লাভের আশায় অ্যাপসে ১৩ লাখ টাকা বিনিয়োগ, অতঃপর…

২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:১৯ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

অ্যাপসের মাধ্যমে বিনিয়োগ ও অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে লাখ টাকা আত্মসাৎ চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা হলেন- পাপ্পু কুমার সেন (২৮) ও মো. কাওসার (২৭)। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ডেমরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১ হাজার ১৫০টি সিম কার্ড, ১টি হার্ডডিস্ক, মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য আলামত জব্দ করা হয়। সিআইডির সদর দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। সিআইডি জানায়, ভুক্তভোগী ফেসবুক আইডি ব্যবহারকালে আন্তর্জাতিক স্টক মার্কেটের একটি বিজ্ঞাপন দেখতে পেয়ে সেই লিংকে প্রবেশ করেন। এরপর অজ্ঞাত একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে তার ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কিছু মেসেজ পাঠায় এবং টাস্ক দেয়। পরে হোয়াটসঅ্যাপে একটি অ্যাকাউন্ট খোলার নির্দেশনা আসে। ভুক্তভোগী নির্দেশমতো তাদের অ্যাপসের লিংকে প্রবেশ করে তার নাম, এনআইডি, মোবাইল নম্বর দিয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে। ওই অ্যাপসে তার একটি ডিজিটাল ওয়ালেট তৈরি হয়। আসামিরা বাদীকে তাদের দুটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত করে নেয়। ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বাদীর পরিচিত অনেকেই যুক্ত ছিল এবং সেখানে ট্রেডিং বিষয়ে কথাবার্তা হতো। গ্রুপগুলোতে বিভিন্ন নাম ও মোবাইল নম্বর দেখা যায়। আসামিদের কথায় বিশ্বাস করে অধিক লাভের আশায় ভিকটিম বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সর্বমোট ১৩ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৬ টাকা বিনিয়োগ করেন। ওই অ্যাপসে আসামিদের কথামতো ট্রেড করার পর ডিজিটাল ওয়ালেটে তার টাকা বাড়তে থাকে এবং একপর্যায়ে লাভসহ প্রায় ৬৪ লাখ ৫ হাজার ২৮৭ টাকা প্রদর্শিত হয়। আসামিরা ভিকটিমের নিজ নামের সিটি ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখায় ৫ হাজার টাকা ডিপোজিট করে। পরে আসামিদের কাছে তার বিনিয়োগের টাকা ফেরত চাইলে তারা টাকা না দিয়ে আরও টাকা বিনিয়োগ করতে বলে। একপর্যায়ে তিনি প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে বুধবার ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন। সিআইডি সূত্রে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন জায়গা থেকে কোনো রকম ছবি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং এনআইডি কার্ড ছাড়া বেশি টাকা দিয়ে অবৈধভাবে মোবাইল সিমকার্ড সংগ্রহ করে। এই সিমকার্ডগুলো তারা বিভিন্ন টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপসহ অন্যান্য মাধ্যমে দেশি-বিদেশি ক্লায়েন্টদের কাছে শুধুমাত্র মোবাইল নম্বরগুলো উচ্চমূল্যে বিক্রি করে থাকেন। দেশি-বিদেশি ব্যক্তিরা অবৈধ মোবাইল নম্বর দিয়ে টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে বিভিন্ন ব্যক্তিদের যুক্ত করে এবং তাদের অধিক মুনাফা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বিনিয়োগ করার জন্য অফার দিতে থাকে। অনেকে অধিক মুনাফা লাভের আশায় তাদের দেওয়া ফাঁদে পড়ে এবং তাদের তৈরি অ্যাপসে নিজেদের নাম, মোবাইল নম্বর, এনআইডি কার্ডের তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলে সেখানে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে। পরে ভুক্তভোগীদের কোনো মুনাফা না দিয়ে কৌশলে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিয়ে অবৈধভাবে দেশের বাইরে পাচার করে।