তারেক রহমানের পার্টনার ‘খাম্বা মামুন’ দুর্নীতি-অর্থপাচারের পর অস্ত্র মামলাতেও খালাস
অস্ত্র আইনের মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ড থেকে খালাস পেয়েছেন ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও গিয়াসউদ্দিন আল মামুন ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং অসংখ্য ব্যবসার পার্টনার। আলোচিত ‘খাম্বা লিমিটেড’-এর অন্যতম প্রধান হওয়ায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তারেক রহমানের মত গণমাধ্যমে মামুন-এর নামও ‘খাম্বা মামুন’ হিসেবে প্রচার পায়। কুখ্যাত ‘হাওয়া ভবন’ সিন্ডিকেটের অন্যতম প্রধান ছিলেন গিয়াসউদ্দিন আল মামুন। খাম্বা লিমিটেড ছাড়াও মেসার্স ওয়ান স্পিনিং মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ছিলেন মামুন। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দুর্নীতি, অর্থপাচারসহ গুরুতর আর্থিক অনিয়মের মামলা হয়েছিল তার বিরুদ্ধে। কিন্তু গত কয়েক মাসে তার প্রায় সব মামলাই খারিজ করা হয়েছে। এবার অস্ত্র মামলাতেও খালাস পেলেন তারেক রহমানের এই বন্ধু। বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে মামুনের আপিল মঞ্জুর করে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার তাকে খালাস দেয়। এ নিয়ে পাঁচ মামলার দণ্ডাদেশের মধ্যে অর্থ পাচারসহ চারটিতে গিয়াসউদ্দিন আল মামুন খালাস পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী। আদালতে গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ ও আইনজীবী শাহ মো. সাব্বির হামজা চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী। রায়ের পর আইনজীবী সাব্বির হামজা চৌধুরী বলেন, “গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে মোট মামলা ২২টি। এর মধ্যে ৫টি মামলায় তার দণ্ড হয়েছে। আজকের মামলাটিসহ চারটি মামলায় গিয়াসউদ্দিন আল মামুন খালাস পেয়েছেন। একটি মামলার কারাদণ্ড এখনও বহাল রয়েছে।” উল্লেখ্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ২৬শে মার্চ ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামুনের বিরুদ্ধে এই মামলা করে পুলিশ। মামলার নথি থেকে জানা যায়, মামুনের ডিওএইচএস বনানীর বাসায় ২০০৭ সালের ২৬শে মার্চ রাত সাড়ে ৩টার দিকে ক্যান্টনমেন্ট থানার তৎকালীন ওসির নেতৃত্বে অভিযান চালায় যৌথবাহিনী। তল্লাশিতে তার শোবার ঘরের সোফার গদির নিচ থেকে একটি পিস্তল ম্যাগাজিনসহ পলিথিনে মোড়ানো ৮ রাউন্ড পিস্তলের গুলি উদ্ধার করা হয়। তিন তলার শোবার ঘর থেকে সেদিন মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০০৭ সালের ৩রা জুলাই এই মামলায় রায় দেন ঢাকা মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২। রায়ে মামুনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং জব্দ করা অস্ত্র ও গুলি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়। সাজার রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরই হাই কোর্টে আপিল করেন মামুন। সেই আপিল মঞ্জুর করে উচ্চ আদালত সোমবার রায় দিয়েছে। ২০০৭ সাল থেকেই কারাগারে ছিলেন গিয়াসউদ্দিন আল মামুন। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, মানিলন্ডারিং, কর ফাঁকিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২০টির বেশি মামলা হয়। গত ৫ই আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরদিনই কাশিমপুর কারাগার থেকে তাকে বের করে আনা হয়।