মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় কি অস্বীকার করা যায়?
২২ ডিসেম্বর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে একাত্তরের রণাঙ্গনের এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে জনসম্মুখে জুতার মালা পরিয়ে যেভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে, তা দেখে এদেশের সাধারণ মানুষ হতবাক করেছেন। লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করা হলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত এ মুক্তিযোদ্ধার নাম আব্দুল হাই কানু। তিনি কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং একই সংগঠনের কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার সাবেক সহসভাপতি। তিনি কে? কী তার অপরাধ? অথবা তার অতীত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কথা বিবেচনা না করেই মানুষ এ অবাঞ্ছিত ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। অনেকেই বলছেন, তিনি তার অতীত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য প্রতিশোধের শিকার হয়েছেন। আবার অনেকেই বলার চেষ্টা করছেন, ‘কেউ মুক্তিযোদ্ধা মানেই এই নয় যে, তার অন্য কোনো পরিচয় থাকতে পারে না বা তিনি কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত হতে পারেন না।’ মানুষমাত্রই যে কেউ অপরাধ করতে পারেন। তিনি যদি রাজনীতিক হন, তাহলে তো কথাই নেই। রাজনীতি করতে গিয়ে তিনি যদি অপরাধ করেও থাকেন, তার জন্য দেশে আইন আছে, বিচারব্যবস্থা আছে। বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে শাস্তির বিধানও আছে। কিন্তু কেউ আইন হাতে তুলে নিয়ে কারও সঙ্গে এমন আচরণ করবেন, তা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি যদি শাস্তিযোগ্য কোনো অপরাধ করেও থাকেন, তাই বলে তার মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় মুছে ফেলা যায় না। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বিতর্কও আছে। অভিযোগ আছে, তিনি যে দল করেন, সে দল ক্ষমতায় থাকাকালে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকার সুবাদে তিনি ও তার ছেলে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন। বিভিন্ন সময়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা তাদের দ্বারা হয়রানির শিকার হয়েছেন। আব্দুল হাই কানুর বিরুদ্ধে মামলাও আছে। নানা অভিযোগে তিনি কারাগারেও গিয়েছেন। তবে এসব মামলা ও কারাগারে যাওয়ার পেছনে তার নিজ দলের সাবেক মন্ত্রী মুজিবুল হক জড়িত ছিলেন বলে তিনি দাবি করেন। মুজিবুল হকের অনুসারীরা নানাভাবে তার পরিবারকে হয়রানিও করে। আব্দুল হাই দাবি করেন, তিনি নিজে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও মুজিবুল হকের অনিয়ম, অত্যাচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় তার রোষানলে পড়ে আট বছর এলাকাছাড়া ছিলেন। দেশের পট পরিবর্তনের পরপর তিনি নিজ গ্রামে ফিরে আসেন। ২২ ডিসেম্বর দুপুরে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরই একদল লোক তাকে ঘিরে ধরেন। তারপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় পাশের কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে। সেখানে তারা আব্দুল হাই কানুর গলায় জুতার মালা পরিয়ে টানাহেঁচড়া করে এবং হাতজোড় করে তাকে সবার সম্মুখে মাফ চাইতে বাধ্য করা হয়। লাঞ্ছনাকারীরা সবাই স্থানীয় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী ছিলেন। এ ঘটনায় আব্দুল হাই কানু এতই ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন যে, তিনি অপরাধীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করতেও সাহস করেননি। তিনি স্থানীয় থানার ওসিকে বলেছেন, ‘অভিযোগ করলে আমি এলাকায় থাকতে পারব না, আপনাকেও ঝামেলায় ফেলতে চাই না।’ এ কথা শুনে মনে হয়েছে, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরেও কি আমরা বিগত ১৬ বছরের ভয়ের সংস্কৃতির মধ্যেই আছি? তবে শেষ পর্যন্ত মামলা হয়েছে। তবে এজন্য কম ঝামেলা পোহাতে হয়নি। ২৬ ডিসেম্বর মামলার কাগজপত্র তৈরি করে থানায় যাওয়ার পথে অজ্ঞাতনামা কিছু লোক তাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়, ফলে সেদিন আর মামলা করা যায়নি। তবে পরদিন ১০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়। মামলা হলেও যে দুজন জামায়াত কর্মী জুতার মালা পরানোর পর আব্দুল হাইয়ের হাত ধরে টানাহেঁচড়া করেছেন, সেই মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন। পুলিশ এখনো তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি। আব্দুল হাই কানুকে লাঞ্ছিত করার পরদিনই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা ঘটনাটিকে দুঃখজনক বলেছেন। এক বিবৃতিতে তারা বলেছেন, তাদের দলের কোনো পর্যায়ের নেতা বা কর্মীর আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কোনোভাবেই তারা সমর্থন করেন না। বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী ইতোমধ্যেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুজন কর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে। যদিও তারা এ দুজনকে দলের কোনো পর্যায়ের নেতা বা কর্মী হিসাবে স্বীকার করেন না। তারা বিবৃতিতে তাদের দলের সমর্থক বলে উল্লেখ করেছেন। কুমিল্লা জেলা দক্ষিণ জামায়াতের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। জামায়াতে ইসলামী শুধু মুক্তিযোদ্ধা নয়, দেশের সাধারণ কোনো নাগরিককেও হেনস্তা করা সমর্থন করে না। দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার অপরাধে সমর্থক হওয়ায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত দু’জনকে জামায়াতে ইসলামী থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’ যদিও শুরু থেকেই আব্দুল হাই কানুকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীর জড়িত থাকার কথা চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নেতারা অস্বীকার করে আসছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা নিগৃহীত হওয়ার ঘটনা আগেও কম হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি দাবিদার আওয়ামী লীগের শাসনামলে এমন অনেক মুক্তিযোদ্ধা চরম নিপীড়ন ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তখনও চরম নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন এমন অনেক মুক্তিযোদ্ধা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দ্বারাও নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনা সে সময়ে গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। বিস্তারিত ঘটনার উল্লেখ না করে ছোট্ট দুটি ঘটনার উদাহরণ এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে। ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলার রশিদ সনু বক্তব্য দেওয়ার সময় স্থানীয় রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা টুটুলের হাতে চরম লাঞ্ছনার শিকার হয়েছিলেন। সবার সম্মুখে প্রকাশ্যে বজলার রশিদ সনুকে গালাগালি করে সংবর্ধনা মঞ্চ থেকে নামিয়ে দিলে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ঘটনাটির ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা ও প্রতিবাদ হয়। এমনকি এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচিও পালিত হয়েছে। ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর যশোরের কেশবপুর উপজেলা সদর প্রাঙ্গণে উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রফিকুল ইসলামের ওপর পূর্বেরশত্রুতার জের ধরে আওয়ামী লীগের কর্মী টিটু লোকজন নিয়ে আক্রমণ করে; মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। এমনকি হত্যার হুমকিও দেয়। এসব নিয়ে থানা-পুলিশ হলেও কোনো কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত সংবাদ সম্মেলন করে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এ তো গেল দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছোট দুটি ঘটনা। সে আমলে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও প্রকাশ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের কম অপমান করেননি। কথায় কথায় তারা খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হেয়প্রতিপন্ন করেছেন। সেসময়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসাবে অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে জেলে ঢুকিয়ে জুলুম করাও হয়েছে। তাদের এ রোষানল থেকে জেনারেল জিয়াউর রহমানও বাদ যাননি। আওয়ামী লীগের নেতা-নেত্রীরা জিয়াউর রহমানকে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকার করা তো দূরে থাক, উলটো রাজাকার বানানোর চেষ্টাও করেছেন। এমনকি তাকে পাকিস্তানের এজেন্ট বলতেও পিছপা হননি তারা। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ নিয়ে জিয়াউর রহমানকে অপমান করতে শেখ হাসিনা ছিলেন সবার অগ্রভাগে। তার সব অপকর্মের আইনি পরামর্শক, সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও কম যাননি। তিনি জিয়াউর রহমানের ইংরেজি নামের আদ্যাক্ষর ‘জেড’ থাকার কারণে ‘জেড ফোর্স’-কেও ‘ভুয়া ফোর্স’ বলতে দ্বিধা করেননি। জিয়ার কর্মকাণ্ডে কেউ অসন্তুষ্ট হতেই পারেন। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসাবে জিয়ার অনেক কর্মকাণ্ডই তাদের কাছে আইনবিরোধী কিংবা দেশবিরোধী মনে হতে পারে। তাই বলে মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য জিয়াউর রহমানের মুক্তিযোদ্ধার পরিচয়কে অস্বীকার করতে পারেন না। কিন্তু সেসময় তাই করা হয়েছে। জিয়াউর রহমানের পরিবারের প্রতিও চরম নিষ্ঠুর ব্যবহার করা হয়েছে। আব্দুল হাই কানুর রাজনৈতিক পরিচয় যাই থাকুক, তিনি একজন মানুষ। তিনি এদেশের নাগরিক। তার সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি একজন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। রাজনীতি করতে গিয়ে যত বড় অপরাধই করে থাকুন না কেন, প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে এদেশের কোনো নাগরিকই একজন মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করতে পারেন না। মুক্তিযুদ্ধকালে যে দল বা সংগঠনের ভূমিকা নিয়ে বিরাট প্রশ্ন রয়ে গেছে, সেই দল বা সংগঠনের কোনো নেতাকর্মী অথবা নাম-পরিচয়হীন কোনো সমর্থকও যদি এই কলঙ্কিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকেন, তার ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তো হবেই। দলের নাম বদল করলেই হবে না; পূর্বসূরিদের কর্মের ফল ভোগ করে যেতেই হবে; যতদিন না এ দেশের জনগণ ক্ষমা করেন। চৌদ্দগ্রামের এ ঘটনার পর দু-একটি পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকের মতামত ও প্রতিবেদন চোখে পড়েছে, যেখানে এ ঘটনার কিছুটা পক্ষে এবং বিপক্ষে যুক্তি দিয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন এ লাঞ্ছনার ঘটনায় আব্দুল হাই কানুর মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় কেন প্রধান হয়ে উঠল? যুক্তি দিতে গিয়ে বলা হয়েছে, আব্দুল হাই কানু একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে আক্রোশের শিকার হননি। বরং একজন রাজনীতিবিদ হিসাবে তিনি প্রতিশোধের শিকার হয়েছেন। ফলে বাংলাদেশের সব গণমাধ্যম এ ঘটনায় যেভাবে তার মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়কে প্রধান করে তুলেছেন, সেটি অন্যায্য। কারণ এতে এমন জনমত তৈরির প্রচেষ্টা রয়েছে যে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার কারণেই তিনি লাঞ্ছিত হয়েছেন। আবার কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, গণমাধ্যমে এভাবে শিরোনাম করা হয়েছে, একজন মুক্তিযোদ্ধাকে জুতার মালা পরানো হলো-এটা মহা অন্যায়। এ ধরনের রিপোর্টে মনে হতে পারে, তিনি মুক্তিযোদ্ধা না হলে তাকে জুতার মালা পরানো বোধ হয় অন্যায় হতো না। এটাও কি অন্যায় নয়? প্রশ্ন করা হয়েছে, আব্দুল হাই কানুর রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, খুন, সন্ত্রাস, দখলবাজির অভিযোগ যদি থেকে থাকে, সেসব পরিচয় তুলে ধরে কেন শিরোনাম করা হলো না? মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ের প্রতি দেশের মানুষের সম্মান ও আবেগের মোড়কে আব্দুল হাই কানুকে কি কোনো বিশেষ সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা ছিল গণমাধ্যমগুলোর? আবার এ কথাও বলা হয়েছে, ‘বুঝতে সমস্যা হয় না যে, এ ঘটনায় জামায়াত সমর্থকরা জড়িত থাকায় দলটির একাত্তরের ভূমিকার কারণে এ ধরনের আবেগ তৈরির একটি ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু সেটা নৈতিক, বস্তুনিষ্ঠ ও নির্মোহ হয় না। কারণ কেউ মুক্তিযোদ্ধা হওয়া মানেই এই নয় যে, তিনি নিজে কোনো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন না।’ এ কথা ঠিক, কেউ যদি অন্যায় কিছু করে বা কারও বিরুদ্ধে যদি অপরাধের অভিযোগ থাকে, সেখানে তার ব্যক্তিপরিচয় গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে না। তার সেই পরিচয়কে বড় করে দেখানোর কিছু নেই। তিনি এদেশের যে কোনো পর্যায়ের ব্যক্তি হোন না কেন, অপরাধ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী তাকে ফল ভোগ করতেই হবে, এমনকি তিনি মুক্তিযোদ্ধা হলেও। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার কারণে কোনো মুক্তিযোদ্ধা অপরাধের দায়মুক্তি পাবেন, এ কথা কেউ সমর্থন করেন না। ব্যক্তিগতভাবে খোঁজ নিয়ে দেখেছি, এমন কোনো গণমাধ্যম নেই, যেখানে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার কারণে আব্দুল হাই কানুর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে অতীতে করা অভিযোগের বিরুদ্ধে কিছু বলা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে যে মামলা আছে, তা আদালতেই মীমাংসা হবে। দেশের আইনকে তার পথেই চলতে দেওয়া উচিত। অন্যায় কাজের জন্য অতীতে অনেক মুক্তিযোদ্ধাই আদালতে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। দোষী সাব্যস্ত হয়ে শাস্তিও ভোগ করেছেন। এ দেশের সচেতন মানুষ আইন নিজ হাতে তুলে নেওয়ার বিরুদ্ধে। মুক্তিযোদ্ধা, রাজাকার কিংবা সাধারণ নাগরিক, তিনি যাই হোন না কেন, অন্যায় কিছু করলে তার বিচার হবে আদালতে; রাস্তাঘাট কিংবা মাঠে-ময়দানে নয়! একেএম শামসুদ্দিন : অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা