দাবী না মানলে ডিম ও মুরগি উৎপাদন বন্ধ করার ঘোষণা

১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৬:৩৬ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) দেশের প্রান্তিক খামারিদের স্বার্থ রক্ষার জন্য ১০ দফা দাবি জানিয়েছে, যা পূর্ণ না হলে ১ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে ডিম ও মুরগি উৎপাদন বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি। সম্প্রতি, বিপিএ-র সভাপতি সুমন হাওলাদার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবি তুলে ধরার পাশাপাশি সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে প্রান্তিক খামারে উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন দাবি করেছে যে, প্রান্তিক খামারিরা যদি ন্যায্যমূল্য না পায়, তাহলে তাদের পক্ষে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। বর্তমানে কর্পোরেট সিন্ডিকেটের কারণে প্রায় ৫০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান প্রভাবিত হচ্ছে। এ অবস্থায়, সরকারকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। ১০ দফা দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- কর্পোরেট কোম্পানির সীমাবদ্ধতা: বর্তমান সময়ে কর্পোরেট কোম্পানিগুলো ডিম ও মুরগি উৎপাদনে অংশগ্রহণ করছে, যার ফলে ছোট খামারিরা বাজারে প্রতিযোগিতা করতে পারছে না। বিপিএ দাবি করছে, এই কোম্পানিগুলোকে শুধুমাত্র ফিড ও মুরগির বাচ্চা উৎপাদনে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত। বাণিজ্যিক উৎপাদন বন্ধ করা: বাণিজ্যিকভাবে ডিম ও মুরগি উৎপাদন বন্ধ করার দাবি জানানো হয়েছে, যাতে ছোট খামারিরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পেতে পারে। সিন্ডিকেট বন্ধ করা: মুরগির বাচ্চা ও ফিডের সিন্ডিকেট বন্ধ করার জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। এটি প্রান্তিক খামারিদের জন্য একটি বড় সমস্যা, যেহেতু তারা উচ্চ দামে ফিড এবং বাচ্চা কিনতে বাধ্য হচ্ছে। ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা: প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার দাবি তুলে ধরা হয়েছে। আর্থিক সহায়তা: ক্ষুদ্র খামারিদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ ও ভর্তুকি প্রদান, এবং ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে হবে। পৃথক বাজার সুবিধা: প্রান্তিক খামারিদের জন্য আলাদা বাজার সুবিধা তৈরির দাবি উঠেছে, যাতে তারা সহজে তাদের পণ্য বিক্রি করতে পারেন। সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ: কর্পোরেট সিন্ডিকেটের দাপট নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সরকারি নীতিমালা তৈরি করার দাবি করা হয়েছে। চুক্তিভিত্তিক খামারের ফাঁদ বন্ধ: চুক্তিভিত্তিক খামারের ফাঁদ বন্ধ করার জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ: প্রান্তিক খামারিদের জন্য প্রশিক্ষণ ও পরামর্শের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে তারা উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে খামার পরিচালনা করতে পারেন। সরকারের পদক্ষেপ না নিলে বিপিএর আন্দোলন বিপিএ জানিয়েছে যে, সরকারের কাছে বার বার দাবি জানানো হলেও, তারা সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি বরং কর্পোরেট সিন্ডিকেটকে সহযোগিতা করছে। যদি এই সিন্ডিকেট বন্ধ না করা হয়, তাহলে পোল্ট্রি খাতের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হতে পারে। তাই বিপিএ তার সদস্যদের ১ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে ডিম ও মুরগি উৎপাদন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা দেশের পোল্ট্রি শিল্পের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। এই দাবি পূরণের জন্য সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া খুবই জরুরি, যাতে প্রান্তিক খামারিরা টিকে থাকতে পারেন এবং পোল্ট্রি শিল্পের উন্নয়ন সম্ভব হয়।