শর্তহীন মুক্তি পেলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পর্নোতারকাকে ঘুষ দেওয়ার তথ্য গোপনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে শর্তহীন মুক্তি দিয়েছেন নিউইয়র্কের বিচারক হুয়ান মারচান। শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে আদালত এই বিরল দণ্ড ঘোষণা করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিচারিক ইতিহাসে এই রায় নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা। কেলেঙ্কারির বিবরণ ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে সাবেক পর্নোতারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের কথা গোপন রাখতে তাঁকে ঘুষ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অভিযোগে বলা হয়, ঘুষের তথ্য ট্রাম্প তাঁর ব্যবসায়িক নথিতেও লিপিবদ্ধ করেননি। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের আইনে সর্বোচ্চ চার বছরের কারাদণ্ড হতে পারত তাঁর। তবে বিচারক হুয়ান মারচান তাঁকে শর্তহীন মুক্তি দিয়েছেন, যেখানে দোষী সাব্যস্ত হলেও ট্রাম্পের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা বা শর্ত আরোপ করা হয়নি। বিচারকের ব্যাখ্যা ও বিরল দণ্ড রায় ঘোষণার সময় বিচারক মারচান বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের আদালত ব্যবস্থা আগে কখনো এত অনন্য ও উল্লেখযোগ্য পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি। দেশের সর্বোচ্চ পদধারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত হস্তক্ষেপ এড়িয়ে একমাত্র উপযুক্ত দণ্ড হলো শর্তহীন মুক্তি।” ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া ও সমর্থকদের অবস্থান রায় ঘোষণার সময় ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে ট্রাম্প বলেন, “এটি একটি ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। এটি আমার সুনাম ক্ষুণ্ন করার ষড়যন্ত্র এবং নিউইয়র্ক আদালত ব্যবস্থার জন্য বিরাট ধাক্কা।” বিচারিক কার্যক্রম চলাকালীন আদালতের বাইরে ট্রাম্পের সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা যায়। ট্রাম্পের সমর্থকেরা তাঁর নাম লেখা বিশাল ব্যানার নিয়ে উপস্থিত হন, অন্যদিকে বিরোধীদের ব্যানারে লেখা ছিল, “ট্রাম্প দোষী।” রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ ট্রাম্পের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে করা হয়েছে। এ বিষয়ে তাঁর দল রিপাবলিকান পার্টি রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করলেও তা খারিজ করেছেন সহযোগী বিচারপতি এলেন জেসমার। ক্যাপিটল হিল হামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার দিন, ৬ জানুয়ারি, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলা থেকেও তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির সেই ঘটনার জন্য ট্রাম্পের সমর্থকেরা ক্যাপিটল হিলে হামলা চালিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট পদে শপথ ও ভবিষ্যৎ প্রভাব ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এ মামলা এবং রায়ের বিরলতা মার্কিন বিচারব্যবস্থা ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। এ ধরনের সিদ্ধান্ত বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতার প্রশ্ন তুলতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। তবে সমর্থকদের মতে, এটি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের উপযুক্ত জবাব।