এখনও আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে ইন্টারনেট
বাংলাদেশে ছাত্রজনতার গণআন্দোলনের সময় ইন্টারনেট শাটডাউনের ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এক সপ্তাহব্যাপী ইন্টারনেটবিহীন অবস্থায় দেশের অর্থনীতি ও বিভিন্ন খাতে বিপুল ক্ষতি হয়। প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, আন্দোলন দমন করতে আওয়ামী লীগ সরকার এবং তাদের সহযোগীরা ইচ্ছাকৃতভাবে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেয়। যদিও তা অস্বীকার করে সরকার দাবি করে, সমস্যাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সৃষ্টি হয়েছিল। দেশের ইন্টারনেট ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিস্তৃত সমালোচনা রয়েছে। ব্যান্ডউইথ সরবরাহ থেকে শুরু করে প্রান্তিক গ্রাহকদের কাছে ইন্টারনেট পৌঁছানো পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে আওয়ামীপন্থী ব্যক্তিদের প্রভাব বিদ্যমান। বিশেষত, সামিট কমিউনিকেশনস এবং বেক্সিমকো গ্রুপের মতো প্রতিষ্ঠানের হাতে ইন্টারনেটের বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। সামিট গ্রুপের প্রধান মোহাম্মদ আজিজ খানের নামে সিঙ্গাপুরে বিপুল সম্পদ গড়ে তোলার অভিযোগও রয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে রাজনৈতিক বিবেচনায় বিভিন্ন ধাপে ইন্টারনেট লাইসেন্স প্রদান করা হয়। বর্তমানে ২৪টি আইজিডব্লিউ অপারেটরের মধ্যে ২০টি সরাসরি আওয়ামী লীগের মদতপুষ্ট বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ছাত্রলীগের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সংশ্লিষ্টতা উল্লেখযোগ্য। এ অবস্থায় ইন্টারনেট সেক্টরে একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রেখে যেকোনো সময় সংযোগ বিঘ্নিত করার ক্ষমতা তাদের হাতে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিটিআরসি জানিয়েছে, ইন্টারনেটের জটিল নেটওয়ার্ক টপোলজি ও লাইসেন্সিং ব্যবস্থার সংস্কারে উচ্চপর্যায়ের কমিটি কাজ করছে। ২০২৫ সালের মার্চ নাগাদ একটি নতুন রোডম্যাপ প্রণয়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত সুষ্ঠু ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন কার্যকরী উদ্যোগ ও স্বচ্ছ নীতি।