ধনীর বাতাস বিশুদ্ধকরণ যন্ত্রে শুল্ক ছাড়
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে রাজস্ব আয় বাড়াতে বিস্কুট, কেক, আচারের মতো সাধারণ মানুষের খাবারের ভ্যাট বাড়ানো হলেও ধনিক শ্রেণির ব্যবহৃত এয়ার পিউরিফায়ার বা বাতাস বিশুদ্ধকরণ যন্ত্রের আমদানি শুল্ক কমানো হয়েছে। মূলত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সোমবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সংস্থাটি। গত ১২ ডিসেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এনবিআর চেয়ারম্যান এয়ার পিউরিফায়ার আমদানিতে শুল্ক কমাতে ডিও লেটার দেন। চিঠিতে উলেখ করা হয়, বর্তমানে বায়ুদূষণ আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে। বায়–দূষণ মোকাবিলায় এয়ার পিউরিফায়ারের মতো কার্যকর দূষণ নিয়ন্ত্রণের সরঞ্জাম সহজলভ্য করা অত্যন্ত জরুরি। উচ্চ শুল্কের কারণে পিউরিফায়ারের দাম সাধারণ জনগণ ও স্কুল, হাসপাতালের মতো সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য সহজলভ্য নয়। শুল্ক হ্রাস এই যন্ত্রগুলোকে সহজলভ্য করলে তা বায়ুদূষণ থেকে সৃষ্ট স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় উলেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। এতে আরও বলা হয়, এয়ার পিউরিফায়ারের ব্যবহার জনস্বাস্থ্য রক্ষা এবং বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে। এয়ার পিউরিফায়ারের ওপর শুল্ক কমানোর ফলে প্রাথমিকভাবে রাজস্ব হ্রাস পেলেও দীর্ঘমেয়াদে জনস্বাস্থ্য উন্নতি ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়ের চাপ কমে সরকারের আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। উপরন্তু শুল্ক আংশিকভাবে কমালে এয়ার পিউরিফায়ারের আমদানির পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সামগ্রিক রাজস্ব ক্ষতিপূরণ হতে পারে। সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের সার-সংক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে উপদেষ্টা পরিষদের ১ জানুয়ারির বৈঠকে এয়ার পিউরিফায়ার আমদানির শুল্ক ১০ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত হয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্বাক্ষরিত সেই সিদ্ধান্ত এনবিআরে পাঠানো হলে সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনের ফলে এয়ার পিউরিফায়ার আমদানি শুল্ক ৫৯ শতাংশ থেকে কমে ৩২ শতাংশ হয়েছে। প্রসঙ্গত, আইএমএফের পরামর্শে ৯ জানুয়ারি কর-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে তাজা ও শুকনা ফলমূল, বিস্কুট, কেক, আচার, টমেটো কেচাপ/সস, ফলের রস, ইলেকট্রলাইট ড্রিংকস, টয়লেট টিস্যু, সেনিটারি ন্যাপকিন, সাবান-ডিটারজেন্টের মতো নিত্য ব্যবহার্য পণ্যের ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ায় এনবিআর। সাধারণ মানুষ এসব পণ্য ব্যবহার করে থাকে। একই সঙ্গে দেশীয় ইলেকট্রনিক্স শিল্পের করহার বাড়ায় সংস্থাটি।