সত্য বলার সাহসিকতাই সাংবাদিকতার মূলমন্ত্র: কাদের গনি চৌধুরী
![](https://usbangla24.news/wp-content/uploads/2025/02/kader-gani-67a62199f1f2b-300x169.jpg)
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী বলেছেন, সত্য বলার সাহসিকতাই সাংবাদিকতার মূলমন্ত্র। গণমাধ্যমের জন্য দরকার সৎ, সত্যনিষ্ঠ, পক্ষপাতমুক্ত সাংবাদিকতা। বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশে এসবের বড্ড অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। তিনি বলেন, গণমাধ্যমের পরাজয় মানে জনগণের পরাজয়। আর জনগণের পরাজয় মানে রাষ্ট্রের পরাজয়। তাই গণমাধ্যমকে পরাজিত হতে দেওয়া যাবে না। শুক্রবার বিকালে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। কাকরাইলের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। নিরাপদ নিউজের প্রধান সম্পাদক চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, লিটন এরশাদ, গনি মিয়া বাবুল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। কাদের গণি চৌধুরী বলেন, সত্য বলার সাহসিকতাই সাংবাদিকতার মূলমন্ত্র। সৎ সাংবাদিকতা সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করে। সৎ সাংবাদিকতা সত্যের আরাধনা করে। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা সমাজকে এগিয়ে নেয়, গণতন্ত্রকে বিকশিত করে। তাই সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সাংবাদিকতা করতে হবে। সততা না থাকলে সাংবাদিকতা থাকে না। সাংবাদিকের কলমের শক্তিকে ইতিবাচক কাজে ব্যবহার না করলে জাতির সর্বনাশ ঘটে। তাই বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে কোনো অজুহাত নয়। গণমানুষের মনের কথা পত্রিকার পাতায় পাতায় তুলে ধরতে হবে। তিনি বলেন, জনগণ দাস সাংবাদিকতাকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করে। তাদের আত্মসমর্পণকে ঘৃণা করে। তাই অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সম্পাদক-সাংবাদিকদের নির্ভীক, নির্লোভ ভূমিকা পালন করতে হবে। একজন সাংবাদিকের কাজ সমাজের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা। সে জন্য গণমাধ্যমকে সমাজের দর্পণ বলা হয়। এই দর্পণে প্রতিবিম্বিত হয় সমাজের প্রতিচিত্র। এই সাংবাদিক নেতা বলেন, কারও চোখ রাঙানোকে তোয়াক্কা না করে নির্ভীক ও নিরলসভাবে কাজ করতে হয়। প্রচলিত সমাজব্যবস্থার চিত্র প্রত্যক্ষ করতে হয়। মানুষের সমস্যার কথা তুলে ধরার দায়িত্ব পালন করতে হয়। অনেক বাধা বিপত্তির মধ্যে সাংবাদিকদের দিন যায়। ক্ষমতাধরদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হয়। শহিদুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকতা হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা ও মানবিক চেতনা বিকাশের কেন্দ্র এবং নীতি-নৈতিকতা, দায়-দায়িত্ব ও বুদ্ধি-বিবেকের আধার। তাই সৃজনশীল গণমাধ্যম ও সম্মানজনক পেশা হিসেবে সংবাদপত্র অগ্রগণ্য। তবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এবং সাহসী, সংবেদনশীল ও নির্মোহ, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ, সত্যনিষ্ঠ ও গণসম্পৃক্ত সার্বক্ষণিক পেশা সাংবাদিকতা। সংবাদপত্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো দলনিরপেক্ষ, সত্যনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা। সংবাদপত্র যত বেশি নিরপেক্ষ হবে এবং সাংবাদিকরা যত বেশি নির্ভীক ও সৎ হবে দেশ ও জাতির তত বেশি মঙ্গল হবে। আর সেজন্যই তো সাংবাদিকদের সমাজের অতন্দ্র প্রহরী বা ‘গেট কিপারস’ বলা হয়। আবু সালেহ আকন বলেন, সংবাদমাধ্যমের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সৎ, সত্যনিষ্ঠ, পক্ষপাতমুক্ত সাংবাদিকতা। সংবাদপত্রকে প্রমাণ করতে হবে কারও প্রতি পক্ষপাত নেই, কারও বিরুদ্ধে বা কারও পক্ষে কোনো এজেন্ডা নেই। সেটা সম্ভব হলেই সর্বস্তরের পাঠক সেই পত্রিকাকে গ্রহণ করবেন। গণমাধ্যমকে সব সময় মনে রাখতে হবে, সেই অন্যকে সুন্দর ও সঠিক পথে প্রভাবিত করবে। কিন্তু নিজে কখনো ইচ্ছার বিরুদ্ধে অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হবে না। অন্যায়-অসত্যের কাছে নতি স্বীকার করবে না। খুরশীদ আলম বলেন, অধিকাংশ গণমাধ্যম গত ১৭ বছর ফ্যাসিবাদের তাঁবেদারি করেছে। যাচাই না করে মনগড়া রিপোর্ট এখনো লেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, গণমাধ্যমের সঙ্গে ক্ষমতাবানের স্বার্থ ও দ্বন্দ্ব থাকে। কিন্তু সেটাকে অতিক্রম করে সংবাদপত্রকে পাঠকের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে হয়। অনুপ্রেরণা জোগাতে হয়। তাই বিরুদ্ধ পরিবেশেও সংবাদপত্রকে শক্ত হয়ে জনতার পক্ষে দাঁড়াতে হয়। জনমত গড়তে হয়। রাষ্ট্র বা সরকার জনমতের কাছে নত হয়। তাই জনতার স্বার্থে সংবাদপত্র ও সাংবাদিককে এগোতে হয় অবিরাম, অবিরত। মাইনুল হাসান সোহেল বলেন, গণমাধ্যমের সংস্কার খুবই জরুরি। দেশে প্রচুর পত্রিকা রয়েছে ক'টা গণমাধ্যম হতে পেরেছে?