আমাদের ঈমান ঠিক আছে তো? প্রশ্ন অভিনেত্রী জয়ার

২০ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৯:৪৩ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

বাংলাদেশে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংবলিত গ্রাফিতি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে চলমান বিতর্ক এবং এর প্রেক্ষিতে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা দেশব্যাপী উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। বুধবার দুপুরে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে একদল আদিবাসী শিক্ষার্থী এবং তাদের সমর্থকরা পাঠ্যবইয়ে ‘আদিবাসী’ শব্দের গ্রাফিতি পুনর্বহালের দাবিতে এনসিটিবির সামনে একটি peaceful কর্মসূচি পালন করতে যান। এই কর্মসূচির প্রতিবাদ জানাতে সেখানে হাজির হয় ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা, এবং দ্রুতই দুটি পক্ষের মধ্যে বাদানুবাদের সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছায় যে, এক পর্যায়ে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র সদস্যদের ওপর হামলা হয়, এবং এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনায় অনেকেই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, বিশেষত আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর এমন হামলার ঘটনায়। এই হামলার ঘটনায় দেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানও তার ফেসবুক পেইজে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “‘আদিবাসী’ নাগরিকদের রক্তে ঢাকার রাস্তা যেভাবে রক্তাক্ত করা হলো, সেটা মর্মান্তিক। এই রক্ত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের জখম-আত্মা থেকেই বের হল। কারণ বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আদিবাসীরাও শরিক হয়েছিল।” এছাড়া তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, "একদিকে আমরা সংবিধানের বৈষম্য দূর করতে চাচ্ছি, অন্যদিকে সংবিধানের দোহাই দিয়ে আদিবাসীদের ওপর হামলা করছি। আমাদের ঈমান ঠিক আছে তো?" জয়া আহসান তার পোস্টে বাংলাদেশের সকল ধরনের বৈষম্য দূর করার আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবারের হামলার পর, বৃহস্পতিবার দুপুরে আদিবাসী শিক্ষার্থীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দিকে একটি মিছিল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন, তবে তাদেরকে পুলিশ বাধা দেয়। শিক্ষাভবনের সামনে দুপক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয় এবং পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে তিন শিক্ষার্থীসহ কয়েকজন আহত হন। এদিকে, হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আদিবাসী শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই হামলার নিন্দা জানিয়ে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেছে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনও এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এই ঘটনাটি দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে সামনে এসেছে। আদিবাসী জনগণের প্রতি এই বৈষম্য এবং আক্রমণের ঘটনা, দেশে আরও বেশি সামাজিক সহিষ্ণুতা এবং বৈষম্যহীনতা প্রতিষ্ঠা করার প্রয়োজনীয়তার কথা মনে করিয়ে দেয়।