শিক্ষাঙ্গনে নীতিমালা প্রণয়নে এক ধরনের ডানপন্থার প্রভাব লক্ষ করছি
সম্প্রতি খালেদ মহিউদ্দিনের জনপ্রিয় টকশো ঠিকানায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশী সংবাদপত্র দ্যা নিউ এইজ এর সম্পাদক নুরুল কবির। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা সময় মতো বই পায় নাই, যদিও এই বছর অনেকগুলি বই নতুন করে লেখা হয়েছে, আগস্ট পর্যন্ত আমরা একটা অন্য বাস্তবতায় ছিলাম, কিন্তু আপনি এটাকে কিভাবে দেখছেন? জবাবে নুরুল কবির বলেন, আমি এই বিষয়ে ভীষণ ক্ষুব্ধ নাগরিক হিসেবে, সাংবাদিক হিসেবেও। প্রথম কথা হচ্ছে, একটা কমিটি তৈরি করা হলো। বইয়ের ব্যাপারে, বইগুলি দেখবার ব্যাপারে। সেই কমিটিতে বাংলাদেশের দুজন অত্যন্ত সম্মানিত অধ্যাপক সদস্য, যাদের গণতন্ত্রের প্রতি বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস চর্চার প্রতি কমিটমেন্ট প্রশ্নাতীত, তাদেরকে জামায়াতে ইসলামী এবং অপরাপর কয়েকটা সংগঠনের দাবির মুখে কমিটি থেকে বাদ দেয়া হলো।Travel packages এই সরকারের উত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা একটা জিনিস লক্ষ্য করছি, বিশেষত শিক্ষাঙ্গন গুলোতে এবং শিক্ষার পাঠ্যক্রম নির্ধারণ করবার ক্ষেত্রে, যে নীতিমালা কার্যকর করা হচ্ছে, সেখানে এক ধরনের ডানপন্থার প্রভাব আমরা লক্ষ্য করি। দ্বিতীয়ত হচ্ছে, বইগুলিতে আমি সবগুলি এখনো পর্যন্ত পড়িনি, দুই তিনটা এনেছি, গতকাল রাতে পড়া শুরু করেছি। ইতিহাস লিখবার ক্ষেত্রেও বা পুনর্লিখনের ক্ষেত্রেও, আপনার এই যে পদ্ধতিতে করা হচ্ছে এবং যে সমস্ত টেক্সট কয়েকটা চোখে পড়েছে, এগুলো সব ঠিক নেই। একটা জিনিস হচ্ছে, আমি অনেকের গালি খাওয়ার ব্যবস্থা করছি নিজের বিরুদ্ধে, কিন্তু আমি জানি এটা আমাকে বলতে হবে। যেমন ধরুন, বাংলাদেশের যে স্বায়ত্তশাসন এবং স্বাধীনতার সংগ্রাম, এটা দীর্ঘ। এটা শুধুমাত্র পাকিস্তানের জমানার না। বাংলাদেশে পূর্ব বাংলার কৃষকের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক মুক্তির প্রশ্নটা ফজলুল হক এনেছেন, প্রথম সবচাইতে বড় করে, অন্যরা এনেছেন, যে জনপ্রিয় মুখ হিসেবে, তাদের বিরাট ভূমিকা ছিল।Travel packages সারোয়ারের বহু বিতর্কিত ভূমিকা ছিল কিন্তু কিছু কিছু নেতিবাচক ভূমিকা পালন করেছেন। মাওলানা ভাসানী আজীবন মানুষের জন্য, গণতন্ত্রের লড়াই করেছেন। এগুলো সব সত্য এবং তাদেরকে তাদের ডিউ মর্যাদা দিতে হবে। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বশেষ পর্যায়-স্তরে, স্বাধীনতা সংগ্রাম পর্যন্ত, স্বাধীনতা যুদ্ধে বিলিপ্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত, তার একটা ওই সময়ের কারণে হলেও অনন্য ভূমিকা ছিল। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে তার যে প্রশাসন পরিচালনা, বাকশালীকরণ, গণতন্ত্রের যে অধিকার হরণ, এগুলি সব সত্য থাকা সত্ত্বেও, সেটার জন্য তিনি সমালোচনা পাবার যোগ্য। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের শেষ পর্বের, তিনি চূড়ান্ত পর্বের অবিসংবাদিত নেতা। সেই ভূমিকাটা ঠিক সেইভাবে যদি আমরা ছাত্র-ছাত্রীদেরকে না পড়াই, নিন্দা যেমনটা প্রাপ্ত হলে তাকে দিতে হবে, সেইটা যদি আবার তার প্রশংসার জায়গা যদি আমরা না রাখি, সেটাও কিন্তু আরেক ধরনের ইতিহাস বিকৃতিকরণ। এইগুলো কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি। সবাই এক, আবার একসময় নেতাও ছিলেন না, একরকম ভূমিকাও পালন করেননি, কারণ তার সেটা করার দরকারও পড়েনি। এই যে নতুন পাঠ্যক্রম তার মধ্যে ইতিমধ্যে এসব লক্ষণ দেখছি। যারা এগুলি লিখেছেন, তারা নিজেরাই কতদূর ইতিহাস চর্চা করেছেন, আমি খুব নিশ্চিত নই। কিন্তু ওইখানে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের মতো একজন শ্রদ্ধাভাজন লোক, যার দায়িত্বে, তার নেতৃত্বে এই ধরনের কর্মকাণ্ড মোটেও কাম্য নয়, এটা আমি বলতে পারি।