বিশৃঙ্খল অবস্থায় নির্বাচনে যাওয়া হবে ভয়াবহ: হোসেন জিল্লুর

২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৬:৪৬ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

অন্তর্বর্তী সরকারের সক্ষমতা নিয়ে অনিশ্চয়তা চলছে বলে মনে করেন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা বলেছেন, বিশৃঙ্খল অবস্থায় নির্বাচনে যাওয়া হবে ভয়াবহ। স্বৈরশাসনের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার প্রথম ‘চালের’ সুযোগ হারিয়েছে। আমলাতন্ত্রকে চালকের আসনে বসার সুযোগ দেওয়ায় এখন সমস্যা দেখা যাচ্ছে। শুক্রবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ মিলনায়তনে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ (এফবিএস) আয়োজিত ‘ঐক্য কোন পথে’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। হোসেন জিল্লুর বলেন, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে শুধু ভোটাধিকারের আকাঙ্ক্ষা নয়, ইনসাফের আকাঙ্ক্ষা এবং মর্যাদার আকাঙ্ক্ষাও তৈরি হয়েছে। সরকারের চার-পাঁচ মাস হয়ে গেছে। আকাঙ্ক্ষা পূরণে কতটা অগ্রগতি হয়েছে, তা বলতে হবে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সফলতার কারণে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ইকোনমিস্ট বাংলাদেশকে ২০২৪ সালের বিশ্বসেরা বলে আখ্যা দিয়েছে। হোসেন জিল্লুর বলেছেন, এ অভূতপূর্ব ঘটনার জন্য সারাবিশ্ব তাকিয়ে আছে বাংলাদেশের দিকে। পরবর্তী সময়ে কী হবে, এ নিয়ে কিন্তু নিশ্চয়তা নেই। তিন ধরনের অনিশ্চয়তা রয়েছে বলে অভিমত এই অর্থনীতিবিদের। তিনি বলেন, প্রথম অনিশ্চয়তা হলো, সাধারণ মানুষের জীবন আরও কঠিন হচ্ছে। অর্থনীতির চাকা সেভাবে ঘুরছে না। যতই ঐক্য, সংস্কার, নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হোক, সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক কষ্ট অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। হোসেন জিল্লুরের মূল্যায়ন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান শুধু শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনকে বিতাড়িত করেনি; দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি, মামলাবাজিকেও প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি বলেন, যেই সংস্কৃতিকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে, তা মাথাচাড়া দেবে কিনা, তা দ্বিতীয় অনিশ্চয়তা। তৃণমূল থেকে কিন্তু অনেক খবর আসছে। নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে বিতর্ক হলেও, নির্বাচন যে হবে– এ নিয়ে অনিশ্চয়তা নেই। হোসেন জিল্লুর বলেন, বর্তমান সরকারের সক্ষমতা হচ্ছে তৃতীয় অনিশ্চয়তা। অর্থনৈতিক কষ্ট নিরসনে সরকার কতটা নিয়োজিত রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। পলাতক ক্ষমতাচ্যুতদের নানা অপতৎপরতা রয়েছে। ব্যবস্থার মধ্যেও গলদ রয়েছে। তা মোকাবিলা করার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। তিনি বলেন, সংস্কার বলতে কী বুঝছি, তা স্পষ্ট করে সজাগ হওয়া দরকার। রাজনৈতিক কাঠামো কী হবে, তা বৃহত্তর প্রশ্ন। কিছু সংস্কার সরকার ইচ্ছা করলে করতে পারে, কারও সঙ্গে আলোচনার দরকার নেই। রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে আরও সক্ষম করতে আগামী পাঁচ-ছয় মাসে অনেক কিছু করা সম্ভব। কিছু সংস্কার এখনই করতে হবে। কিছু করতে হবে ঐকমত্যে। সঠিক ভোটাধিকারের মাধ্যমে নির্বাচন হবে রাজনৈতিক উত্তোরণ। শেষ বিচারে ভোটের প্রতিযোগিতায় জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান নামিদামি ব্যক্তিরা করেননি, নামহীন মানুষ করেছেন। তাই শুধু রাজনৈতিক দল নিয়ে নয়, তাদের নিয়েও আলোচনা করতে হবে।