কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অর্থনীতির জন্য আত্মঘাতী-বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ

১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৪:২৪ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

বৈদেশিক মুদ্রার উচ্চ বিনিময় হার, আমদানি খরচ বৃদ্ধি, উচ্চ জ্বালানি ব্যয়, উচ্চ সুদের হার ও বৈশ্বিক প্রভাব দেশের বিনিয়োগের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। সরকার যেখানে বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে মূল্যস্ফীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছে সে মুহূর্তে অংশীজনদের সঙ্গে কোনো মতবিনিময় ছাড়াই মূসক ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনীতির জন্য আÍঘাতী হবে। এ কারণে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার গতিকে থমকে দেবে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে মঙ্গলবার ‘নিয়ম বহির্ভূতভাবে পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি এবং গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের প্রতিবাদে’ বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ (এফবিসিসিআই) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ব্যবসায়ী নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদের আহ্বায়ক জাকির হোসেন নয়ন। তিনি বলেন, দেশ বর্তমানে একটি কঠিন অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করলাম যে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের মাঝপথে এসেই শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে সরকার বৃহস্পতিবার গেজেট প্রকাশ করেছে। অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা না করেই মূসক ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করায় ব্যবসায়ী সমাজের পক্ষ থেকে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করছি। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির জন্যও সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। হঠাৎ এ কর আরোপ এবং গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব দেশের সার্বিক জাতীয় অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। জাকির হোসেন বলেন, সব ধরনের রেস্তোরাঁর বিলের ওপর ১০ শতাংশ হারে ভ্যাট বৃদ্ধি করার পাশাপাশি দোকান ও সুপার মার্কেটে বিক্রির ওপরও ভ্যাট বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে নিন্ম ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাছাড়াও আমদানিকৃত ফল, মোবাইল ফোন সেবা, ইন্টারনেট, টিস্যু, এলপিজি গ্যাস, পোশাক প্রভৃতির ক্ষেত্রেও বিভিন্ন হারে মূসক বাড়ানো হয়েছে। যেহেতু এসব পণ্য ও সেবা জীবন-যাত্রারই সার্বক্ষণিক অনুষঙ্গ, সেজন্য অতিরিক্ত কর বৃদ্ধির ফলে সব আয়ের মানুষের ওপর এর চাপ পড়বে। জীবন রক্ষাকারী ওষুধের ওপরও ভ্যাট বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। লিখিত বক্তব্যের বাইরে জাকির হোসেন নয়ন বলেন, অর্থবছরের মাঝখানে এসে হঠাৎ করে ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির এ ধরনের সিদ্ধান্ত অর্থনীতির জন্য আÍঘাতী হবে এবং বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করবে। ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ এর মতো অর্থবছরের মাঝখানে এসে অনৈতিকভাবে ট্যাক্স ভ্যাট বৃদ্ধি করাকে আমরা বিরোধিতা করছি। এর নিন্দা জানাচ্ছি। এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম হায়দার বলেন, এখন দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বমুখী, এ মুহূর্তে তারা (সরকার) কর আরোপ করলেন কেন? এটা একদমই অনুচিত। আইএমএফ’র সঙ্গে সরকার নেগোসিয়েট করতে না পেরে এখন আমাদের ঘাড়ে করের বোঝা চাপাচ্ছে। এফবিসিসিআই’র সহায়ক অ্যাসাসিয়েট অ্যাডমিনেস্ট্রেটর ও বারভিডার সভাপতি আব্দুল হক বলেন, যারা টাকা লুটপাট করেছে, পাচার করেছে তাদের বলা উচিত তারা যে পরিমাণ টাকা লুটপাট ও পাচার করেছে তার ৮০ শতাংশ ফেরত দিতে হবে। আর তা না হলে তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি মো. ওসমান গনি ও এফবিসিসিআই’র সদস্য আতিকুর রহমান প্রমুখ।