যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গাজায় দুর্ভিক্ষের তথ্য লুকানোর অভিযোগ

২০ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:৪৪ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

গাজায় দুর্ভিক্ষের প্রকৃত পরিস্থিতি লুকানোর অভিযোগ উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে। একটি বিশেষ প্রতিবেদনের তথ্য প্রকাশ না করতে ফ্যামিন আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেমস নেটওয়ার্ক (FEWS NET)-এর ওপর চাপ প্রয়োগ এবং প্রতিবেদন প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এবং মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ফ্যামিন আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেমস নেটওয়ার্ক (FEWS NET) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যেখানে গাজায় চলমান দুর্ভিক্ষের প্রকৃত চিত্র উঠে আসে। প্রতিবেদনে গাজার জনসংখ্যার মধ্যে চরম খাদ্য সংকটের উল্লেখ করা হয়। কিন্তু বাইডেন প্রশাসনের নির্দেশে এই প্রতিবেদন প্রত্যাহার করা হয়। ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, ইউএস এইডের কর্মকর্তা সোনালি কোর্দে সংস্থাটির প্রধানকে চিঠি লিখে গাজায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিবেদনটির শিরোনাম পরিবর্তন করার জন্য চাপ দেন। প্রতিবেদনে গাজার ধ্বংসযজ্ঞের তথ্য উল্লেখ থাকায় বাইডেন প্রশাসন এটি সরাসরি সমালোচনা করতে চায়নি, কারণ এটি ইসরায়েলের ভূমিকার প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে পারত। FEWS NET-এর ৪০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবার বাইডেন প্রশাসনের নির্দেশে কোনো প্রতিবেদন প্রত্যাহার করা হয়। ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, প্রতিবেদনটিতে উত্তর গাজার জনসংখ্যা এবং দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি নিয়ে দুটি ভিন্ন অনুমান উল্লেখ করা হয়েছিল। এতে জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী গাজায় বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করা হয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, বাইডেন প্রশাসনের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সমালোচনার শিকার হয়েছে। মানবাধিকার কর্মী এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি গাজায় মানবিক সংকটের সত্যিকারের চিত্রকে ধামাচাপা দেওয়ার প্রচেষ্টা। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ঘটনাটি বাইডেন প্রশাসনের নৈতিকতা এবং মানবাধিকার বিষয়ে অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান এবং তার পরবর্তী মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার বিষয়টি আরও ঘনীভূত হয়েছে। গাজায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি নিয়ে তথ্য লুকানোর এই অভিযোগ বাইডেন প্রশাসনের জন্য একটি গুরুতর বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। আন্তর্জাতিক মহল থেকে সুষ্ঠু তদন্ত এবং দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি নিয়ে নিরপেক্ষ প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি উঠেছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গাজার মানবিক সংকট আরও বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে।