বালু সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রক ছাত্রদল নেতা, ভাগ দেন পুলিশ-সাংবাদিককেও

২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ১০:৪৭ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

পাবনার ঈশ্বরদীতে দিনরাত চলছে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন। কোনোরকম রাখঢাক ছাড়াই রূপপুর প্রকল্পঘেঁষা পদ্মা নদীর চারটি পয়েন্টে দিনরাত সমানতালে চলছে অবৈধ এ কার্যক্রম। লাখ লাখ টাকার বালু সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রক উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি তানভীর হাসান সুমন। অভিযোগ রয়েছে, নির্বিঘ্নে অবৈধভাবে বালু তোলার কাজ চালাতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, লক্ষ্মীকুণ্ডা নৌ ফাঁড়ির পুলিশ ও সাংবাদিকদের মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়া হয়। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন লক্ষ্মীকুণ্ডা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আকিবুল ইসলাম। তাঁর দাবি, অবৈধ এ কার্যক্রমের সঙ্গে পুলিশ বা প্রশাসন জড়িত নয়। বরং এ ধরনের কাজের অভিযোগ পেলে তারা বাধা দেয়। সম্প্রতি ওই চার পয়েন্টে বালু তোলার বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। এখন যেহেতু জেনেছেন, বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করবেন। পরে যৌথ অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রি বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরেজমিন এক্সক্যাভেটর, ড্রাম ট্রাক, ট্রাক্টর, স্ট্যায়ারিং টলি, পেলুডার চালকসহ স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০ দিন ধরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের দক্ষিণ সীমানাঘেঁষা এলাকার রূপপুর ফটু মার্কেট পয়েন্ট, লক্ষ্মীকুণ্ডা নৌ পুলিশ ফাঁড়ি-সংলগ্ন নবীনগর ঘাট পয়েন্ট, বিলকেদা পয়েন্ট ও সাঁড়া ইউনিয়নের চরবিলবামুনি মৌজায় চলছে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। মূলত পদ্মা নদী ও এর শাখায় জেগে ওঠা চর থেকেই বালু তুলে বিক্রি করা হচ্ছে প্রকাশ্যে। অথচ সরকারিভাবে ইজারা দেওয়া হলে এসব পয়েন্ট থেকে বছরে কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব আদায় সম্ভব হতো। বালু উত্তোলন ও বিক্রির এসব পয়েন্টের দায়িত্বে রয়েছেন ঈশ্বরদী উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি তানভীর হাসান সুমন। প্রতিদিন অন্তত ২০০ থেকে ৩০০ গাড়ি বালু বিক্রি করা হয়। প্রতিদিন গড়ে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকার বালু বিক্রি করা হয়। রাজনৈতিক দলের প্রভাব ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বালু তোলার এই কর্মযজ্ঞ প্রকাশ্যে চললেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। লক্ষ্মীকুণ্ডার নবীনগর পয়েন্টে দায়িত্ব থাকা বিএনপি কর্মী আইয়ুব আলী বলেন, প্রতিদিন বালু বিক্রির একটি অংশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন স্থানে দেওয়া হয়। সাংবাদিকদেরও একটি অংশ দেওয়া হয়। এসব নিয়ন্ত্রণ করেন ছাত্রদল সভাপতি তানভীর হাসান সুমন। বিস্তারিত জানতে আপনারা তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পারেন। উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি তানভীর হাসান সুমনের সঙ্গে কথা হলে তিনিও প্রশাসন, সাংবাদিক সবাইকে ম্যানেজ করেই বালু ব্যবসা চলছে বলে জানান। বালু বিক্রির টাকা থেকে একটি অংশ প্রত্যেককে নিয়মিত পৌঁছে দেওয়া হয় বলে জানান ছাত্রদলের এ নেতা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবীর কুমার দাশ বলেন, অবৈধভাবে পদ্মা নদী থেকে বালু তোলায় জড়িতদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। বিষয়টি আমার জানাও ছিল না। শিগগির এ কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।