বহিষ্কার হতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রে আটক বাংলাদেশি মনির
যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অবস্থানকারী এক বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করেছে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। নাবালিকাদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগে প্রয়োগ এবং অপসারণ অপারেশন (ইআরও)-এ সম্প্রতি কানেকটিকাট পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। বোস্টনের আওতাধীন কানেকটিকাটের হার্টফোর্ড অফিসের নির্বাসন কর্মকর্তারা অপারেশনে সহযোগিতা করেন। মনির উদ্দিন (৪৭) নামের এ বাংলাদেশিকে গত বছর ২২ এপ্রিল কানেকটিকাটের লিচফিল্ড থেকে গ্রেফতার করা হয়। ট্রাম্পের বর্তমান অভিবাসন দমন অভিযানের আওতায় তিনি বহিস্কারের মুখোমুখি হতে পারেন বলে ধারণা করেছেন স্থানীয় প্রবাসীরা। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক এবং সীমান্ত সুরক্ষা (সিবিপি) কর্মকর্তারা ২০১৭ সালের ১২ অক্টোবর মনির উদ্দিন যুক্তরাষ্ট্রে অস্থায়ী ট্রানজিট ভিসায় পরিবহন কাজের উদ্দেশ্যে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছিল। তবে তিনি ৯ নভেম্বর ২০১৭ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রে থেকে ওই ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করেন। কানেকটিকাটের প্রবাসী বাংলাদেশি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, খুব স্বল্প সময়ে তিনি মারাত্মক অপরাধ করেছেন। বর্তমান পরিস্থিতে তার মুক্ত হবার কোন সুযোগ নেই। ট্রাম্পের বর্তমান অভিবাসন দমন অভিযানের অবৈধ অভিবাসীদের চেয়ে অপরাধীদেরকেই বেশি গ্রেফতার করছেন। এ অবস্থায় তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিস্কার করা হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। কানেকটিকাট স্টেট পুলিশ ২ এপ্রিল তাকে গ্রেফতার করে নাবালিকাদের সাথে যৌন নির্যাতন, অবৈধ যৌন যোগাযোগ, চতুর্থ ডিগ্রির যৌন নির্যাতন, শিশুর প্রতি ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ এবং ২১ বছরের কম বয়সীদের কাছে অবৈধভাবে তামাকজাত পণ্য বিক্রির একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত করে। আটক মনির কানেকটিকাটের লিচফিল্ড সিটগো গ্যাস স্টেশন/কনভিনিয়েন্স স্টোরের দোকান কর্মী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তাকে অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে আটক করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি একজন বাংলাদেশি নাগরিক বলে উল্লেখ করেছেন কেন্দ্রীয় অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ দফতরের মুখপাত্র জন মোহন। মনির লিচফিল্ড সিটগো গ্যাস স্টেশন/কনভিনিয়েন্স স্টোরে কাজ করাকালীন সময় গত জানুয়ারি মাসে তিনজন ১৪ বছর বয়সী মেয়েকে ভিন্ন ভিন্ন সময় চুমু দিয়েছেন, আলিঙ্গন করেছেন এবং তাদেরকে দোকানে আটকে রেখেছেন। রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, নিউ ইয়র্ক সিটির বাসিন্দা উদ্দিনের বিরুদ্ধে শিশুর যৌন নির্যাতন, অবৈধ যৌন সম্পর্ক, শিশুকে আহত করার ঝুঁকি, দ্বিতীয় ডিগ্রি অবৈধ শ্বাসরোধ এবং চতুর্থ ডিগ্রি যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রয়োগ এবং অপসারণ অপারেশন (ইআরও)-এর পরিচালক টড এম. লায়নস বলেন, অবৈধভাবে বসবাসকারী এই ব্যক্তি আমাদের কানেকটিকাট সম্প্রদায়কে শিশুদের যৌন নির্যাতন করে ক্ষতি করেছে। ইআরও বোস্টন শাখা আমাদের স্থানীয় সঙ্গীদের সঙ্গে কাজ করতে থাকবে। যাতে আমাদের নিউ ইংল্যান্ড সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। গত বছর ২০ এপ্রিল ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কানেকটিকাট ডিপার্টমেন্ট অফ করেকশনসের নিউ হেভেন করেকশনাল সেন্টারে তার হেফাজতে থাকার জন্য একটি ইমিগ্রেশন ডিটেইনার জারি করে। এরপর ২২ এপ্রিল তাকে পুনরায় গ্রেফতার করা হয় এবং বিচার বিভাগ (ডিওজে)-এর ইমিগ্রেশন বিচারকের সামনে পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত তিনি আইসিই হেফাজতেই থাকবেন।