খাদ্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি: সংকটে নিম্ন আয়ের মানুষ
খাদ্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়েনি বেতন ও ভাতা, ফলে বিপাকে পড়েছেন দেশের সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো। দিন দিন তাদের জীবনযাপন আরও কঠিন হয়ে উঠছে। সংসার চালাতে গিয়ে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। গরিব মানুষের পাতে সামান্য পুষ্টিও আর জুটছে না। গৃহকর্মী সালমা বেগম প্রতিদিন কাজ করতে আসার সময় বলেন, “আপা ভাতের মারডা ফেইলেন না, আমি খামু। ভাতের মারে নাকি অনেক শক্তি।” তার সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি জানান, বাজারের ঊর্ধ্বগতির কারণে তার সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। গৃহকর্তা মো. স্বপন মিয়া ও রিনা বেগমের মতো মানুষদের অভিজ্ঞতাও একই রকম। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রোটিনের অভাবে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, যার ফলে তারা সহজেই অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হন। শিশুদের ক্ষেত্রে অপুষ্টি শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধিকে ব্যাহত করে। বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের রিপোর্ট বলছে, দেশে প্রায় ১২ কোটি মানুষ পর্যাপ্ত পুষ্টি পায় না। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশই শিশু ও নারী। অপুষ্টিজনিত কারণে শিশুদের মধ্যে খর্বকায়তার সমস্যা মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে। পুষ্টিবিদদের মতে, মাছ-মাংস-দুধের মতো ব্যয়বহুল খাবার না খেতে পারলে ডাল, রঙিন শাকসবজি ও ডিম থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ করা যেতে পারে। গাঁজর, মিষ্টি কুমড়া, বিট-রুট, এবং ডাল সহজলভ্য খাদ্য যা সবার জন্য উপকারী। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ভর্তুকির ব্যবস্থা করা উচিত। এছাড়া খাদ্যসুরক্ষার জন্য রাষ্ট্রীয় নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন জরুরি। অপর্যাপ্ত পুষ্টির ফলে শুধু ব্যক্তি নয়, দীর্ঘমেয়াদে জাতীয় উৎপাদনশীলতাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই সময়মতো পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।