মর্গে ঘুরে ঘুরে ছেলের লাশ খুঁজছেন বাবা

২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৬:৫৫ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

ভগ্ন হৃদয় ও অসহায় চোখে তাকিয়ে আছেন দক্ষিণ গাজার বাসিন্দা আবু মুহাম্মদ গাইথ। একরাশ নীরবতা ঘিরে ধরেছে তাকে। কাঁপা কাঁপা হাতে খুলে দেখছেন প্রতিটি কাফন। দিন-রাত ঘুরছেন হাসপাতালের মর্গে। মাঝে মাঝে দেখছেন অজ্ঞাত মৃতদেহের খণ্ডিত অংশ। কিন্তু কোথাও নিজের হারিয়ে যাওয়া ছেলের সন্ধান পাচ্ছেন না গাইথ। বিষাদ, ক্লান্তি এবং হতাশায় লুটিয়ে পড়ছেন অবরুদ্ধ অঞ্চলটির মাটিতে। যুদ্ধবিরতির পর এমন গল্প গাজার অসংখ্য পরিবারের। ইসরাইলের নৃশংস হামলায় নিহত হওয়া প্রিয়জনকে হারিয়ে অনেকের মনে শুধুই হাহাকার। বেঁচে থাকার ‘জীবন প্রদীপ’টিই যেন নিভে গেছে তাদের। আল-জাজিরা। নিজের ১৭ বছর বয়সি ছেলেকে হারিয়েছেন গাইথ। পাগলপ্রায় বাবা সন্তানের খোঁজে সবধরনের চেষ্টা চালাচ্ছেন। নিখোঁজের দিন তার ছেলে একটি কমলা সোয়েটার, একটি কালো জ্যাকেট, ট্র্যাকস্যুট প্যান্ট পরা ছিল। ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স উদ্ধার করা কয়েক ডজন লাশের মধ্যে সন্তানকে খুঁজতে মর্গে এসেছিলেন গাইথ। অশ্রুশিক্ত নয়নে গাইথ বলেন, ‘আমি তাকে খুঁজে পাচ্ছি না। কেউ কি একটি হলুদ সোলের কোনো স্যান্ডেল দেখেছেন? যদি দেখে থাকেন দয়া করে আমাকে জানান’। শুধুমাত্র গাইথই নয় স্বজনহারাদের সন্ধানে এসেছিলেন এমন আরও অনেকে। এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও অধিকৃত পশ্চিম তীরে নিজেদের হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে ইসরাইলি সেনারা। মঙ্গলবারের জেনিন শহরে চালানো অভিযানে নিহত হন অন্তত ১০ জন। এদিকে, রাফার ধ্বংসস্তূপের মাঝে মৃতদের দেহাবশেষ খুঁজে বেড়াচ্ছেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা। একজন বলেন, ‘গত কয়েকদিনে ১২০টি গলিত মৃতদেহ উদ্ধার করেছি আমরা। কঙ্কাল ছাড়া আর কোনো কিছুই অবশিষ্ট নেই।’ টানা ১৫ মাস ইসরাইলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় ধ্বংসের নগরীতে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা। জাতিসংঘের তথ্যমতে, গাজায় ঘরবাড়ি পুনর্গঠনেই ২০৪০ সাল বা এখন থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। আর এই মুহূর্তে ১৮ লাখ মানুষের জরুরি আশ্রয় প্রয়োজন। এদিকে যুদ্ধবিরতির পর পদত্যাগ করেছেন ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রধান বা চিফ অব দ্য জেনারেল স্টাফ হারজি হালেভি। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় বাহিনীর ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে সোমবার পদত্যাগ করেন তিনি। বুধবার ইসরাইলি সামরিক বাহিনী প্রকাশিত এক চিঠির বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, হারজি হালেভি তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। আগামী ৬ মার্চ থেকে তা কার্যকর হবে। হালেভি বলেছেন, যুদ্ধের সব লক্ষ্য অর্জিত হয়নি।