনী। মূলত আমেরিকার এবং তার নিয়ন্ত্রিত পশ্চিমা বিশ্বের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাস করতেই মিশরের আবদেল ফাত্তা আল সিসি সরকার চীনের কাছ থেকে বড় ধরনের সামরিক সাজ-সরঞ্জাম কেনার পথে হাঁটছে। যার আওতায় গত ২০২৪ সালের আগস্ট মাসেই চীনের কাছ থেকে আনুমানিক ২৪টি থেকে ৩৬টি জে-১০সিই সিরিজের সিঙ্গেল ইঞ্জিনের যুদ্ধবিমান ক্রয়ের চূড়ান্ত চুক্তি সম্পন্ন করে মিশর। আর নতুন সরবরাহ করা জে-১০সিই যুদ্ধবিমান ক্রয়ের চুক্তিমূল্য কত হতে পারে তা নিয়ে চীন কিংবা মিশরের তরফে কোন ধরনের তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে মনে করা হচ্ছে মিশর তার বিমান বাহিনীর আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে এই যুদ্ধবিমান ক্রয়ের জন্য আনুমানিক ২ বিলিয়ন ডলার বা তার কাছাকাছি পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে পারে। তবে মিশর কিন্তু এবার তার নিজস্ব চাহিদামাফিক নতুন যুদ্ধবিমানের জন্য অজানা সংখ্যক চীনের তৈরি লং রেঞ্জের পিএল-১৫ই এয়ার টু এয়ার (বিভিআর) মিসাইল সংগ্রহের বিষয়টি সবার আগেই নিশ্চিত করেছে। বিশেষ করে খুব সম্ভবত লং রেঞ্জের পিএল-১৫ এয়ার টু এয়ার মিসাইলের এক্সপোর্ট ভার্সন ১৪৫ কিলোমিটার রেঞ্জের পিএল-১৫ই সিরিজের এয়ার টু এয়ার (বিয়োন্ড ভিজুয়্যাল রেঞ্জ) মিসাইলের সরবরাহ হাতে পেয়েছে মিশর। বর্তমানে সারা বিশ্বের মধ্যে বিয়োন্ড ভিজুয়্যাল রেঞ্জ (বিভিআর) মিসাইল ডিজাইন ও ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রতিযোগিতায় আমেরিকার তৈরি ১৬২ কিলোমিটার রেঞ্জের এআইএম-১২০সি-৭/৮ এয়ার টু এয়ার মিসাইলের পাশাপাশি ১১০ কিলোমিটার থেকে ২০০ কিলোমিটার রেঞ্জের ফ্রান্সের মেটওর, রাশিয়ার আর-৭৭ এবং চীনের পিএল-১৫ সিরিজের (বিভিআর) এয়ার টু এয়ার মিসাইল সার্ভিসে এসেছে। তবে চীনের মিডিয়ায় পিএল-১৫ এয়ার টু এয়ার মিসাইলের রেঞ্জ ৩০০ কিলোমিটারের অধিক বলা হলেও পিএল-১৫ই সিরিজের এক্সপোর্ট ভার্সন (বিভিআর) মিসাইলের রেঞ্জ ১৪৫ কিলোমিটার দেখানো হয়েছে। গত ২০২২ সালের দিকে মিশর তার বিমান বাহিনীর অতি পুরোনো ২১৮টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান আধুনিকায়নের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে আমেরিকার প্রশাসন কিন্তু ইসরাইলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যেতে পারে এমন প্রবল আশাঙ্খায় মিশরের বিমান বাহিনীর পুরোনো এফ-১৬ যুদ্ধবিমান আধুনিকায়ন ও তার পাশাপাশি উন্নত এভিয়নিক্স সিস্টেম, রাডার, অস্ত্র ও লং রেঞ্জের এআইএম-১২০ (বিভিআর) এয়ার টু এয়ার মিসাইল সরবরাহে চরম অনীহা প্রকাশ করতে থাকে। যার ফলে মিশর এবার তার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় পুরোনো এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পর্যায়ক্রমে অবসরে পাঠিয়ে তার স্থলে পর্যায়ক্রমে অজানা সংখ্যক ব্রান্ড নিউ মাল্টিরোল জে-১০সিই সিরিজের যুদ্ধবিমান ক্রয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্তমানে মিশরের বিমান বাহিনীর প্রথম সারির এয়ার ফ্রন্ট লাইন জেট ফাইটার হিসেবে অতি পুরোনো এফ-১৬ যুদ্ধবিমান রয়েছে মোট ২১৮টি। পাশাপাশি তাদের বিমান বহরে হাইলি অ্যাডভান্স রাফালে রয়েছে ২৪টি এবং দেশটি নতুন করে ৪.৮ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে আরও ৩০টি রাফালে (এফ-৪) সিরিজের যুদ্ধবিমান ক্রয়ের চুক্তি সম্পন্ন করে রেখেছে। তাছাড়া তাদের এয়ার ফ্লিটে মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান রয়েছে ৪৩টি, মিরেজ-২০০০ যুদ্ধবিমান রয়েছে ১৯টি, অতি পুরোনো মিরেজ-৫ রয়েছে ৮১টি এবং লাইট গ্রাউন্ড অ্যাটাক আলফা জেট রয়েছে ১৮টি। যা সংখ্যার দিক দিয়ে মিশরকে এগিয়ে রাখলেও বাস্তবে এয়ার কমব্যাট ফ্লিট এবং প্রযুক্তিগত সক্ষমতার এক হতাশার চিত্র ফুটে উঠেছে। তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া, বুলগেরিয়ান মিলিটারি, ইউরেশিয়ান টাইমস।