বাংলাদেশের পুলিশের নতুন পোশাক পাকিস্তানি পুলিশের পোশাকের আদলে, সমালোচনা সর্বমহলে
বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও আনসার বাহিনীর পোশাক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নতুনভাবে পুলিশের পোশাক হবে লোহার (আয়রন) রঙের, র্যাবের পোশাক হবে জলপাই (অলিভ) রঙের এবং আনসারের পোশাক হবে সোনালি গমের (গোল্ডেন হুইট) রঙের। নতুন ডিজাইনের পোশাক নির্বাচন করার পর সেটির ছবি প্রকাশ পায় গণমাধ্যমে। এরপর থেকে এই নিয়ে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মহল থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যায়ে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছে। নাগরিকরা বলছেন, বাংলাদেশের পুলিশ এবং র্যাবের পোশাক মূলত পরিবর্তন করা হয়েছে পাকিস্তানি পুলিশের পোশাকের আদলে। যে দেশকে পরাজিত করে মহান মুক্তিযুদ্ধ অর্জিত হয়েছে, সেই দেশের পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিবর্তন করা ধৃষ্টতার শামিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উচ্চপদস্থ এক সরকারী কর্মকর্তা বলেন, নিউজে দেখেছি পোশাক পরিবর্তন হচ্ছে। এরপর ছবি দেখে মনে হলো, এটা তো পাকিস্তানি পুলিশের মতো হয়ে গেলো। শত প্রতিকুলতার পরেও বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এই বিষয়টি চিন্তায় রাখা প্রয়োজন ছিল। জীবন রহমান নামে এক ব্যবসায়ী মন্তব্য করেন, পুলিশ-র্যাবের যে আত্মবিশ্বাস তা এই পোশাকের মাধ্যমে ভেঙ্গে দেওয়া হলো আরও বেশি। আপনি যদি সুন্দর রুচিশীল পোশাক পরেন দেখবেন সেদিন আপনার আত্মবিশ্বাস থাকবে তুঙ্গে। এদিকে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, এই পোশাক বাহিনীর সদস্যদেরই পছন্দ হয়নি। এই নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলা হয়েছে। এখন দেখা যাক কি হয়। সোমবার সকালে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এ পোশাক পরিবর্তনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৮টি পোশাক পরিহিত পুলিশ, আনসার ও র্যাবের প্রতিনিধিদল বৈঠকে উপস্থিত হয়। এই ১৮টি থেকে এই পোশাক নির্বাচন করা হয়। এর আগে গত ১১ আগস্ট পুলিশের ইউনিফর্ম ও লোগো পরিবর্তন করা হবে বলে জানিয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেছিলেন, ‘পুলিশের ইউনিফর্ম, লোগো সব পরিবর্তন করা হবে। অনেকের মন ভেঙে গেছে, এই ইউনিফর্ম পরে পুলিশ আর কাজ করতে চাইছে না। খুব দ্রুতই তা পরিবর্তন করা হবে। এসব বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’