ইয়াবা প্রবেশের নতুন ট্রানজিট পয়েন্ট আনোয়ারা
![](https://usbangla24.news/wp-content/uploads/2024/12/Yaba-Bangladesh-300x161.jpg)
বাংলাদেশে মাদক সমস্যা দিন দিন প্রকট আকার ধারণ করছে। বিশেষত, ইয়াবা পাচারের ক্ষেত্রে নতুন ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার উপকূলীয় এলাকা উদ্বেগজনকভাবে আলোচনায় এসেছে। ভৌগোলিক সুবিধা, রাজনৈতিক প্রভাব এবং দুর্বল নজরদারির সুযোগে এ এলাকা হয়ে উঠেছে মাদক ব্যবসায়ীদের জন্য এক নিরাপদ আশ্রয়। আনোয়ারা: ইয়াবার নতুন রেড জোন মিয়ানমারের সান স্টেট থেকে প্যাথেইন নদী হয়ে বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে আনোয়ারায় প্রবেশ করছে ইয়াবার বড় চালান। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরের জেলেদের মাধ্যমে ট্রলারে করে আনোয়ারার গহিরা ইউনিয়নের রায়পুর, প্যারাবন এলাকা, পারকি সৈকত এবং বরুমচড়ার ভরাচরসহ অন্তত ১০টি পয়েন্টে ইয়াবা পাচার হচ্ছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মতে, গত কয়েক বছর ধরে আনোয়ারাকে ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও, রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে কার্যকর অভিযান পরিচালনা সম্ভব হয়নি। অভিযানের সময় এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার হস্তক্ষেপে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হুমকির মুখে ফিরে আসতে হয়। রাজনৈতিক প্রভাব ও জনপ্রতিনিধিদের জড়িত থাকার অভিযোগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত কমপক্ষে ১০ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী আনোয়ারাকে মাদক বাণিজ্যের জন্য ব্যবহার করছেন। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা এ কাজে তাদের সহযোগিতা করছেন। ইয়াবার বিস্তারে বহুমুখী ক্যারিয়ার আনোয়ারায় ইয়াবার বিস্তারে সরাসরি জড়িত রয়েছেন রিকশাচালক, সিএনজি চালক ও দিনমজুরসহ নানা পেশার মানুষ। এরা ইয়াবার ক্যারিয়ার হিসেবে কাজ করছেন এবং চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মাদক সরবরাহ করছেন। পুলিশের অভিযান এবং চ্যালেঞ্জ চট্টগ্রাম পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেল জানিয়েছেন, আনোয়ারা উপকূলীয় এলাকা নিয়ে বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে এবং দ্রুতই মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হবে। তবে, রাজনৈতিক প্রভাবের বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমাধানের পথ ১. রাজনৈতিক প্রভাব রোধ: মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত অভিযান পরিচালনা জরুরি। ২. নৌপথের নজরদারি বৃদ্ধি: মিয়ানমার থেকে ইয়াবার প্রবেশ রোধে সাগর ও নদীপথে টহল বাড়াতে হবে। ৩. জনসচেতনতা: ইয়াবা পাচার ও ব্যবহার রোধে স্থানীয় জনগণকে সচেতন ও সম্পৃক্ত করতে হবে। ৪. স্থানীয় সহযোগিতা: জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহিতার আওতায় এনে তাদের ভূমিকা যাচাই করতে হবে। আনোয়ারার উপকূলীয় এলাকা যদি মাদক পাচারের নিরাপদ রুট হয়ে যায়, তবে তা দেশের মাদক সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ সংকট নিরসন করা সম্ভব।