গণহত্যা দিবস পালনের ঘোষণা বেলুচিস্তানিদের

৯ জানুয়ারি, ২০২৫ | ১১:০৬ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানে গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে ‘গণহত্যা দিবস’ পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৫ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বেলুচ গণহত্যা দিবস’ পালন করবে প্রদেশটির মানবাধিকার সংগঠন বেলুচ একজেহতি কমিটি (বিওয়াইসি)। বুধবার স্থানীয় ‘দেস্ত’ বেওয়ারিশ লাশ দাফনের কবরস্থানে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। সেদিন বেলুচিস্তানের উপর পাকিস্তানীদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে চাগী জেলার দালবান্দিন এলাকায় সমাবেশের আয়োজন করবে সংগঠনটি।খবর দ্যা বেলুচ পোস্টের। সংবাদ সম্মেলনে বিওয়াইসির নেতা মাহরাঙ বেলুচ বলেন, ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি বেলুচিস্তানের টুকটাক অঞ্চলে ১০০টিরও বেশি অর্ধগলিত বিকৃত লাশ পাওয়া যায়। যাদের পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা গুম করেছিলো। এই লোহমর্ষক ঘটনা সাধারণ মানুষের মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে যা এখনো বেলুচিস্তানি ও নিহতদের পরিবার বয়ে বেড়াচ্ছে। তিনি আরো বলেন, সুচিন্তিতভাবে বেলুচিস্তানিদের হত্যা করা এবং তাদের বেওয়ারিশ লাশ দাফনের কবরস্তানগুলোতে দাফন করা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী গণহত্যার শামিল। উদাহরণ হিসেবে তিনি স্থানীয় ‘দেস্ত’ কবরস্থানে বেওয়ারিশ লাশ দাফনের বিষয়টি উত্থাপন করেন। ২৫ জানুয়ারি নিহতদের স্মরণ ছাড়াও বেলুচস্তানিদের প্রতি বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ ও এসব অপরাধের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যেও নানান কর্মসূচি পালন করবে সংগঠনটি। উল্লেখ্য, পাকিস্তানের বিশাল এলাকা বেলুচিস্তান। প্রায় ৪৪ ভাগ। ভু-রাজনৈতিকভাবে খুব গুরুত্বপূর্ণ। আবার মাটির নিচে আছে বিস্তর খনিজ। ইসলামাবাদ এই খনিজ জাতীয় প্রয়োজনে ব্যবহারের পক্ষে। অন্যদিকে, এখানকার মানুষ চাইছে খনিজের উপর প্রথমে তাদের হিস্যা নিশ্চিত হোক। তাছাড়া খনিজ সম্পদ কীভাবে উত্তোলিত ও ব্যবহৃত হবে তার জন্য চাই এ অঞ্চলের রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসন। এ রকম অবস্থান থেকেই বেলুচদের সঙ্গে ইসলামাবাদের নীতিনির্ধারকদের বিরোধ চলছে। বেলুচিস্তান প্রাকৃতিক সম্পদসমৃদ্ধ। সেখানে তেল, কয়লা, সোনা, তামা ও গ্যাসের খনি রয়েছে। এরপরও পাকিস্তানের সবচেয়ে দরিদ্র অঞ্চল এটি। পাকিস্তান সরকারের রাজস্ব আয়ের একটি বড় উৎস বেলুচিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদ। অথচ এই প্রদেশের বাসিন্দাদের কঠোর অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দিন যাপন করতে হয়। বেলুচিস্তান প্রদেশের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, পাকিস্তান সরকার খুবই কৌশলে ক্রমাগত তাদের প্রয়োজনকে উপেক্ষা করে যাচ্ছে এবং তাদের সম্পদের অপব্যবহার করছে। এর ফলে তাদের মধ্যে (সরকার দ্বারা) প্রতারিত হওয়ার অনুভূতি গড়ে উঠেছে এবং তাদের সমর্থন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দিকে ঝুঁকে পড়ছে।