১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে বাগেরহাটে বিএনপির সমাবেশ
বাগেরহাটের কচুয়াতে ১৪৪ ধারার মধ্যে পূর্ব ঘোষিত স্থানে জনসভা করেছে বিএনপির একাংশ। সভা শুরুর আধা ঘণ্টার মধ্যে অবশ্য মূল মঞ্চ থেকে নেমে নেতাকর্মীদের নিয়ে কিছুটা পূর্বদিকের সাইনবোর্ড বাজারে এসে ট্রাকের ওপর করা অস্থায়ী মঞ্চে সভা শেষ করা হয়। আজ মঙ্গলবার কচুয়া উপজেলার গোয়ালমাঠ রসিকলাল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে বিএনপি ওই জনসভার আয়োজন করে। পাশের মাজেদা বেগম কৃষি প্রযুক্তি কলেজ (প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়) মাঠে আগে থেকেই জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি এম এ এইচ সেলিমকে সংবর্ধনার আয়োজন করেছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। উত্তেজনার মধ্যে তা স্থগিত করা হয়। জেলা বিএনপির বর্তমান নেতারা দীর্ঘদিন এলাকায় ও দলের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখার অভিযোগ তুলে সাবেক এমপি সেলিমকে ‘দলের লোক নন’ বলে ঘোষণা দেন। এ নিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিবেচনায় গত সোমবার রাতে ওই দুই সভা এলাকার আশপাশের ১ কিলোমিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ওই এলাকায় সব ধরনের জনসমাগম, সভা-সমাবেশ, আগ্নেয়াস্ত্র বহন নিষিদ্ধসহ ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮-এর ১৪৪ ধারা জারি করা হলেও এর মাঝেই জনসভা হয়েছে। মূল সভা মঞ্চ থেকে নেমে কিছুটা দূরে গিয়ে সভা শেষ করা হলেও এলাকার ১ কিলোমিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি ছিল। সমাবেশ কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। এ সময় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক শামীমুর রহমান। কচুয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাজরা আছাদুল ইসলাম পান্নার সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আইনজীবী অহিদুজ্জামান দিপু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ টি এম আকরাম হোসেন তালিম, সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, সাবেক সহসভপাতি মনিরুল ইসলাম খান, যুগ্ম আহ্বায়ক খাদেম নিয়ামুল নাসির আলাপ, বিএনপি নেতা সরদার জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা সাবেক সংসদ সদস্য এম এ এইচ সেলিমের সমালোচনা করেন। এর আগে সকালে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার চেয়ে জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসানের সঙ্গে দেখা করেন বিএনপি নেতারা। পরে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক টি এম আকরাম হোসেন তালিম বলেন, ‘১৪৪ ধারা জারির কোনো ভিত্তি আমরা খুঁজে পাইনি। সাবেক এমপি (সেলিম) আমাদের দলের কেউ না। তারা আমাদের সমাবেশ বন্ধ করতে পারেন না।’ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম বলেন, দেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। সিপাহি-জনতার ঐক্যবদ্ধ চেতনার মতো ইস্পাত কঠিন ঐক্য ধরে রেখে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও অখণ্ডতা রক্ষা করতে হবে। আরেক সংবাদ সম্মেলনে দুপুরে বাগেরহাট প্রেস ক্লাবে সাবেক এমপি এম এ এইচ সেলিম বলেন, ‘যেহেতু প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে, তাই আইনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠন স্থগিত করতে বলেছি। ওই অনুষ্ঠান আপাতত হচ্ছে না।’ তিনি বলেন, ‘আমি পরিস্থিতির কারণে কেবল দলের সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলাম। তা না হলে হয়তো আমাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হতো। আমি বিএনপির সদস্য পদ থেকে তো পদত্যাগ করিনি।’ এ সময় জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি ফকির তারিকুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেহবুবুর হক, জেলা বিএনপির সদস্য আসাদুজ্জামান, সেলিমের বড় ছেলে মেহেদী হাসানসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।