ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির কড়াকড়ি: ৯ দিনে ৭,৪০০ গ্রেফতার
যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু হয়েছে। ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) গত ৯ দিনে ৭,৪০০-এর বেশি অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করেছে, যা কয়েকটি রাজ্যে ব্যাপক অভিযান চালিয়ে বাস্তবায়িত হয়েছে। আইসিই কর্মকর্তারা নিউইয়র্ক, শিকাগো, বোস্টনসহ বিভিন্ন সাংকটারি শহরে (যেসব শহর অবৈধ অভিবাসীদের আশ্রয় দেয়) অভিযান চালিয়েছে। যৌন অপরাধ, ধর্ষণ, অস্ত্র এবং মাদক পাচার-এর অভিযোগে অভিযুক্তদের পাশাপাশি ট্রেন দে আরাগুয়া ও এমএস-১৩-এর মতো সহিংস অপরাধী গ্যাং সদস্যদেরও গ্রেফতার করা হয়েছে। ট্রাম্পের পরিকল্পনা: গুয়ান্তানামো বে-তে অভিবাসীদের আটক কেন্দ্র ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে যে, সবচেয়ে সহিংস অপরাধীদের গুয়ান্তানামো বে-তে পাঠানো হবে। প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ জানিয়েছেন, ৩০,০০০ অভিবাসী রাখার জন্য গুয়ান্তানামো বে প্রস্তুত করা হচ্ছে এবং মার্কিন সামরিক বাহিনী মাদক কার্টেল দমনে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে। অভিযান ও নিরাপত্তা হুমকি হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সচিব ক্রিস্টি নোম বলেছেন, এই অভিযানের লক্ষ্য ভয়ংকর অপরাধীদের গ্রেফতার করা। তিনি দাবি করেছেন, এই অভিযানের ফলে মার্কিন রাস্তাগুলো আগের চেয়ে নিরাপদ হচ্ছে। নিউইয়র্কে মঙ্গলবার সকালে চালানো এক অভিযানে আইসিএ কর্মকর্তারা ২৬ বছর বয়সি অ্যান্ডারসন জামব্রানো-পাচেকোকে গ্রেফতার করেছে। তিনি ট্রেন দে আরাগুয়া গ্যাং-এর মূল হোতা, যাকে গত গ্রীষ্মে কলোরাডোর অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে অস্ত্রধারী হামলার ঘটনায় জড়িত বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এছাড়া গুয়াতেমালার ১৯ বছর বয়সি লুইস আদলফো গুয়েরা পেরেজকে ম্যাসাচুসেটসে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে এমএস-১৩ গ্যাং-এর সদস্য এবং আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগ ছিল। এর আগে পেরেজকে বোস্টন আদালত মুক্তি দিয়েছিল, যদিও তার বিরুদ্ধে নিষ্কাশন (ডিপোর্টেশন) আদেশ ছিল। গুয়ান্তানামো বে-তে পাঠানোর পরিকল্পনা ও ট্রাম্পের নির্দেশ বুধবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন, গুয়ান্তানামো বে-তে ৩০,০০০ অপরাধী অভিবাসীর জন্য একটি বিশেষ আটক কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আজ আমি প্রতিরক্ষা ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগকে নির্দেশ দিচ্ছি গুয়ান্তানামো বে-তে একটি ৩০,০০০ ধারণক্ষমতার অভিবাসী কেন্দ্র তৈরির জন্য। বেশিরভাগ মানুষ এটির ব্যাপারে জানেই না। পরে জানা যায়, তিনি এক্সিকিউটিভ অর্ডার নয়, বরং প্রেসিডেনশিয়াল মেমোরেন্ডাম স্বাক্ষর করেছেন। জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া এই ব্যাপক অভিযানকে অনেক মার্কিন নাগরিক স্বাগত জানিয়েছে, বিশেষত সেই শহরগুলোর অধিবাসীরা, যেখানে অভিবাসীদের কারণে অপরাধের হার বেড়েছে। তবে অভিবাসনপন্থি সংগঠনগুলো এই কঠোর নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন নীতি আরও কঠোর করার যে পরিকল্পনা নিয়েছে, তা যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে, যা আগামীর রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।