‘বাংলাদেশে কোনো ভবিষ্যৎ নেই, টাকা ছাড়া জীবন মূল্যহীন’

৬ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৫:২৭ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

দেশের আরচারিতে সবচেয়ে পরিচিত দুই মুখ রোমান সানা এবং দিয়া সিদ্দিকী। আরচারি নিয়ে বছর কয়েক আগেও খুব একটা খোঁজখবর রাখতেন না কেউ। কিন্তু এই দুজন দৃশ্যপটে আসার পর আরচারিতে আশার প্রদীপ জ্বলে ওঠে। কিন্তু অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দোহাই দিয়ে তারা দুজনেই সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন। দেশের একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে বাংলাদেশ ছাড়ার কারণ বলতে গিয়ে অভিমান আর ক্ষোভ ঝরেছে রোমানের কণ্ঠে, ‘সত্যি কথা বলতে কী বাংলাদেশে কোনো ভবিষ্যৎ নেই। উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় আমরা যুক্তরাষ্ট্রে এসেছি। আর টাকা ছাড়া কোনো মূল্য নেই। আরচারি খেলে বাংলাদেশের জন্য যা কিছু করেছি, সেগুলো তো কেউ মনে রাখেনি। আপনি বলেন– এত পদক এনে দিলাম, সাফল্য এনে দেওয়ার পরও দিন শেষে কী পেয়েছি? কিছুই পাইনি। পেয়েছি অপমান, বঞ্চনা। লাঞ্ছনার শিকার হয়েছি।’ আরচারির কথা যেন এখন ভুলে যেতে পারলেই বাঁচেন রোমান। বলেছেন, ‘আমি আরচারি নিয়ে আর কোনো কথাই বলতে চাই না। আমার কাছে সেটা এখন অতীত। আমাকে এখন চিন্তা করতে হচ্ছে নতুন জীবন নিয়ে। আমাদের জন্য দোয়া কইরেন।’ দেশ ছাড়ার আগে আরচারির দম্পতি রোমান এবং দিয়া কাউকেই কিছু জানাননি। রোমান জানালেন, ‘কোচ মার্টিন ফ্রেডরিখ থেকে শুরু করে কারও কাছেই আমরা বলে আসিনি। এখন কে কী ভাবল, মনে করল কিংবা লিখল, তা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। আমাদের কোনো কিছুই যায় আসে না।’ ক্ষোভটা ফেডারেশনের ওপরই বেশি রোমানের, ‘ফেডারেশনকে কেন বলতে যাব। তারা আমাদের কী দিয়েছে। বাংলাদেশে আরচারি খেলে কী পেয়েছি। ফেডারেশনই বা আমাদের জন্য কী করেছে। সেখানে কিছু নেই বলেই তো আমরা আজকে এখানে এসেছি।’ একসময়ের দেশসেরা আরচার রোমান যোগ করেন, ‘ভবিষ্যৎ বলতে কিছু নেই আরচারিতে। দিন শেষে আপনার টাকাটাই সব। আপনার কাছে টাকা আছে আপনার মূল্য আছে। সবাই দাম দেবে। সম্মান করবে। টাকা না থাকলে আপনার পুরো জীবনটাই মূল্যহীন।’ জানা গেছে, গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর আমেরিকার নিউ জার্সিতে এক পরিচিতজনের বাসায় উঠেছেন রোমান ও দিয়া। তাদের দেশে ফেরার আর কোনো পরিকল্পনা। যুক্তরাষ্ট্রেই স্থায়ী বসতি গড়তে চান রোমান-দিয়া। এর আগে দেশের বিনোদন অঙ্গনের তারকাদের উন্নত জীবনের আশায় বিদেশ-বিভূঁইয়ে থিতু হওয়ার গল্প শোনা যেত। এবার ক্রীড়াঙ্গনেও সে ধারার পত্তন হয়ে গেল। দেশের ক্রীড়াঙ্গনে টাকার ছড়াছড়ি শুধু ক্রিকেট পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। প্রায়শই অন্য খেলার তারকাদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের শঙ্কায় বিকল্প ক্যারিয়ার বেছে নিতে দেখা যায়।