ট্রাম্প কী ১০০ দিনের মধ্যেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করবেন?

২১ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৮:০৩ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রের নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার প্রশাসন সোমবার শপথ নেওয়ার পরপরই কাজ শুরু করার পরিকল্পনা করেছেন। তাদের কার্যতালিকায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটানো। ১০০ দিনের লক্ষ্য ট্রাম্পের বিশেষ দূত অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন জেনারেল কিথ কেলোগ গত ৮ জানুয়ারি ফক্স নিউজকে বলেছেন, ‘ব্যক্তিগত এবং পেশাগত স্তরে আমি লক্ষ্য স্থির করতে চাই, বলছি ১০০ দিনের কথা’। যদিও এটি একটি আশাবাদী সময়সীমা, যা আসন্ন ফেব্রুয়ারিতে তিন বছরে পা দিতে চলা এই যুদ্ধের জন্য যথেষ্ট সংক্ষিপ্ত। ট্রাম্প এর আগেও ২০২৩ সালের মে মাসে একবার বলেছিলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই যুদ্ধ শেষ করবেন। পরে ৭ জানুয়ারি ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো এস্টেটে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এটি একটি ‘কঠিন আলোচনা’ হবে। ট্রাম্পের ‘রেড লাইন’ ট্রাম্প মূলত দ্রুততার সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে চান। তবে তার এই পরিকল্পনা ইউক্রেনে উদ্বেগ তৈরি করেছে। একটি নির্বাচনী বিতর্কে যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, ‘আপনি কী চান, ইউক্রেন এই যুদ্ধে জিতুক?’ ট্রাম্প উত্তর দিয়েছিলেন, ‘আমি যুদ্ধ থামাতে চাই। আমি জীবন বাঁচাতে চাই’। অন্যদিকে রাশিয়া ট্রাম্পের এই দ্রুত সমাধানের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছে। ট্রাম্পের সংবাদ সম্মেলনের পরদিন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপদেষ্টা নিকোলাই পাত্রুশেভ বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে চুক্তি হওয়া উচিত যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে, ইউক্রেন বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নয়’। এদিকে যুদ্ধবিরতির জন্য কিয়েভ এবং মস্কো একে অপরের বিপরীত শর্ত দিয়েছে। কিয়েভ চায়, রুশ সেনারা তাদের ভূখণ্ড থেকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করুক এবং তারা ন্যাটো সদস্যপদ লাভ করুক। অন্যদিকে মস্কো কোনো ভূমি ফেরত দেওয়ার প্রশ্নই তুলতে চায় না এবং ইউক্রেনকে ন্যাটোর বাইরে রাখতে চায়। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প এবং তার প্রশাসন এই চুক্তির বিস্তারিত কোনো দিক তুলে ধরেনি। তবে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি রাশিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি মেনে নিতে প্রস্তুত। যেখানে ইউক্রেনের আত্মনির্ধারণের অধিকারকে পাশ কাটানো যেতে পারে। মার-এ-লাগোতে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘রাশিয়ার ঠিক দোরগোড়ায় একজন আছে এবং আমি তাদের অনুভূতি বুঝতে পারি’। যুদ্ধের অবস্থা ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ইউক্রেন তাদের ভূখণ্ডের বড় একটা অংশ পুনর্দখল করার পর যুদ্ধ স্থবির অবস্থায় রয়েছে। ২০২৩ সালেও ইউক্রেন কিছু ভূখণ্ড পুনর্দখল করলেও রুশ প্রতিরক্ষা ভেদ করতে ব্যর্থ হয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়া গত বছর থেকে ধীরগতিতে অগ্রসর হচ্ছে। যা নিয়ে ইউক্রেন বলছে, রাশিয়ার জন্য ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়েছে।তাদের ৪ লাখ ৩০ হাজার সেনা হতাহত হয়েছে। এদিকে চলতি বছর ইউক্রেন তাদের নিজস্ব অস্ত্র উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে এবং একটি ৩০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা শিল্প তৈরির লক্ষ্য নিয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়ার উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং ২১ শতাংশ সুদের হার দেশটির অর্থনৈতিক সমস্যার ইঙ্গিত দিচ্ছে। যা পুতিনের অবস্থানকে আরও দুর্বল করতে পারে। পুতিনের সঙ্গে আলোচনা এদিকে নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি সরাসরি রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করতে চান। জবাবে গত ১০ জানুয়ারি ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন আন্তর্জাতিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য সর্বদা উন্মুখ’। এ বিষয়ে সিএনএন জানিয়েছে, উভয় নেতার মধ্যে একটি ফোনালাপের তারিখ শিগগিরই নির্ধারণ করা হতে পারে। সূত্র: আল-জাজিরা