অবৈধ বাংলাদেশি শনাক্তে ভারতজুড়ে চলছে অভিযান
ভারতে বসবাসকারী অবৈধ বাংলাদেশি শনাক্তে জোরালো অভিযানে শুরু হয়েছে। দিল্লি, মহারাষ্ট্রের পাশাপাশি আসামেও চলছে অভিযান। অন্যদিকে দেশব্যাপী পৃথক এক অভিযানে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের একাধিক সদস্য আটকের পর পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় অবৈধ অনুপ্রবেশের ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। মহারাষ্ট্র পুলিশ সোমবার জানিয়েছে, গত দুই দিনের অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ বাংলাদেশিকে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, থানেতে অবৈধভাবে থাকছিলেন তারা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ শনি ও রোববার অভিযানে নামে। কালহার এবং কোনগাঁওতে তল্লাশি চালানো হয়। এর পর এক নারীসহ মোট ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের সবারই বয়স ২২-৪২ বছরের মধ্যে। পুলিশকে তারা ভারতে থাকার জন্য কোনো বৈধ নথি দেখাতে পারেননি। তাদের মধ্যে ৩ জন ভাঙা-লোহালক্কড় বিক্রির কারবার করতেন। ২ জন শ্রমিকের কাজ করতেন। একজন রাজমিস্ত্রি ও একজন কলমিস্ত্রি ছিলেন। ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে সোমবার ৩ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেও অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগ উঠেছে। আগরতলা রেলওয়ে স্টেশন থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। কেরালায় ভারতের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় কর্মচারীদের মজুরি কিছুটা বেশি হওয়ায় কাজের প্রলোভন দেখিয়ে মাঝেমধ্যেই সেখানে অবৈধভাবে বাংলাদেশিদের নিয়ে আসার অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য গ্রেপ্তারের পর অবৈধ বাংলাদেশিদের শনাক্তকরণে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে কেরালা রাজ্য সরকার। তবে সোমবারে এই রাজ্যে একজনও গ্রেপ্তার হয়নি। সোমবার আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা জানান, সে রাজ্য থেকে ৬ অবৈধ বাংলাদেশিকে আটকানো হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে। তবে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কোন অংশ দিয়ে অনুপ্রবেশ হচ্ছিল, সেই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি। এদিন এক্স হ্যান্ডেলে হেমন্ত বিশ্বশর্মা লেখেন, আসামে অবৈধ অনুপ্রবেশে কোনো রেয়াত করা হবে না। অনুপ্রবেশ প্রচেষ্টার ওপর কড়া নজর রাখছে আসাম পুলিশ। ৬ জন বাংলাদেশিকে ধরে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। পশ্চিমবঙ্গের দুই বিধানসভায় দুইটি আলাদা ঠিকানায় ভোটার কার্ড বানিয়ে ফেলেছিল দুই জঙ্গি। দুজনেই বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টিমের সদস্য। একজনের নাম মোহাম্মদ শাদ রাডি। মুর্শিদাবাদের দুই বিধানসভা, হরিহরপাড়া এবং নওদায় ভোটার লিস্টে নাম তোলে সে। জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর আগেই পশ্চিমবঙ্গে আসে সে। এরপর হরিহরপাড়ার কেদারতলায় দাদুর বাড়িতে এসে ওঠে। আধার কার্ড এমনকি পাসপোর্টও বানিয়ে ফেলেছিল শাদ শেখ। এর আগে গত রোববার দিল্লি পুলিশ জানায়, দিল্লিতে বসবাসকারী অবৈধ বাংলাদেশি শনাক্ত শুরু হয়েছে। ভারতের উত্তর-পূর্বে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রায় ১ হাজার ৮৮৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। গত জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠলে দুদেশের সীমান্তে নজরদারি বাড়ায় বিএসএফ। বিএসএফ জানায়, আগস্ট মাস থেকে এখনও পর্যন্ত ১৭০ জনেরও বেশি অনুপ্রবেশকারীকে আসামে আটকানো হয়েছে। তাদের অধিকাংশকে সীমান্ত থেকে ফের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।